Riwayahbd
  • মূল পাতা
  • কুরআন
  • হাদীস
  • আকীদা
  • ফিকহ
  • ইবাদাত
  • সীরাত
  • তত্ত্ব ও পর্যালোচনা
  • চিন্তা ও মতবাদ
  • দেশ, সমাজ, সংস্কৃতি
  • বিশ্ব
  • বিজ্ঞান ও আধুনিকতা
  • অন্যান্য
    • নারী, শিশু, পরিবার
    • সুন্নত ও বিদআত
    • জিহাদ
    • রাজনীতি
    • আইন ও সংবিধান
    • শিক্ষা
    • প্রাচ্যবাদ
    • ইতিহাস
    • বিয়ে ও দাম্পত্য
    • ব্যক্তিত্ব ও সাক্ষাৎকার
    • শিল্প-সাহিত্য
    • গ্রন্থ-আলোচনা
    • আরবি ব্যাকরণ
    • উর্দু ব্যাকরণ
    • বিবিধ
    • পিডিএফ
    • নির্বাচিত লেখক-পরিচিতি
    • গুরুত্বপূর্ণ লিংক ও সাইটসমূহ
  • মূল পাতা
  • কুরআন
  • হাদীস
  • আকীদা
  • ফিকহ
  • ইবাদাত
  • সীরাত
  • তত্ত্ব ও পর্যালোচনা
  • চিন্তা ও মতবাদ
  • দেশ, সমাজ, সংস্কৃতি
  • বিশ্ব
  • বিজ্ঞান ও আধুনিকতা
  • অন্যান্য
    • নারী, শিশু, পরিবার
    • সুন্নত ও বিদআত
    • জিহাদ
    • রাজনীতি
    • আইন ও সংবিধান
    • শিক্ষা
    • প্রাচ্যবাদ
    • ইতিহাস
    • বিয়ে ও দাম্পত্য
    • ব্যক্তিত্ব ও সাক্ষাৎকার
    • শিল্প-সাহিত্য
    • গ্রন্থ-আলোচনা
    • আরবি ব্যাকরণ
    • উর্দু ব্যাকরণ
    • বিবিধ
    • পিডিএফ
    • নির্বাচিত লেখক-পরিচিতি
    • গুরুত্বপূর্ণ লিংক ও সাইটসমূহ
No Result
View All Result
Riwayahbd
No Result
View All Result

নারীবাদ ও প্রগতিশীলতা : গরিবের সামান্য নিবেদন। আব্দুল্লাহ আয যুবাইর

by সাবের চৌধুরী
January 29, 2021
1 min read
0
নারীবাদ ও প্রগতিশীলতা : গরিবের সামান্য নিবেদন। আব্দুল্লাহ আয যুবাইর
47
SHARES
360
VIEWS
Share on FacebookShare on Twitter

সম্প্রতি প্রগতিশীল বৃত্তের কতিপয় ভদ্রমহিলার ফেইসবুক পোস্ট হোমপেইজে ঘুরে বেড়াচ্ছে। তারা নিজেদের অন্দরমহলের কিছু পুরুষদের ভণ্ডামি ও কুকীর্তির চিত্র রাতের অন্ধকার থেকে দিনের আলোতে নিয়ে এসেছেন। কথিত এই মুখোশ উন্মোচনে কেউ কেউ যারপরনাই অবাক হয়ে আকাশ থেকে পড়ছেন। নারীবাদ-আধুনিকতা-প্রগতিশীলতা দিয়ে গোসল করার পরও পুরুষদের থেকে এই ধরণের সেক্সচুয়ালি ফ্রাস্টেইটেড আচরণ জাফর ইকবালের দেশের সম্ভাবনাময় মুজিব সেনারা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারে না। আর মেনে নিবেই বা কীভাবে! যেই দেশে প্রাচ্যের অক্সফোর্ড আছে, আধুনিক সহশিক্ষা আছে, মননশীলতা চর্চার জন্য নাচ, গান, নাটক, আবৃত্তি আছে; নৈতিকতা সিদ্ধির জন্য সাহিত্য আছে, বুদ্ধিবৃত্তিক উন্নয়নের জন্য বিতর্ক আছে, রাজনৈতিক ঋদ্ধতার জন্য ছাত্রলীগ আছে, সাংস্কৃতিক-অর্থনৈতিক সমাজ বিপ্লবের জন্য ছাত্র ইউনিয়ন আছে, ‘মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত প্রেতাত্মা’ নির্মূলের জন্য হাজার বছরের বাঙালি সংস্কৃতি আছে! তার চাইতেও বড় কথা, যেই দেশের মানুষ শুধুমাত্র—আই রিপিট : শুধুমাত্র বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ শুনে সেকুলারিজম-সমাজতন্ত্র-জাতীয়তাবাদ-গণতন্ত্র এই চার মোলের জন্য তিরিশ লক্ষ জীবন উৎসর্গ করল, সেই সোনার বাংলায় এই ধরণের জঘন্য ঘটনা ঘটবে তা সহ্য করা যে কোন প্রগতিশীল মানুষের জন্য দুঃস্বপ্নের মতো।

 

২.

