Riwayahbd
  • মূল পাতা
  • কুরআন
  • হাদীস
  • আকীদা
  • ফিকহ
  • ইবাদাত
  • সীরাত
  • তত্ত্ব ও পর্যালোচনা
  • চিন্তা ও মতবাদ
  • দেশ, সমাজ, সংস্কৃতি
  • বিশ্ব
  • বিজ্ঞান ও আধুনিকতা
  • অন্যান্য
    • নারী, শিশু, পরিবার
    • সুন্নত ও বিদআত
    • জিহাদ
    • রাজনীতি
    • আইন ও সংবিধান
    • শিক্ষা
    • প্রাচ্যবাদ
    • ইতিহাস
    • বিয়ে ও দাম্পত্য
    • ব্যক্তিত্ব ও সাক্ষাৎকার
    • শিল্প-সাহিত্য
    • গ্রন্থ-আলোচনা
    • আরবি ব্যাকরণ
    • উর্দু ব্যাকরণ
    • বিবিধ
    • পিডিএফ
    • নির্বাচিত লেখক-পরিচিতি
    • গুরুত্বপূর্ণ লিংক ও সাইটসমূহ
  • মূল পাতা
  • কুরআন
  • হাদীস
  • আকীদা
  • ফিকহ
  • ইবাদাত
  • সীরাত
  • তত্ত্ব ও পর্যালোচনা
  • চিন্তা ও মতবাদ
  • দেশ, সমাজ, সংস্কৃতি
  • বিশ্ব
  • বিজ্ঞান ও আধুনিকতা
  • অন্যান্য
    • নারী, শিশু, পরিবার
    • সুন্নত ও বিদআত
    • জিহাদ
    • রাজনীতি
    • আইন ও সংবিধান
    • শিক্ষা
    • প্রাচ্যবাদ
    • ইতিহাস
    • বিয়ে ও দাম্পত্য
    • ব্যক্তিত্ব ও সাক্ষাৎকার
    • শিল্প-সাহিত্য
    • গ্রন্থ-আলোচনা
    • আরবি ব্যাকরণ
    • উর্দু ব্যাকরণ
    • বিবিধ
    • পিডিএফ
    • নির্বাচিত লেখক-পরিচিতি
    • গুরুত্বপূর্ণ লিংক ও সাইটসমূহ
No Result
View All Result
Riwayahbd
No Result
View All Result

গন্তব্য জেরুজালেম- ২য় পর্ব। ইমরান রাইহান

by সাবের চৌধুরী
September 14, 2020
1 min read
0
গন্তব্য জেরুজালেম- ১ম পর্ব। ইমরান রাইহান
547
SHARES
444
VIEWS
Share on FacebookShare on Twitter

সুলতান বসেছিলেন আনন্দ ঝলমল চেহারায়। 

– আবু শামাহ 

৭ রজব, ৫৮৩ হিজরি, শুক্রবার। বাইতুল মুকাদ্দাস।

ভোরের সূর্য আলো ছড়ালো ডোম অব রকের শীর্ষদেশে। নৈশ প্রহরীরা আড়মোড়া ভেঙ্গে হাই তুললো, রাতজাগা ক্লান্তিতে তাদের দুচোখ বুঝে আসছে। আস্তাবল থেকে পশুদের ডাক শোনা গেল। ধীরে ধীরে ঘরবাড়ি ছেড়ে বের হয়ে এলো লোকজন। নতুন দিনের সূচনা ঘটেছে পবিত্র শহরে, যদিও এই দিনটি অন্যদিনের মত নয়। মুসলমানদের হাতে পতন ঘটেছে বাইতুল মুকাদ্দাসের। আজই তাদের জন্য খালি করে দিতে হবে এই শহর।  

২৭ শে রজব তারিখটিকে ঘিরে মুসলমানদের রয়েছে ঐতিহাসিক স্মৃতি। প্রসিদ্ধ মত অনুসারে এই তারিখে রাতের বেলা নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মেরাজ হয়েছিল। বোরাকে আরোহণ করে নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এসেছিলেন বাইতুল মুকাদ্দাসে। এখানে সকল আম্বিয়ায়ে কেরামের জামাতের ইমামতি করেছিলেন তিনি। আল্লাহর কুদরত, প্রায় ছয়শো বছর পর এই তারিখেই আল্লাহ মুসলমানদের হাতে তুলে দিলেন পবিত্র শহরের চাবিকাঠি। 

