পৃথিবীতে অসংখ্য ধর্ম আছে। এর মাঝে কিছু ধর্ম আছে একত্ববাদে বিশ্বাসী। বিভিন্ন ধর্মের অনুসারীদের সংখ্যা কোটি কোটি। ইসলাম হয়ত তার অনুসারী বিবেচনায় সবচেয়ে বড় ধর্ম নয়, কিন্তু ইসলাম একটি জীবন্ত এবং গতিশীল ধর্ম। পৃথিবীর সকল ধর্ম-অধর্ম তার বিরোধীতায় লেগে আছে। কারণ ইসলাম একটি সার্বজনীন ধর্ম, কোনো অঞ্চল বা প্রজন্মের মাঝে সীমাবদ্ধ নয়। ইসলাম যে কোনো জাতি-বর্ণের মাঝে প্রভাব বিস্তার করার পূর্ণ যোগ্যতা রাখে। তবে আজকে আমাদের আলোচ্য বিষয় ইসলাম নয়; বরং এই মহান ধর্মের প্রচারক আল্লাহর প্রেরীত সর্বশেষ নবী ও রাসূল মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।
ধর্মের ইতিহাসে এটি একটি স্বীকৃত সত্য যে, প্রত্যেক মানুষ তার ধর্ম প্রবর্তকের জীবন এবং চেষ্টা মুজাহাদা সম্পর্কে খুব কমই জ্ঞান রাখে। আল্লাহ তায়ালার সেসব মহান বান্দাগণ তাদের পার্থিব জীবনে খুব বেশি সফলতা পাননি। তাদের আনীত ধর্ম তাদের মৃত্যুর পরই ব্যাপকতা পেয়েছে এবং উন্নতি লাভ করেছে। ধর্মসমূহের সে সকল প্রবর্তকদের ধর্ম তার মূল রূপে নয়; বরং খন্ড খন্ড রূপে আমাদের কাছে পৌঁছেছে। সেই ধর্মের অনুসারীরা তাদের ধর্মকে সময় এবং যুগের চাহিদামাফিক করতে গিয়ে ধর্মের মৌলনীতি এবং প্রায়োগিক পদ্ধতিতে ব্যাপক পরিবর্তন ঘটিয়ে ফেলেছে।
কিন্তু মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এই নিয়মের সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম। তার জীবনের প্রতিটি ঘটনার প্রত্যক্ষ বিবরণ সম্বলিত অসংখ্য ভলিয়মের বই-পুস্তক রয়েছে। যেখানে তার জীবনের প্রতিটি মুহূর্তের বিবরণ রয়েছে। তার ব্যক্তিগত জীবন, তার আচরণ ও উচ্চারণের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ঘটনারও বিবরণ বিদ্যমান রয়েছে। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার জীবদ্দশাতেই বিরাট সফলতা প্রত্যক্ষ করে গেছেন। বিদায় হজে যখন তিনি এক লাখ চব্বিশ হাজারেরও বেশি উপস্থিতির উদ্দেশে ভাষণ দান করেন, যারা বিভিন্ন অঞ্চল থেকে হজের ফরজ আদায় করার জন্য মক্কায় এসেছিলো- তখন তার চেয়েও কয়েক গুণ বেশি মুসলমান নিজ নিজ ঘরে অবস্থান করছিলো। কারণ মুসলামানদের জন্য প্রত্যেক বছর হজ করা ফরজ নয়। এটিও ফরজ নয় যে, কোনো বিশেষ বছরে তাদের জন্য অবশ্যই হজ করতে হবে। নিংসন্দেহে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ইন্তেকালের পর ইসলাম ব্যাপকভাবে সফলতা অর্জন করেছে। কিন্তু ইসলাম প্রচারকের জীবদ্দশায় তার শিক্ষার যে সফলতা অর্জন হয়েছে তা ইতিহাসে আর কোথাও পাওয়া যায় না। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের শিক্ষাগুলো যদি আমরা দেখি- কোরআনে কারীম শব্দে শব্দে আমাদের কাছে পৌঁছেছে। এটি সেই ভাষাতেই সংরক্ষিত আছে যে ভাষায় অবতীর্ণ হয়েছে।