মজার বিষয় হচ্ছে, ভূমিকাতে বাঙালির সমৃদ্ধির দিকটি বুঝাতে যা কিছুই বলেছি, তার মধ্যে কিন্তু ‘মধ্যযুগীয় পশ্চাৎপদ পুরুষতান্ত্রিক ইসলাম’র নামগন্ধও নেই। থাকার কথাও না। কারণ, হাজার বছরের বাঙালি জনগণ শুধুমাত্র সেকুলারিজম-সমাজতন্ত্র-জাতীয়তাবাদ-গণতন্ত্রের জন্য তিরিশ লক্ষ প্রাণ বিলিয়ে দিয়েছে; এখানে ইনসাফ ও অধিকার আদায়ের কোন বিষয় তো ছিল না। প্রগতিশীল মুক্তপ্রাণ আধুনিক মানুষ হবার লক্ষ্যে তারা শুধু এই চার মোলগুলো অর্জনের জন্যই রক্ত ঢেলেছিলেন। দেশ, অধিকার, ইনসাফ এগুলো তো নিছক পার্থিব বিষয়। মুক্তপ্রাণ মহান জীবনের সামনে নিতান্ত তুচ্ছ। মানুষ এসবের জন্য যুদ্ধ করেনি। মুক্তিযুদ্ধারা হিন্দু-মুসলিমসহ বিভিন্ন ধর্মের অনুসারী হলেও ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে ধর্মের প্রশ্ন ধীরে ধীরে নাই হয়ে গিয়েছিল পূর্ব থেকেই। প্রয়াত ড. আনিসুজ্জামান আমাদের সেরকমটাই জানিয়ে দিয়ে গেছেন, এবং এই ধরণের ইসলাম মুক্ত স্বচ্ছ ও নির্মল অভয়ারণ্য নির্মাণ করতে তিনি আজীবন সংগ্রাম করে গেছেন। তার মতন বহুমাত্রিক গুণধর আধুনিক মনীষীদের আত্মত্যাগের বদৌলতেই হালের হার্ডকোর-সফটকোর শাহবাগ প্রজন্ম। এমন মহত্তম একটি আধুনিক সমাজের অভ্যন্তরে এইসব ভয়াবহ ব্যাপার ঘটতেই পারে না।

 

 

৩.

এতক্ষণ ধরে শুধু প্রশংসাই করতে থাকলে বড় অবিচার হয়ে যাবে। অবশ্য আলোচিত ভদ্রমহিলাগণ নিজেদের প্রগতিশীল সার্কেলের ভেতর থেকেই ‘আত্মসমালোচনার’ শুভ কাজটি শুরু করেছেন, এজন্য তাদের সাধুবাদ জানাই। তবে আমি তাদেরকে ‘ড্রাঙ্ক ভিক্টিম’ তথা ‘অবচেতন ভুক্তভুগী’ মনে করি। কারণ, আমার মনে হয় না তাঁরা প্রগতিশীলতা জিনিসটা কীভাবে প্রগতিশীল হয়ে উঠলো সে গল্পটা জানেন। এ ক্ষণে সে গল্পটাই আমি করব, যেন তারা ধরতে পারেন প্রগতিশীলতার গাঠনিক উপাদানের ভিতরেই ঝামেলা আছে। ভেতরে এই ঝামেলা রেখে হাজার কোটিবার ছায়ানট, বিতর্ক বা মুক্তবুদ্ধির চর্চা করে এরপর লক্ষ কোটি বার সরি বললেও আখেরে কোন লাভ হবে কি না সেটাই খতিয়ে দেখার চেষ্টা করব। বাকিটা আল্লাহ ভরসা।

 

 

৪.

এর জন্য প্রথমে একটু গোড়ার দিকে যেতে হবে। ইসলামের সর্বশেষ নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন দুনিয়াতে আসেন, তখন ইঞ্জিল-তাওরাতের সর্বোচ্চ বিকৃতি ইতিমধ্যে সাধিত হয়ে ধর্ম দু‘টো নানান কুসংস্কার ও বহুধা মতবাদে জর্জরিত হয়ে পড়েছিলো। এই সন্ধিক্ষণে ইসলামের একত্ববাদের বার্তা দুনিয়ার দিকদিগন্তে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে। এক পর্যায়ে ইসলাম প্রভাবশালী সভ্যতারূপে দেদীপ্যমান হয়ে উঠে এবং শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতিতে অনন্য উচ্চতায় আরোহণ করে। এসব কিছুর কেন্দ্রবিন্দু ছিল কুরআন-সুন্নাহ। এই কুরআন-সুন্নাহকে ভিত্তি করেই মুসলিমগণ নিজস্ব আইন, অর্থনীতি, শাসন ব্যবস্থা, পররাষ্ট্রনীতি ও বিভিন্ন প্রশাসনিক প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করেন। আরো আশ্চর্যের ব্যাপার হচ্ছে, যে ‘মধ্যযুগ’র দুঃস্বপ্নে প্রগতিশীল বন্ধুদের রাতের ঘুম হারাম হয়ে যায়, সেই মধ্যযুগই ছিল ইসলামের না শুধু, অপরাপর সভ্যতার তুলনায় গোটা জাহানের জন্য আশীর্বাদ। মহানবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি অয়া সাল্লামের সময় থেকে নিয়ে পশ্চিমে অটোমান-আফ্রিকা, পূর্বে ভারত উপমহাদেশে ইহুদি-খৃষ্টান-হিন্দু-বৌদ্ধসহ নানা ধর্মের মানুষ শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান করেছে। কলোনিয়াল পিরিয়ডের কথা আর বললাম না। এইসব ঘটনা হালের পশ্চিমা একাডেমিয়ায় প্রতিষ্ঠিত একটা ব্যাপার। একটু পড়াশুনা করলেই হবে; চোখ কপালে তোলার দরকার নাই। তো, জীবন, সমাজ, রাষ্ট্র, অর্থনীতি, শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতি, মানবতা, প্রগতি ইত্যকার সমস্ত কিছু ইসলাম নিজের পেটের ভিতর ধারণ করে পৃথিবীব্যাপী আলো ছড়িয়েছে। কোন স্পেসিফিক ইজমের মাধ্যমে আলগা আলোকায়নের দরকার পড়ে নাই। ইসলাম নিজেই আলো, এবং তা স্বয়ংসম্পূর্ণ ও স্বনির্ভর।