‘আশ্চর্য ঘটনা দেখুন। আল্লাহ মুসলমানদের হাতে এই শহর তুলে দিলেন সেই তারিখে, যে তারিখে নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মেরাজ হয়েছিল’ উচ্ছ্বাসের সাথে লিখেছেন বাহাউদ্দিন ইবনে শাদ্দাদ। 

 

বাইতুল মুকাদ্দাসে সূচনা হলো বিষণ্ন এক দিনের। ক্রুসেডারদের সময় কাটছিল শংকায়। যদিও সুলতান সালাহুদ্দিন আইয়ুবী সবাইকে জীবনের নিরাপত্তা দিয়েছেন, কিন্তু তিনি যদি মত বদলে ফেলেন? ৮৮ বছর আগে ক্রুসেডাররা বাইতুল মাকদিসে যে নির্মম হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছিল তিনি যদি তার পুনরাবৃত্তি করেন? 

বিরস চেহারা নিয়ে বৃদ্ধরা বারবার তাকাচ্ছিলেন শহরের প্রাচীরের দিকে। একটু পরেই মুসলমান বাহিনীর জন্য খুলে দেয়া হবে এটি। কেউ জানে না কী ঘটবে তারপর।

দ্বিপ্রহরের একটু আগে মুসলমানদের জন্য খুলে দেয়া হলো বাইতুল মুকাদ্দাসের ফটক। জোয়ারের স্রোতের মত মুসলিম বাহিনী প্রবেশ করে শহরের ভেতরে। সবার দৃষ্টি  ডোম অব রকের দিকে। এত কাছ থেকে এটিকে দেখে আনন্দে বিহ্বল সবাই। সুলতান সালাহুদ্দিন নিজেও মুগ্ধ দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলেন এর দিকে। এই প্রথমবারের মত এটিকে দেখছেন তিনি। মুসলিম সেনারা স্রোতের মত এগিয়ে গেল মাসজিদুল আকসার দিকে। ডোম অব রকের পর বড় একটি স্বর্ননির্মিত ক্রস লাগানো। দ্রুত  কয়েকজন সেনা উঠে গেলেন ডোম অব রকের উপর। ক্রুসেডার ও মুসলিম সেনাদের চোখের সামনে নামিয়ে ফেলা হলো ক্রস। তাকবির ধ্বনিতে প্রকম্পিত হলো বাইতুল মুকাদ্দাস শহর। ক্রুসেডারদের কারো কারো চোখে এ সময় অশ্রু ঝরছিল। 

সুলতান সালাহুদ্দিন আইয়ুবির ইচ্ছা ছিল মাসজিদুল আকসায় জুমার নামাজ পড়বেন, কিন্তু তা সম্ভব হলো না। মসজিদে আকসার পশ্চিম দিকে ক্রুসেডাররা টয়লেট ও আস্তাবল নির্মান করেছে। প্রথমে এগুলো গুড়িয়ে দিতে হলো। মসজিদের ভেতর নানা স্থানে ছড়িয়ে ছিল নাপাকি। এসব পরিষ্কার করতে করতে জুমার সময় পার হয়ে যাচ্ছিল। ফলে সুলতান ও সেনারা বাইরেই নামাজ পড়ে নেন। 

দ্রুতই এই বিজয়ের সংবাদ ছড়িয়ে পড়ে মুসলিম বিশ্বের সর্বত্র। নানা স্থান থেকে দলে দলে লোক ছুটতে থাকে বাইতুল মুকাদ্দাসের দিকে। তাদেরকে স্বাগত জানানোর জন্য সুলতান একটি শুকরিয়া মাহফিলের আয়োজন করেন। শহরের বাইরে শামিয়ানা টাঙ্গানো হয়। সুলতান ও তার সভাসদরা শামিয়ানার নিচে বসে আগন্তুকদের সাথে দেখা করেন। পুরো সময়টা সুলতানের চেহারা ছিল প্রফুল্ল। তাকে দেখে মনে হচ্ছিল মাথা থেকে অনেক বড় চিন্তার বোঝা সরিয়ে স্বস্তির নিশ্বাস নিচ্ছেন তিনি।