যেভাবে আমাদের পর্যন্ত পৌঁছেছে তাও নির্ভরযোগ্য। চৌদ্দটি শতাব্দি পেরিয়ে গেছে, আজ পর্যন্ত রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জন্মস্থান কিংবা পৃথিবীর অন্য কোনো প্রান্তের কারোই কোরআনে কোনো ধরণের পরিবর্তন করার প্রয়োজন অনুভূত হয়নি। আমরা জানি, মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কিভাবে নামাজ আদায় করতেন, রোজা কিভাবে রাখতেন, হজ কোন পদ্ধতিতে আদায় করেছেন? সুতরাং আজ পর্যন্ত সকল মুসলমান এই রুহানী ফারায়েজগুলোকে সেভাবে আদায় করে যেভাবে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আদায় করেছেন। অন্যান্য ধর্মের অনুসারীদের মতো এমন মুসলমানের সংখ্যাও কম নয় যারা নিজ ধর্মের উপর আমল করে না। বরং কিছু লোক তো কেবল নামে মুসলমান। তা সত্বেও কোনো মুসলমান –চাই সে নামের মুসলমানই হোক- ইসলামকে যুগের চাহিদার অনুগামী বানানোর জন্য তাতে কোনো ধরণের হ্রাস-বৃদ্ধির প্রয়োজন অনুভব করেনি। আমাদের এই সময়েই দেখুন, সব ধর্মের মাঝেই সংশোধন-কর্ম খুব জোরেশোরে চলছে। কিন্তু অবাক করা ব্যাপার হলো, অন্যান্য ধর্মকে তো আধুনিক সময়ের চ্যালেঞ্জ মুকাবেলা করে যুগোপযুগী বানানোর জন্য তার মাঝে হ্রাস-বৃদ্ধির প্রয়োজন অনুভূত হচ্ছে, কিন্তু মুসলিম সংষ্কারবাদিরা একবাক্যে মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মূল শিক্ষার দিকেই প্রত্যাবর্তন করার তাগাদা দিচ্ছে। কোনো ধর্ম প্রবর্তকের জন্য এর চেয়ে বড় মর্যাদার ব্যাপার আর কি হতে পারে যে, তার শিক্ষা আজও জীবন্ত, আজও কার্যকর। তার মাঝে ন্যুনতম পরিবর্তনেরও প্রয়োজন অনুভূত হচ্ছে না।
পৃথিবীর বিভিন্ন ভাষায় ইসলামের নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জীবনির উপর হাজারো বইপত্র রয়েছে। সেসব লেখকদের মাঝে ইসলামের বন্ধু-শত্রু সব ধরণের মানুষই আছে। সকল লেখক- চাই সে ইসলামের নবীকে পছন্দ করুক বা শুধু এ কারণে অপছন্দ করুক যে, তারা ইসলাম ছাড়া ভিন্ন ধর্মের অনুসারী- সবাই এ ব্যাপারে একমত যে, মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একজন মহান মানুষ! যে সকল গবেষক জেনেবুঝে ইচ্ছাকৃত রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জীবনীকে ভেঙেচূরে বিকৃত করে উপস্থাপন করেছে –এমন লেখকের সংখ্যা প্রচুর- তারাও পরোক্ষভাবে রাসুলের প্রতি সম্মানই প্রদর্শন করছে। তারা ইসলামের নবীর শিক্ষাগুলোকে বিকৃত করে উপস্থাপন করে, কারণ তাদের আশঙ্কা রয়েছে তারা যদি ইসলামের সঠিক চিত্র তুলে ধরে তাহলে তাদের স্বধর্মীরা “বিপথগামী” হয়ে যাবে, যাদের ইসলাম থেকে ফেরানোর জন্য ইসলামের নবী সম্পর্কে তারা ইরান-তুরান গল্প বানিয়ে উপস্থাপন করে।