 

 

৫.

কিন্তু গ্রেকো-রোমান সভ্যতার অভিজ্ঞতা ছিল ভিন্ন রকম। আসল মধ্যযুগ আর হালের শাহবাগ প্রজন্মের ফেইক মধ্যযুগ—উভয়টাই ছিল তাদের জন্য অন্ধকার। বিকৃত বাইবেলের একচ্ছত্র কর্তৃত্বধারী পাদ্রীদের অত্যাচারে রাষ্ট্র-চার্চের দ্বন্দ্ব তুঙ্গে উঠে এবং জনমনে ক্ষোভের আগুন দাউ দাউ করে জ্বলে উঠে। এ সময়টিতে ইউরোপ পুরোপুরি ধর্ম থেকে বিযুক্ত হতে পারছিল না, আবার সর্বোতভাবে আত্মীকরণও করতে পারছিল না। ফলে, তারা একটি দ্বান্দ্বিক অবস্থার মধ্যে নিপতিত হয়। কারণ, একদিকে  ইসলামকে অস্বীকার করার ফলে তাদেরকে সেই প্রাচীন ক্ষতবিক্ষত তাওরাত-ইঞ্জিলকে আঁকড়ে ধরতে হয়েছে। অপরদিকে বিকৃত তাউরাত-ইঞ্জিলের জীবনবিধানগত অপূর্ণতা তারা এরিস্টটলীয় দর্শন ও থমাস একুইনার ‘ন্যাচারাল ল তত্ত্ব’র মধ্য দিয়ে কাটিয়ে উঠতে চেষ্টা করেছে। মজার ব্যাপার হচ্ছে এরিস্টটল ও প্ল্যাটোও আবার ইউরোপে পরিচিত হয়েছেন মুসলিম দার্শনিকদের মাধ্যমে।

 

 

যাই হোক, পশ্চিমের দর্শনবান্ধব বুদ্ধিবৃত্তিক নতুন এই যাত্রায় সবচেয়ে বড় বাঁধা হয়ে দেখা দেয় ট্র্যাডিশনাল চার্চ। ওই সময় চার্চ সর্বক্ষেত্রেই মনোপলি দাবী করতে থাকে। কারণ তৎকালীন ইহুদি-খৃষ্টান সমাজে মান্যতার দিক দিয়ে তাউরাত-ইঞ্জিলের অথরিটি মুসলিম সমাজে কুরআন-সুন্নাহর অথরিটির মতই ছিল। ফলে, জনগণের আস্থা ছিল চার্চের প্রতি। এই আস্থা কাজে লাগিয়েই এলিট পাদ্রীরা নিজেদের স্বার্থ সিদ্ধি করত। কিন্তু ধীরে বিপত্তি ঘটে। সময়ের বিবর্তনে নিত্যনতুন সমস্যা দেখা দিতে থাকে। সমস্যার ঘনত্বে বিকৃত তাউরাত-ইঞ্জিলের নির্দেশনা ছিল অপর্যাপ্ত, অসংগত ও লক্ষ্যহীন, কিন্তু জেদী ও অপ্রতিদ্বন্ধী অথরিটি হয়ে থাকার প্র্রবণতা সম্পন্ন। ফলে একসময় ধর্ম ও বিজ্ঞান দুই মেরুতে দাঁড়িয়ে যায়। সেই শূন্যতা ভরাট করতে বুদ্ধিজীবী ও বিজ্ঞান চর্চাকারীদেরকে এক প্রকার বাধ্য হয়েই চার্চের রাজ্য ত্যাগ করতে হয়েছিল। তারা আলোকায়নের মাধ্যমে জনপরিসরে স্বতন্ত্র একটা অথরিটি নির্মাণ করে যাচ্ছিলেন।

 