–

যদিও বাইতুল মুকাদ্দাস বিজয়ের সংবাদ রাতারাতি ছড়িয়ে গেছে বিভিন্ন অঞ্চলে কিন্তু তখনো পর্যন্ত সুলতানের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো পত্র যায়নি কারো কাছে। সভাসদরা তাড়া দিলেন দ্রুত যেন পত্র পাঠানো হয় বিভিন্ন এলাকার শাসকদের কাছে। 

পরদিন ভোরে সূর্যের প্রথম কিরণের সাথে বাইতুল মুকাদ্দাসে প্রবেশ করেন সুলতানের কাতেব ইমাদুদ্দিন ইস্ফাহানি। তিনি বৈরুতের অবরোধে আহত হয়ে দামেশকে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। চিকিৎসা শেষেই সংবাদ পেলেন বাইতুল মুকাদ্দাস জয় হয়েছে। বিন্দুমাত্র দেরি না করে তিনি ছুটে এলেন সুলতানের কাছে। কুশল বিনিময়ের পর সুলতান তাকে আদেশ দিলেন এই বিজয়ের সংবাদ জানিয়ে বিভিন্ন এলাকায় পত্র পাঠাতে। 

‘সেদিনই বিভিন্ন শহরে ৭০টি পত্র পাঠানো হয়’ লিখেছেন ঐতিহাসিক আবু শামাহ। 

বাগদাদের আব্বাসি খলিফা নাসির লি দিনিল্লাহর কাছে পাঠানো পত্র লেখা ছিল, সকল প্রশংসা আল্লাহর জন্য, যিনি তার বান্দাদের জন্য তার প্রতিশ্রুত ওয়াদা সত্য করে দেখিয়েছেন। তিনি মুশরিক ও অবাধ্যদের উপর তাওহিদকে বিজয় দান করেছেন। 

কাজি ফাজিল অবস্থান করছিলেন দামেশকে। তার কাছে লিখিত পত্রে বলা হয়, ‘আলহামদুলিল্লাহ। আল্লাহ জাহিল ও নির্বোধদের উপর আহলুল ইলম ও নেককারদের বিজয় নিশ্চিত করেছেন। এখন আমরা এবং এই শহর আপনার আগমনের অপেক্ষায় আছি কারণ আমরা জানি,  এই জয়ের পেছনে আপনার দোয়ার রয়েছে অনেক বড় অবদান।  

বাইতুল মুকাদ্দাস জয়ের সংবাদ শুনে কবিরা কাব্য রচনা করতে থাকেন। ইমাদুদ্দিন ইসফাহানি তার লিখিত এক কবিতায় বলেন, 

‘সেপাই ছিলেন ফেরেশতারা, ভাবলো তবু শত্রুদল। 

মানুষ তো নয় জ্বীন-দানবেই বইয়ে দিল খুনের ঢল। 

আকসা জয়ের মুকুট সেতো তোমার শিরেই মানায় বেশ, 

ঠিকই তোমার হাতেই হলো আকসা বিজয় অবশেষ। 

তোমার অসি আকসা-ভূমির কুফর শিরক করলো লীন, 

করলো কায়েম ভ্রান্তি-নেফাক বিনাশকারী সত্য দ্বীন। 

খোদার ঘরে খোদার বিধান প্রতিষ্ঠিলে তুমিই ফের, 

সেখান থেকে তাড়িয়ে দিলে সন্যাসী ও যাজকদের’। (কাব্যানুবাদ- হেমায়েতউল্লাহ) 

–

বাইতুল মুকাদ্দাস প্রবেশের দিন মুসলমানরা মাসজিদুল আকসাতে জুমার নামাজ পড়তে পারেনি। সুলতান সালাহুদ্দিন বিষয়টি নিয়ে মনোকষ্টে ভুগছিলেন। তিনি সালারদের নির্দেশ দেন, যে কোনো মূল্যে পরবর্তী জুমা মসজিদুল আকসাতে পড়তে হবে। মাসজিদুল আকসা থেকে যিশু ও মেরির সকল মূর্তি সরানো হয়। মসজিদের যেসব অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল ক্রুসেডারদের হামলায় তা মেরামত করা হয়। পুরো মসজিদকে ধুয়ে পরিচ্ছন্ন করা হয়। নতুন সাজে সেজে উঠে মসজিদটি। 