এ ধরণের মনস্তাত্বিক জালিয়াতি আজও চলছে। কিন্তু অবাক করা ব্যাপার হলো, আধুনিক পশ্চিম জাগতিক নানা বিষয়ে এত শক্তিশালী অবস্থানে থাকা সত্বেও ব্যক্তি মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বিরুদ্ধে তাদের প্রোপাগান্ডা কোনো কার্যকরী ফল আনতে ব্যর্থ হচ্ছে। যে আশা তারা করেছিলো বিপুল পরিমানে বই-পুস্তক রচনা, রেডিও-টিভির সম্প্রচারণ এবং ফিল্ম-সিনেমা প্রচারের মাধ্যমে। জানি না, খৃষ্টান মিশনারী এবং কম্যুনিষ্টদের কাছে যে পরিমাণ উপায়-উপকরণ রয়েছে সেগুলো যদি মুসলমানদের হাতে থাকত তাহলে পৃথিবীর গতি আজ কোন দিকে থাকতো! কিন্তু এ তো চোখে দেখা বাস্তবতা যে, খৃষ্টান এবং পশ্চিমা কম্যুনিষ্টদের মাঝে ইসলাম অত্যন্ত দ্রুততার সাথে বিস্তার লাভ করছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ত্রিশ বছরের মধ্যে বৃটেনে একশ এর বেশি মসজিদ নির্মাণ হয়েছে। জার্মানি এবং ফ্রান্সও এক্ষেত্রে বৃটেনের চেয়ে পিছিয়ে নয়। সুতরাং ইসলামকে আপন করে নেয়ার তালিকায় সাফরা প্রফেসর এবং অন্যান্য সম্মানজনক পেশায় নিয়োজিত মানুষজনও আছে। এ কোনো আশ্চর্যজনক ঘটনা নয় যে, প্রতি বছর হাজারো পর্যটক ইসতাম্বুলে ইসলাম গ্রহণ করে ধন্য হয়। যেখানে এশিয়া মাইনরের তুলনায় ধর্মীয় আবেগ ও চর্চা অত বেশি নয়।
মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের শিক্ষার আরও একটি উজ্জ্বল বৈশিষ্ট্য হলো, সেই শিক্ষাগুলোর সম্পর্ক জীবেনের প্রতিটি অধ্যায়ের সাথে জড়িত। এগুলো শুধু দেহলোক ছাড়িয়ে আকিদা-বিশ্বাসের সাথে সীমাবদ্ধ নয়। এই শিক্ষা মানুষের আধ্যাত্মিক জীবনের সাথে সাথে পার্থিব জীবনের নিয়ম এবং মূলনীতিও বলে দেয়। এমনকি রাজনীতিও তার শিক্ষার বাইরে নয়। যার ফলাফল দাঁড়ায়, ইসলাম মানুষকে তার পূর্ণাঙ্গ জীবন গঠনে মদদ যুগায়। অন্যান্য ধর্মের মতো শুধু আধ্যাত্মিকতায় আটকে থাকে না এবং রাজনীতিকে শুধু রাজনীতিবিদদের দয়ার উপর ছেড়ে দেয় না।
আমরা সহজেই একথা বলতে পারি, ইসলামের অনুসারীদের জীবন এবং ব্যক্তিগত আচরণে ইসলামের প্রভাব অন্যান্য ধর্মের তুলনায় অনেক বেশি গভীর। এই ধর্মগুলো সার্বজনীনতার দাবি তো করে, কিন্তু তার অনুসারীদের মাঝে বর্ণ এবং জাতপাতের বড়াই পর্যন্ত খতম করতে ব্যর্থ হয়েছে। অথচ আমি ১৯৩২ সালে বৃটেনের এক মসজিদে এক ইংরেজ মুয়াজ্জিন দেখেছি। তিনি বড় গর্বের সাথে নিজের নাম রেখেছেন বেলাল। যা ইসলামের নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হাবশী মুয়াজ্জিনের নাম ছিলো। এও কি কম আশ্চর্যের কথা যে, ফিনল্যান্ডের এক ব্যক্তি- যার নাম আকিল, যিনি সুইডেনে থাকেন- তিনি শুধু পড়াশোনা করার পর ইসলাম গ্রহণ করে ফেলেছেন। অথচ এর আগে কোনো মুসলমানের সাথে তার সম্পর্কও ছিলো না। এরপর ফ্রান্স বংশোদ্ভোত গিননকেও তিনি ইসলাম গ্রহণে ধন্য করেছেন। গিননের অনুসারী ফ্রান্স, সুইজারল্যান্ড এবং অন্যান্য দেশেও ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিলো। তিনি হাজারো মানুষকে ইসলাম ধর্মে দিক্ষিত করে ফেলেছেন। বাস্তবতা তো হলো, পশ্চিমাদের শুধু ফখরুদ্দীন রাযিই নয়, বরং মহিউদ্দীন ইবনে আরবিও ব্যাপক প্রভাবিত করেছেন। এ কোনো আশ্চর্যের বিষয় নয় যে, কাফের হালাকু মুসলিম বিশ্বকে জয় করে নিয়েছে, আব্বাসিদের বাগদাদের একেকটি ইট মিটিয়ে দিয়েছে, কিন্তু কিছু দরবেশ মিলে তার নাতি গযনকে ইসলামে দিক্ষিত করে ফেলেছে এবং ইসলামি বিশ্বকে যারা ধ্বংস করে দিচ্ছিলো তাদেরই ইসলামের মহান পতাকাবাহী বানিয়ে দিয়েছে।