অপরদিকে ঐতিহ্যবাদী চার্চ ছিল নাছোড়বান্দা। তারা একক কর্তৃত্বের ভাঙন কিছুতেই মানছিল না। ফলে তারা রাষ্ট্রকে ব্যবহার করে রাষ্ট্রের মাধ্যমে বিরোধী মতাবলম্বীদের শায়েস্তা করতে লাগলো। কিছুকাল পর পরিস্থিতি এতই ভয়াবহ রূপধারণ করেছিল যে, পরিণতিতে নিজেদের মধ্যেই বিপুল রক্তারক্তি কাণ্ড সংঘটিত হয়। চার্চ, রাষ্ট্র ও জনগণে ফাটল শুধু বাড়তেই থাকে। চরমপন্থি ও নরমপন্থী সম্প্রদায়ের জন্ম হয়। এভাবেই কালের পরম্পরায় অনিবার্য প্রতিক্রিয়া স্বরূপ বিভিন্ন সংস্কার আন্দোলন শুরু হয় ইউরোপজুড়ে। অল্প কথায় বললে ,ইহুদি খৃস্টানদের বিকৃত তাওরাত-ইঞ্জিলের অন্ধ অনুকরণই তাদেরকে অনিবার্য ও অবশ্যম্ভাবী বিভিন্ন গৃহ যুদ্ধবিগ্রহের মধ্য দিয়ে সংস্কার-বিপ্লবের পথে নিয়ে আসে। নিষ্পেষিত বাস্তবতার অন্ধকারের মধ্য দিয়েই আমরা পশ্চিমের বিভিন্ন প্রতিক্রিয়াশীল আন্দোলনের দেখা পাই। যেগুলোকে আমরা আলোকায়ন, আধুনিকতা, উদারনীতিবাদ, নারীবাদ ইত্যাদি নামে চিনি।

 

৬.

উপরোক্ত শূন্যতা, দ্বন্দ্ব ও একগুঁয়েমি থেকেই ধর্ম ও রাষ্ট্র পৃথকিকরণের যাত্রা শুরু হয়। গভীর দৃষ্টিতে দেখলে এটাকে পৃথকিকরণ না বলে মিশেল ফুকোর ভাষায় ‘চার্চের জায়গায় রাষ্ট্রের প্রতিস্থাপন’ বললে অধিকতর জুতসই হয়। খেয়াল করলে দেখব, আইন ও নৈতিকতার ক্ষেত্রে সেকুলার আইন বহুলাংশেই ধর্মীয় আইন দ্বারা প্রভাবিত। যদিও সংযোজন বিয়োজন ঘটেছে বিস্তর। সুতরাং মুখে মুখে ধর্মকে আলাদা করলেও সেকুলারিজম মূলত বাইবেলেরই উন্নত সংস্করণ। কারণ বাইবেল আগে থেকেই নানা মুনির নানা মতে জর্জরিত ছিল। এ কারণেই আজ এত হাজার বছর পরও ইসলামের কুরআন সুন্নাহর মতন বাইবেল ততটা বদ্ধমূল ও সুসংহত অথরিটি ও গ্রহণযোগ্যতা পায় নি। ফলে সেকুলারিজমের নামে তাকে মজবুত করতে হয়েছে। এবং এই নামেই এটা দুনিয়াব্যাপি কর্তৃত্ব চালিয়ে যাচ্ছে। এটা আরো সহজ হয়েছে উপনিবেশ স্থাপন করে জোর করে চাপিয়ে দেয়ার মাধ্যমে।

 

একসময় উপনিবেশিত এলিটরা এটা শুধু মেনেই নেই নি; বরং স্বাধীনতার পর ঠিক একই আদলে ছোট ছোট মডার্ন সেকুলার জাতিবাদি নিও-কলোনি তৈরী করেছে। কারণ উপনিবেশকরা দেশীয় এলিটদের বুঝাতে সক্ষম হয়েছিল যে, সেকুলারিজম মানে ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ; কাজেই এটা কোন নির্দিষ্ট ধর্মের প্রতিনিধিত্ব করে না। এই রসমালাই খেয়েই ঔপনিবেশিক সন্তানগণ বর্তমান আধুনিক সেকুলার জাতিরাষ্ট্রগুলি দলভিত্তিক শাসনের নামে শোষণ করে; আধুনিকতা ও প্রগতিশীলতার চাদরে ইসলাম ভীতি ও ইসলাম বিদ্বেষের চর্চা করে। চার্চ যেমন ধর্মের নামে নিজেদের স্বার্থপরিপন্থী জ্ঞানবিজ্ঞানের বিরোধিতা করতো, তেমনিভাবে সেকুলারিজমও প্রয়োজনমত ধর্মকে ব্যবহার করে; আবার সুবিধামতন নিয়ন্ত্রণও করে, এবং কার্য সমাধা হয়ে গেলে ছুঁড়েও ফেলে।

 

 

৭.

পক্ষান্তরে ইসলামের ওই ধরণের দ্বন্দ্বের অভিজ্ঞতা হয় নাই। কারণ, ইসলাম কুরআন সুন্নাহকে কেন্দ্র করে নৈতিক কাঠামোও যেমন দাড় করিয়েছে;  তেমনিভাবে এ দুয়ের নির্দেশনার আলোকে আইনী, রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক ভিত্তিও প্রতিষ্ঠা করেছে। সেইসাথে কতিপয় সুস্পষ্ট সুনির্দিষ্ট নীতিমালার—যেগুলো স্থিরীকৃত ও অপরিবরতনশীল—পাশাপাশি এমন বিবর্তনশীল নির্দেশনার পরিকাঠামো ইসলাম দিয়েছে, যার উপর দাঁড়িয়ে ফক্বীহ,মুফতী ও কাজীগণ সুন্নাহসম্মত সামাজিক পরিবেশ এবং আইন ও বিচার ব্যবস্থা কায়েম করেছেন। খলীফাগণ যুগের চাহিদা মতন জনকল্যাণমূলক প্রশাসনিক কাঠামো নির্মাণ করেছেন; তবে রাষ্ট্রের সিংহভাগ আইনই প্রণয়ন করতেন ইসলামি জুরিস্ট তথা ফক্বীহগণ। শাসকরা সীমিত পরিসরে শুধুমাত্র সীমান্তরক্ষা, জনকল্যাণমূলক ও প্রাতিষ্ঠানিক বিষয়াদি তদারকি করতেন। কাজেই ইসলাম পশ্চিম থেকে পুরোপুরি ভিন্ন একটা অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে গিয়েছে।