মুসলমানরা বাইতুল মুকাদ্দাস প্রবেশের ৮ দিন পর শাবান মাসের ৪ তারিখে মসজিদুল আকসাতে সমবেত হলো জুমার নামাজ আদায় করতে। সেদিন এক অদ্ভুত দৃশ্য দেখা গেল। অনেক দূর দূর থেকে মুসলমানরা এলো মসজিদুল আকসায় জুমা পড়তে। ৮৮ বছর পর আবার এই মসজিদে অনুষ্ঠিত হবে জুমা। সবাই চাচ্ছিল ইতিহাসের এই গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার সাক্ষী হতে। আজান হওয়ার আগেই মসজিদ ভরে যায়। মসজিদের বাইরেও নামাজের ব্যবস্থা করা হয়। কাতারগুলো ডোম অব রক পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছিল। সুলতান সালাহুদ্দিন আইয়ুবী অবস্থান করছিলেন শেষ কাতারে, সেই কাতারের উপর ছায়া দিচ্ছিল কুব্বাতুস সাখরা। 

এই বিশেষ দিনে জুমার নামাজের খুতবা ও ইমামতির দায়িত্ব ছিল অনেক মর্যাদার বিষয়। লোকজন সকাল থেকেই অনুমান করার চেষ্টা চালায়, এই মহান সৌভাগ্যের অধিকারী কে হতে যাচ্ছেন। জুমার আজানের পর সবার কৌতুহলের সমাপ্তি হলো। সুলতানের নির্দেশে ধীরে ধীরে মিম্বরের দিকে এগিয়ে গেলেন দামেশকের কাজি মুহিউদ্দিন আবুল মাআলি। 

এতক্ষণ ধরে চলা মৃদু গুঞ্জন থেমে গেল। সবাই এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলে কাজি সাহেবের দিকে। তিনি দৃঢ় পদে হেটে গেলেন মিম্বরের দিকে। নির্ধারিত আসনে বসে পড়লেন। মুয়াজ্জিন উঠে দাঁড়ালো আজান দিতে। আজান শেষে কাজি সাহেব উদ্দীপ্ত কন্ঠে খুতবা শুরু করেন। প্রথমে তিনি আল্লাহর প্রশংসা ও নবিজির প্রতি দরুদ পাঠ করেন। তারপর চার খলিফার প্রতি প্রশংসাবাক্য পাঠ করে আলোচনা শুরু করেন। তিনি মুসলমানদের প্রতি আল্লাহর সাহায্যের কথা বর্ননা করে শুকরিয়া আদায় করেন। তার কন্ঠে খেলা করছিল আবেগ, ভাষায় ছিল জাদু, শব্দচয়নে ছিল পরিমিতবোধ। খুতবায় তিনি মুসলিম মুজাহিদদের লক্ষ্য করে বলেন, 

আপনারা কাদেসিয়া ও ইয়ারমুকের ইতিহাস আবার তাজা করে দিয়েছেন। আল্লাহ আপনাদের প্রচেষ্টা ও কোরবানি কবুল করে নিক। আল্লাহ আপনাদের উপর রহম করেছেন, আপনারা এই নেয়ামতের হক আদায় করুন। বিনিময়ে আল্লাহ আপনাদেরকে জান্নাত দান করবেন, যা সৌভাগ্যবানদের বাসস্থান। 

যতক্ষণ আপনারা আল্লাহর দ্বীনের সাহায্য করবেন, আল্লাহ আপনাদের সাহায্য করবেন। এখন আপনারা সচেষ্ট হোন। যেখানেই কুফর শিরক মাথাচাড়া দিচ্ছে তার মূলোৎপাটনের চেষ্টা করতে থাকুন। আল্লাহর জমিনকে আল্লাহর অবাধ্যতা থেকে মুক্ত করুন। আপনারা সুলতানকে সাহায্য করুন। তার হাত মজবুত করুন। ইনি সালাহুদ্দিন ও সালাহুদ্দুনিয়া। দ্বীন ও দুনিয়ার মুসলিহ। তিনি ইসলাম ও মুসলমানদের সুলতান। তিনিই বাইতুল মুকাদ্দাসকে মুক্ত করেছেন। ইনি আইয়ুবের ছেলে ইউসুফ, যিনি আব্বাসি খিলাফতকে নতুন করে প্রাণ দিয়েছেন। 