অন্যান্য ধর্মের প্রবর্তকরা যদি কিছু মানবিক বৈশিষ্ট্যে একে অন্যের উপর প্রধান্য লাভ করে থাকেন তাহলে ইসলামের নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এত বেশি বিষয়ে প্রাধান্য লাভ করে আছেন যে, জ্ঞানান্বেষী পেরেশান হয়ে যায়। তিনি ছিলেন এক মহান এবং গুণধর আইনপ্রণেতা, যিনি সকল আইনি প্রশ্নের জবাবে মূলনীতি বলে দিয়ে গেছেন।
তিনি অনেক বড় সাংগঠনিক ছিলেন, যিনি একমুষ্ঠি মাটি থেকে এক বিশাল সাম্রাজ্য কায়েম করেছেন। তিনি নিজে ছিলেন সেই সাম্রাজ্যের প্রধান পরিচালক।
তিনি একজন সেনাধিনায়ক ছিলেন, কয়েকবার তো নিজের স্বেচ্ছাসেবক সেনাবাহিনী নিজেদের চেয়ে তিন থেকে পনেরো গুণ বড় সেনাবাহিনীকে পরাস্তু করে দিয়েছেন।
তার চরিত্র গঠনমূলক শিক্ষাগুলো সারগর্ভ। শিক্ষাকে শুধু প্রতিকী এবং কার্যক্ষেত্রে অচল বানানোর জন্য কোনো বাড়াবাড়ির আশ্রয় নেয়া হয়নি। তিনি বলেননি, কেউ তোমার ডান গালে চর দিলে বাম গাল পেতে দাও। বরং তিনি বলেন, যদি তুমি ন্যায়সঙ্গত বদলা লও তাহলে তা ভালো এবং বৈধ। হ্যা, যদি তুমি ক্ষমা করে দাও তাহলে তা আল্লাহ তায়ালার নিকট বেশি প্রিয়।
তার শিক্ষাগুলো সাধারণ মানুষদের জন্য ততটাই কার্যকর যতটা কোনো বুযুর্গ বা আধ্যাত্মিক সাধকের জন্য। এই শিক্ষা সাধারণ মানুষকে গুনাহে লিপ্ত হওয়া থেকে বাধা দেয় এবং যুক্তির সীমার মধ্যে আবদ্ধ রাখে। তার ধর্মীয় শিক্ষা অনুসারে বান্দা আল্লাহর জন্য, এবং আল্লাহ বান্দার জন্য। তিনি আল্লাহ এবং বান্দার মাঝে সরাসরি সম্পর্ক তৈরি করে দিয়েছেন। আল্লাহ এবং বান্দার মাঝে কোনো তৃতীয় পক্ষের প্রয়োজন নেই, এবং নেই কারও ইজারাদারিও। মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের শিক্ষার মতো আল্লাহ তায়ালার একত্ববাদ, তার অগণিত গুণাবলী, সৃষ্টির জন্য তার ভালোবাসা এবং দয়ার নজির অন্য কোনো ধর্ম পেশ করতে পারেনি। ইসলামে আল্লাহ হলেন বিশ্বজাহানের প্রতিপালক। তিনি ওয়াদূদ- বান্দাকে অত্যধিক ভালোবাসেন, রহীম বা দয়ালু, এবং গফূর বা ক্ষমাশীল। তিনি কেয়ামতের দিন শাস্তি দেয়ার ক্ষেত্রেও ন্যায়নিষ্ঠ। কিন্তু তার দয়া তার রাগের চেয়েও বেশি।
মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মানব সম্প্রদায়কে সব ধরণের আখলাক শিক্ষা দিয়েছেন। যখন তিনি নিশ্চিন্ত হলেন যে, তিনি তার সবচেয়ে কঠিন মিশনকে সফল এবং সুন্দরভাবে আঞ্জাম দিতে পেরেছেন, তখন তিনি আরও মহান সঙ্গীর সঙ্গকে গ্রহণ করে নিলেন। (আল্লাহর কাছে চলে গেলেন।)
اللّٰھم صل علٰی سیّدنا محمد وعلٰی اٰل سیدنا محمد واصحاب سیدنا محمد وبارک وسلِّم وصل علیہ