 

ফলে, এই দেশের কথিত প্রগতিমনা ও সুশীলগণ যখন আলোকায়নের আলগা ব্যানারের নিচে দাঁড়িযে ইসলামকে সেভাবে ডিল করতে যান, যেভাবে পশ্চিম ডিল করেছে চার্চকে, অথবা চার্চ ডিল করেছে মডার্নিটির আন্দোলনকে, তখন তা শুধু হাস্যকর না; অট্টহাস্যকর; পাশাপাশি তারা যে ইসলামের জার্নিটার ব্যাপারে মোটা দাগের জ্ঞানও রাখেন না সে বিষয়টিও বুঝা যায়।

 

৮.

এখন নারীবাদের প্রসঙ্গে আসা যাক। আগেই ইঙ্গিত দিয়েছি, নারীবাদ মডার্নিটির মতই একটি প্রতিক্রিয়াশীল আন্দোলন। এটাও চার্চের মতন পুরুষ কর্তৃক একচেটিয়া ক্ষমতা চর্চার পরিণতি হিসেবে হাজির হয়েছিল। নানা মানুষের নানা মত বাইবেলে ঢুকে গিয়ে বিকৃত হওয়ার ফলে এর বয়ানে আল্লাহ প্রদত্ত নারীপুরুষের এজেন্সিও বিকৃত হয়ে গেছে। ফলে, ধর্মের প্রশ্নে পাদ্রীরা যেমন একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণকর্তা বনে গিয়েছিল, তেমনি নারীর পরিচয় ও অধিকারপ্রশ্নে পুরুষরাও একচ্ছত্র নীতিনির্ধারক বনে গিয়েছিল। এইভাবে চিন্তা করলে নারীবাদের উত্থান মডার্নিটির মতই যৌক্তিক। কিন্তু পরবর্তীতে এন্টিচার্চ মুক্তি আন্দোলনটির ভেতর থেকে যেমন নানান ডালপালা—রাজনীতি, অর্থনীতি, সংস্কৃতি ও সুবিধানীতির জঙ্গলে জট পাকিয়েছে, তেমনি ফেমিনিস্ট থিওরীও কালের বিবর্তনে চার্চের পাদ্রী ও পুরুষতন্ত্রের আসনে বসে গেছে এবং ডমিন্যান্ট পুরুষতন্ত্রের প্রতিরোধ করতে গিয়ে এটি নিজেই আরেকটি ফ্যাসিবাদী শক্তির রূপ ধারণ করেছে। ফেমিনিজমের ওয়েভগুলো দেখলেই বুঝা যায়, কীভাবে নারীবাদ পশ্চিমের প্রেক্ষাপটে একটা যৌক্তিক ও সুস্থ আন্দোলন থেকে ক্রমান্বয়ে ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যবাদ-উদারনীতি-পুজিবাদ-আধুনিকতার মিশ্রণে একটা খেই হারানো ভোগবাদে পর্যবসিত হয়েছে।

 

তবে নারীবাদের সমস্যার উৎপত্তিস্থল হচ্ছে দ্বিমুখী। প্রথমত, বিকৃত বাইবেলে নারীকে ভুলভাবে চিত্রায়ন করা হয়েছে। এই সূত্র ধরে ফেমিনিস্ট থিওরি কোন বাছবিচারে না গিয়ে গোঁয়ারের মত একচেটিয়াভাবে ইসলামসহ সব ধর্মের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে বসেছে। ফলে, শুধু যে তাদের সামনে ইসলামের হাত ধরে সমস্যা সমাধানের পথটি বন্ধ হয়েছে তাই নয়, তাদেরকে ইসলামের সাথে অন্তহীন এক যুদ্ধে লিপ্ত হতে হয়েছে। দ্বিতীয়ত, এনলাইটেনমেন্ট প্রভাবিত মানুষের এজেন্সির যে ধারণা স্বাধীনতা, সাবালকত্ব ও ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যবাদের মোহনায় প্রবাহিত হয়েছে, নারীবাদও সেই ফাঁদে পা দিয়ে বন্দি হয়ে বসে আছে। কারণ, মূল শ্লোগান ও স্পিরিট তো ছিল—আধুনিকতার কোন স্পেসিফিক জেন্ডার নাই। কাজেই একজন আধুনিক পুরুষ যেমন বেন্থামের সূত্রমতে সর্বোচ্চ সুখ পেতে পুজিবাদের দোসর ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যবাদী হয়ে ধর্ম ও নৈতিকতা মুক্ত অবারিত স্বাধীনতা ভোগ করতে পারে; ঠিক একই ভাবে একজন ফেমিনিস্টও পারে। কিন্তু বিদ্যমান বাস্তবতা তো পুরোই উল্টো। কারণ মডার্ন বাস্তবতায় পুরুষ যে পরিমাণ রাজনৈতিক, পুজিতান্ত্রিক ও সমাজের নানা স্তরে নানাবিধ সুবিধা ভোগ করে, নারী তা পারে না। ধর্মের জঞ্জাল ছুঁড়ে ফেলে মানবতাবাদি হয়ে কী লাভটাই বা হলো তবে!