হে আল্লাহ, আপনি তার শাসনকে সুদৃঢ় করুন। ফেরেশতাদেরকে তার সাহায্যকারী বানান। দ্বীনে হানিফের জন্য তার প্রচেষ্টার উত্তম বদলা দিন তাকে। মুসলিম উম্মাহর জন্য তার খেদমতকে কবুল করুন। তিনি যে চিন্তা নিয়ে সামনের দিকে এগুচ্ছেন, পূর্বে ও পশ্চিমে সেই বার্তা পৌছে দিন। আপনি যেভাবে বাইতুল মুকাদ্দাস আমাদের হাতে ফিরিয়ে দিয়েছেন এভাবে পৃথিবীর কোনে কোনে মুসলমানদের বিজয় লিখে দিন। 

–

জুমার নামাজের পর সুলতান সালাহুদ্দিন আইয়ুবী মিম্বরে বসেন। তিনি কিছুক্ষণ আলোচনা করেন। তার আলোচনায় তিনি জিহাদের গুরুত্ব তুলে ধরে জিহাদের প্রতি উপস্থিতদের উদ্বুদ্ধ করেন। 

–

আল কুদস জয়ের ফলে পুরো ফিলিস্তিন চলে এলো মুসলমানদের হাতে। ফিলিস্তিনের এক ইঞ্চি ভূমিও আর ক্রুসেডারদের হাতে রইলো না। চুক্তির শর্ত ছিল ক্রুসেডাররা চল্লিশ দিনের মধ্যে মুক্তিপন আদায় করে বাইতুল মুকাদ্দাস ছেড়ে যাবে। শহরে মুসলমানদের প্রবেশের পর প্রথম সপ্তাহ গেল প্রশাসনিক অবকাঠামো ঢেলে সাজাতে। এই সময় শহরের ফটকে বসানো হলো কড়া প্রহরা, যেন মুক্তিপন আদায়ের আগে কেউ শহর ছেড়ে যেতে না পারে। ইমাদুদ্দিন ইস্ফাহানির মতে শহরের মোট বাসিন্দার সংখ্যা ছিল এক লাখের মতো। ইবনুল আসির লিখেছেন, শহরের প্রতিটি চার্চ ও গলি মানুষের ভীড়ে গিজগিজ করতো। 

এক সপ্তাহ পর শুরু হলো মুক্তিপন আদায়। সুলতান জানতেন, এত বেশি সংখ্যক মানুষের মুক্তিপণ সুষ্ঠভাবে আদায় করাটা বেশ কঠিন, ফলে তিনি পুরো ব্যবস্থাটি নিখুঁতভাবে সাজানোর চেষ্টা করেন। প্রচুর সেনা নিয়োজিত করা হয় নিরাপত্তা রক্ষার  জন্য। সেনাদের তদারকির দায়িত্ব অর্পন করা হয় কয়েকজন সেনাপতির কাঁধে। বাইতুল মুকাদ্দাস খুব দ্রুতই থমথমে হয়ে উঠে। সুলতানের আপ্রান চেষ্টা ছিল কোনোভাবেই যেন শহরের কোনো অমুসলিমকে কষ্ট দেয়া না হয়। শহরের প্রতিটি ফটকে সুলতানের কর্মকর্তারা মুক্তিপন আদায় করছিলেন। উদাস ও নির্বিকার চেহারা নিয়ে ক্রুসেডাররা মুক্তিপন আদায় করছিল। পুরুষরা ১০ দিনার , মহিলারা ৫ দিনার এবং শিশুরা ২ দিনার করে আদায় করে শহর ছেড়ে বের হয় দুরের গন্তব্যের উদ্দেশ্যে। 

মুক্তিপন আদায়ের শুরুটা হয়েছিল বালিয়ান ডি ইবিলিনের হাত ধরে। দিনের শুরুতে গেইট অব ডেভিডের সামনে ৭০০০০ দিনার আদায় করে সে ৭০০০ দরিদ্র খ্রিস্টানকে শহর থেকে বের করে আনে। এরপর প্রতিটি ফটকে শুরু হয় ক্রুসেডারদের বিদায়যাত্রা। ধনীদের জন্য এই সামান্য অর্থ পরিশোধ করে শহর ত্যাগ করা কঠিন ছিল না, কিন্তু দরিদ্রদের অনেকেই অর্থাভাবে আটকা পড়লো। ধনীরা এ সময় নিজেকে নিয়েই ব্যস্ত ছিল, অন্যদিকে তাকানোর ফুরসত বা ইচ্ছা কোনোটাই তাদের ছিল না।