 

৯.

নারীবাদ তার অগণিত শাখাপ্রশাখাসহ একটা কমন ধারণা লালন করে, সেটা হচ্ছে, নারীর এজেন্সি তথা কর্তাসত্ত্বার আদি স্বাধীনতা। এই সূত্র ধরে ফেমিনিস্ট থিওরী নারীকে পুরুষ থেকে—এমনকি পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতার নারীদের থেকেও পৃথক করে। প্রতিষ্ঠিত সত্য মনে করে ধরেই নেওয়া হয়, নারী হচ্ছে তারা সমাজ দ্বারা নিগৃহীত। এটা একটা আকীদা ও বিশ্বাসের রূপ লাভ করে। অতএব, যেহেতু সামাজিকভাবে নারীর প্রকৃত স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠিত রূপেই অপহৃত, সেহেতু ধীরে ধীরে অনিবার্য রূপে তার ভেতর শৃঙ্খল ছিঁড়ে মুক্ত হওয়ার একটা প্রতাপশালী প্রতিরোধ স্পৃহা গজিয়ে উঠে। এই বিদ্রোহ থেকেই নারীর প্রকৃত এজেন্সি মূর্তিমান হয়ে উঠে। এখানে একজন ফেমিনিস্টের কাছে স্বাধীনতার মানদণ্ড হচ্ছে একজন আধুনিক লিবারাল পুঁজিবাদী/মার্ক্সবাদী পুরুষের স্বাধীনতা। দ্বন্দটা লাগেই মূলত এই পয়েন্টে এসে।

খেয়াল করার বিষয় হলো, এই ক্যাটাগরি পশ্চিমা নারীবাদীদের চাপিয়ে দেওয়া। তারা তাদের স্বতন্ত্র অভিজ্ঞতার বোঝা পুরা দুনিয়ার নারীদের উপর কলনিয়ালিজমের মতন জবরদস্তি করে চাপিয়ে দিয়ে ইসলাম যে নারীকে স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যপূর্ণ দায়িত্বশীল কর্তাসত্তা দিয়েছে তার বিলোপ সাধন করতে চায়।

এখানে গুরুত্বপূর্ণ একটি নোক্তা বলে রাখি, আর না হয় আমার লেখার মূল ম্যাসেজটি ভুুল দিকে প্রবাহিত হতে পারে। বাংলাদেশের সমাজ বাস্তবতায় নারীগণ নানা ক্ষেত্রে নিগৃহিত। নগরেও আছে, শিক্ষিত পরিসরেও আছে, তবে বিশেষ করে গ্রামীণ অশিক্ষিত পরিসরে এই সমস্যা বেশি পরিমাণে বিদ্যমান। কিন্তু খেয়াল করলে দেখবেন, নারীবাদীদের ফাইটটা এগুলোর বিরুদ্ধে হয় না। এসব নিয়ে এরা কখনোই কথা বলে না। এটি একটি অন্ধ ফেমিনিজম, যা পশ্চিমের অভিজ্ঞতা থেকে জন্ম নিয়ে বহুমাত্রিক বিকৃতির ভেতর দিয়ে বর্তমানের এই সামাজিক বিষফোঁড়া হয়ে দাঁড়িয়েছে।  এই ফেমিনিজমের গোড়ায় বসে আছে তাদেরই কথিত পুরুষতন্ত্র। সে সুতোয়ই নারীগণ নাচেন। ভোগবাদিতা যার একমাত্র লক্ষ্য এবং সে সূত্রে ইসলাম তাদের একমাত্র প্রতিপক্ষ। পশ্চিম কর্তৃক বিশ্বজুড়ে ছড়িযে দেওয়া ফেমিনিজমের এটিই একমাত্র চরিত্র। আমার ফোকাসটিও এখানেই, এই ফেমিনিজমের ব্যাপারেই।

 

 

১০.

এই লেখার শুরুতে একটা আপাত পুরুষতান্ত্রিক কথা বলেছিলাম। আবার রিপিট করি — তবে আমি তাদেরকে ড্রাঙ্ক ভিক্টিম তথা অবচেতন ভুক্তভুগী মনে করি। আমাকে ব্যাখ্যা করতে দেন। আধুনিকতা একটা লম্বা সময় ধরে ডমিন্যান্ট ডিসকোর্স হিসেবে থাকারও অনেক পর নারীবাদ আন্দোলন শুরু হয়। নারীবাদ ধীরে ধীরে আনক্রিটিকালী আধুনিক ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যবাদী লিবারাল পুঁজিবাদী পুরুষের আকার ধারণ করে। এই আধুনিক ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যবাদী লিবারাল পুঁজিবাদী পুরুষরাই যৌনশিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতির বুলি শুনিয়ে পারিবারিক প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে সেখান থেকে নারীদের বের করে বিপুল পয়সার বিনিময়ে বাণিজ্যিক পতিতালয়ের সরকারীকরণ করে। পর্ণোগ্রাফিক বই-সিনেমা-জার্নালে নারীদেরকে যৌনখাদ্য রূপে পরিবেশন করা হয়। কর্মসংস্থানের নাম করে তাদের বিকিনি পরিয়ে অর্ধনগ্ন করে রিসোর্ট-হোটেলের সজ্জা সামগ্রী হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। পুঁজিবাদের আকাশচুম্বী সাফল্যের জন্য নারীর পোশাক পর্যন্ত তথাকথিত আধুনিক যৌনতা সর্বস্ব লিবারেল পুরুষরা নির্ধারণ করে দিতে থাকে। মেয়েরা কেন হিল পরে বা অল্প কাপড় গায়ে দেয় তার ইতিহাস পুরাটাই বাজার কেন্দ্রিক। নিম্নবিত্ত পরিবারের মেয়েরা যৌন ব্যবসায় যেতে থাকে। আর মধ্যবিত্ব মেয়েরা ব্রান্ড এম্বাসেডর, অভিনেত্রী বা কোম্পানির প্রচারের স্বার্থে বিভিন্ন ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি বা মাল্টি ন্যাশনাল কোম্পানিতে পঙ্গপালের মতন ছুটতে থাকে। প্রায় প্রতিটা কর্মসংস্থানে নারীদের কোন না কোনভাবে নিজেকে আকর্ষণীয় করার আলাদা তাগাদা থাকে। এই ধরণের আলাদা প্রণোদনা দেবার জন্য বিভিন্ন পুঁজিবাদী ফ্যাশন প্রতিষ্ঠান, টিভি-পত্রিকায় পুঁজিপতিদের ভাড়াকৃত লাস্যময়ী ললনাদের পোশাক বড় ধরণের ভূমিকা পালন করে। আর মেধা বিকাশ বা অভিনয় শিল্পের নামে নারীর দেহকে যাচাই বাছাই করে বাজারজাতের উপযুক্ত করে অপরাপর নারীদের জন্য একটা স্ট্যান্ডার্ড হিসেবে দাড় করানো হয়। সুন্দরীতমা হওয়ার স্বপ্নে তরুণীরা বিভোর হয়ে থাকে।

 

যেটুকুই উল্লেখ করলাম বা করতে পারি নাই তার সবকিছুই কালের পরিক্রমায় স্বাভাবিক হয়ে প্রাকৃতিক চরিত্র ধারণ করেছে। এভাবে নারীর একান্তই নিজস্ব সত্তাটি বিলীন হয়ে যাচ্ছে। কয়েকটা আধুনিক যুক্তি এই পরিবেশ তৈরিতে বিশেষ ভূমিকা পালন করেছে

১—পুরুষরা করলে নারীরা করবে না কেন?

২—এইটাতো আমরা পেশা হিসেবে নিচ্ছি,

৩—এইটা সাহিত্য বা নন্দনতত্ত্বের দিক থেকে জরুরী,

৪—যৌনতা তো মানবজীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ,

৫—ভালোবাসার সবধরনের প্রকাশই নিঃশর্ত ভাবে পবিত্র,

৬—তোমার শরীরে যা আছে আমারও তাই; কাজেই বিচলিত না হয়ে শিল্প ও নন্দনতত্ত্বের দৃষ্টিতে উপলব্ধি করতে হবে,

৭—ধর্মে রসংস্পর্শ এড়িয়ে চলতে হবে,

৮—আমি তো শিল্পের প্রতি গভীর বোধ থেকেই নগ্ন হচ্ছি, চুমু খাচ্ছি…; খারাপ কোন মানসিকতা থেকে তো নয় ইত্যাদি।

এইভাবে পর্যায়ক্রমে আশ্চর্যজনক ভাবে একসময় পুরুষদের চয়েসই নারীর চয়েসে রুপান্তরিত হয়। নারী ঘুণাক্ষরেও টের পায় না যে, সে আসলে আধুনিক ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যবাদী লিবারাল পুঁজিবাদী পুরুষের মনোরঞ্জনই করে যাচ্ছে। এমনকি আধুনিকতার ছোঁয়ায় লিবারেল পুঁজিবাদ এমনভাবে নারীবাদকে আচ্ছন্ন করেছে যে, নারীর প্রকৃত এজেন্সি বিলুপ্ত হয়ে পশ্চিমা নারীদের চাপিয়ে দেওয়া এজেন্সিকে তার নিজের বলে মনে হচ্ছে। আধুনিক পুরুষের মনোবাসনাই তার আন্তরিক ইচ্ছায় রূপ নিচ্ছে।

 