(তৃতীয় পর্বে সমাপ্য)

প্রথম পর্ব পড়ার জন্য এখানে ক্লিক করুন

Facebook Comments

Previous Post

দীনি ইলম অর্জনের ক্ষেত্রে আধুনিক বিকৃতি। ড্যানিয়েল হাকীকাতজু

Next Post

যাইনাব রাযিঃ এর বিবাহ সম্পর্কে ইয়াসির কাজীর বিভ্রান্তিকর বক্তব্যের দালিলিক পর্যালোচনা। কাওসার আহমেদ

সাবের চৌধুরী

সাবের চৌধুরী

Related Posts

কারবালার ইতিহাস পাঠে মৌলিক কিছু কথা- ইমরান রাইহান
ইতিহাস

কারবালার ইতিহাস পাঠে মৌলিক কিছু কথা- ইমরান রাইহান

August 13, 2021
খারেজিদের সাথে ইবনে আব্বাস রা. এর বিতর্ক : বিতর্ক বিষয়ক কিছু গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা । আলি সাল্লাবি। অনুবাদ : সাবের চৌধুরী
ইতিহাস

খারেজিদের সাথে ইবনে আব্বাস রা. এর বিতর্ক : বিতর্ক বিষয়ক কিছু গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা । আলি সাল্লাবি। অনুবাদ : সাবের চৌধুরী

February 3, 2021
Next Post
যাইনাব রাযিঃ এর বিবাহ সম্পর্কে ইয়াসির কাজীর বিভ্রান্তিকর বক্তব্যের দালিলিক পর্যালোচনা। কাওসার আহমেদ

যাইনাব রাযিঃ এর বিবাহ সম্পর্কে ইয়াসির কাজীর বিভ্রান্তিকর বক্তব্যের দালিলিক পর্যালোচনা। কাওসার আহমেদ

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

No Result
View All Result

Recent.

তাসাউফ সম্পর্কে অপপ্রচার ও ভ্রান্তি : একটি সংক্ষিপ্ত পর্যালোচনা ।। মাওলানা আনাস চৌধুরী

December 16, 2022
এই পৃথিবী একবার পায় তারে। সাবের চৌধুরী।

এই পৃথিবী একবার পায় তারে। সাবের চৌধুরী।

November 28, 2022

গামেদি চিন্তার মৌলিক ভ্রান্তি | শেষ পর্ব | মূল: মাওলানা ইয়াহয়া নোমানি | তরজমা: হুজাইফা মাহমুদ

November 16, 2022

গামেদি চিন্তার মৌলিক ভ্রান্তি—প্রথম পর্ব | মূল: মাওলানা ইয়াহয়া নোমানি | ভাষান্তর: হুজাইফা মাহমুদ

November 12, 2022
বাংলাদেশে ইসলামি নারীবাদের সাতকাহন | হুজাইফা মাহমুদ

বাংলাদেশে ইসলামি নারীবাদের সাতকাহন | হুজাইফা মাহমুদ

October 29, 2022

  • আমাদের সম্পর্কে
  • যোগাযোগ

সোশ্যাল নেটওয়ার্ক

No Result
View All Result
  • মূল পাতা
  • কুরআন
  • হাদীস
  • আকীদা
  • ফিকহ
  • ইবাদাত
  • সীরাত
  • তত্ত্ব ও পর্যালোচনা
  • চিন্তা ও মতবাদ
  • দেশ, সমাজ, সংস্কৃতি
  • বিশ্ব
  • বিজ্ঞান ও আধুনিকতা
  • অন্যান্য
    • নারী, শিশু, পরিবার
    • সুন্নত ও বিদআত
    • জিহাদ
    • রাজনীতি
    • আইন ও সংবিধান
    • শিক্ষা
    • প্রাচ্যবাদ
    • ইতিহাস
    • বিয়ে ও দাম্পত্য
    • ব্যক্তিত্ব ও সাক্ষাৎকার
    • শিল্প-সাহিত্য
    • গ্রন্থ-আলোচনা
    • আরবি ব্যাকরণ
    • উর্দু ব্যাকরণ
    • বিবিধ
    • পিডিএফ
    • নির্বাচিত লেখক-পরিচিতি
    • গুরুত্বপূর্ণ লিংক ও সাইটসমূহ

© 2020 রিওয়ায়াহ - Developed by Tijarah IT Limited.