তার মধ্যে বিপরীতধর্মী দুই রকম সত্ত্বার সংঘর্ষ চলছে অবিরাম। এক সত্ত্বা বলছে নারীপুরুষের যাবতীয় ভেদরেখা মিটিয়ে দিয়ে স্রেফ শিল্প ও নন্দনবোধ সম্পন্ন মানুষের সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে; অপর সত্ত্বা বলছে যে, না, নারীপুরুষ উভয়ে মানুষ হলেও নারী তো নারীই; পুরুষ তো পুরুষই। এই বৈচিত্র্য তো খোদাই দান করেছেন। সাথে এই প্রশ্নও জাগছে—শিল্পবোধ, নন্দনতত্ত্ব, সৌন্দর্য সুষমা বা স্রেফ বন্ধু কিংবা মানুষ হিশেবে নারী পুরুষকে বা পুরুষ নারীকে দেখতে চাইলেই যে মুহূর্তের মধ্যে এই বোধ ঐ বোধ চলে আসবে তার নিয়ন্ত্রণ কীভাবে হবে? আর যদি শিল্পের অনুভূতি না এসে যৌনানুভূতি চলে আসে? যদি এর লালিত স্পিরিট ও শ্লোগানের উল্টোটা হয়? এই হওয়াটা কি মানুষ হিসেবে অস্বাভাবিক? স্বাভাবিক মানুষ মূলত কী? এমনিভাবে কেউ যদি ইসলাম ধর্মের উপদেশ মেনে চলে এবং শিল্পবোধ, নন্দনতত্ত্ব বা বন্ধুত্ব এসব কিছুর ক্ষেত্রে শুধু আল্লাহ ও তাঁর নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আদেশ পালনের নিমিত্তে নির্ধারিত গণ্ডির ভিতরে অবস্থান করে ও বিপরীত লিঙ্গের সাথে খুব হিশেব করে প্রয়োজন ছাড়া না মেশে? তাকে অস্বাভাবিক বলা হবে কেন?

 

দোয়া করি, পশ্চিম আমাদের ভাই বোনদেরকে ফেমিনিজমের যে উত্তেজনার ভিতরে তুমুল বেগে প্রবিষ্ট করিয়ে দিয়েছে, সে উত্তেজনা থেকে তারা একটু সময়ের জন্য হলেও বেরিয়ে আসুন, এবং মানুষ হিসেবে খোদাপ্রদত্ত স্বভাবজাত বিবেচনা দিয়ে প্রশ্নগুলো নিয়ে একটু ভাবুন। আমি মনে করি সমাধানের জন্য এটুকুই যথেষ্ট হবে ইনশাআল্লাহ।

 

 

Facebook Comments

Previous Post

দ্যা ফোর্টি রোলস অফ লাভঃ সুফিবাদের ইউটোপিয়া। হুজাইফা মাহমুদ

Next Post

চলো, মুসাফির…। সাবের চৌধুরী

সাবের চৌধুরী

সাবের চৌধুরী

Related Posts

বাংলাদেশে ইসলামি নারীবাদের সাতকাহন | হুজাইফা মাহমুদ
চিন্তা ও মতবাদ

বাংলাদেশে ইসলামি নারীবাদের সাতকাহন | হুজাইফা মাহমুদ

October 29, 2022
প্রচলিত আন্তঃধর্মীয় সংলাপঃ পেছনের দৃশ্য । আব্দুল্লাহ বিন বশির
আকীদা

প্রচলিত আন্তঃধর্মীয় সংলাপঃ পেছনের দৃশ্য । আব্দুল্লাহ বিন বশির

May 14, 2022
Next Post
চলো, মুসাফির…। সাবের চৌধুরী

চলো, মুসাফির...। সাবের চৌধুরী

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

No Result
View All Result

Recent.

তাসাউফ সম্পর্কে অপপ্রচার ও ভ্রান্তি : একটি সংক্ষিপ্ত পর্যালোচনা ।। মাওলানা আনাস চৌধুরী

December 16, 2022
এই পৃথিবী একবার পায় তারে। সাবের চৌধুরী।

এই পৃথিবী একবার পায় তারে। সাবের চৌধুরী।

November 28, 2022

গামেদি চিন্তার মৌলিক ভ্রান্তি | শেষ পর্ব | মূল: মাওলানা ইয়াহয়া নোমানি | তরজমা: হুজাইফা মাহমুদ

November 16, 2022

গামেদি চিন্তার মৌলিক ভ্রান্তি—প্রথম পর্ব | মূল: মাওলানা ইয়াহয়া নোমানি | ভাষান্তর: হুজাইফা মাহমুদ

November 12, 2022
বাংলাদেশে ইসলামি নারীবাদের সাতকাহন | হুজাইফা মাহমুদ

বাংলাদেশে ইসলামি নারীবাদের সাতকাহন | হুজাইফা মাহমুদ

October 29, 2022

  • আমাদের সম্পর্কে
  • যোগাযোগ

সোশ্যাল নেটওয়ার্ক

No Result
View All Result
  • মূল পাতা
  • কুরআন
  • হাদীস
  • আকীদা
  • ফিকহ
  • ইবাদাত
  • সীরাত
  • তত্ত্ব ও পর্যালোচনা
  • চিন্তা ও মতবাদ
  • দেশ, সমাজ, সংস্কৃতি
  • বিশ্ব
  • বিজ্ঞান ও আধুনিকতা
  • অন্যান্য
    • নারী, শিশু, পরিবার
    • সুন্নত ও বিদআত
    • জিহাদ
    • রাজনীতি
    • আইন ও সংবিধান
    • শিক্ষা
    • প্রাচ্যবাদ
    • ইতিহাস
    • বিয়ে ও দাম্পত্য
    • ব্যক্তিত্ব ও সাক্ষাৎকার
    • শিল্প-সাহিত্য
    • গ্রন্থ-আলোচনা
    • আরবি ব্যাকরণ
    • উর্দু ব্যাকরণ
    • বিবিধ
    • পিডিএফ
    • নির্বাচিত লেখক-পরিচিতি
    • গুরুত্বপূর্ণ লিংক ও সাইটসমূহ

© 2020 রিওয়ায়াহ - Developed by Tijarah IT Limited.