Riwayahbd
  • মূল পাতা
  • কুরআন
  • হাদীস
  • আকীদা
  • ফিকহ
  • ইবাদাত
  • সীরাত
  • তত্ত্ব ও পর্যালোচনা
  • চিন্তা ও মতবাদ
  • দেশ, সমাজ, সংস্কৃতি
  • বিশ্ব
  • বিজ্ঞান ও আধুনিকতা
  • অন্যান্য
    • নারী, শিশু, পরিবার
    • সুন্নত ও বিদআত
    • জিহাদ
    • রাজনীতি
    • আইন ও সংবিধান
    • শিক্ষা
    • প্রাচ্যবাদ
    • ইতিহাস
    • বিয়ে ও দাম্পত্য
    • ব্যক্তিত্ব ও সাক্ষাৎকার
    • শিল্প-সাহিত্য
    • গ্রন্থ-আলোচনা
    • আরবি ব্যাকরণ
    • উর্দু ব্যাকরণ
    • বিবিধ
    • পিডিএফ
    • নির্বাচিত লেখক-পরিচিতি
    • গুরুত্বপূর্ণ লিংক ও সাইটসমূহ
  • মূল পাতা
  • কুরআন
  • হাদীস
  • আকীদা
  • ফিকহ
  • ইবাদাত
  • সীরাত
  • তত্ত্ব ও পর্যালোচনা
  • চিন্তা ও মতবাদ
  • দেশ, সমাজ, সংস্কৃতি
  • বিশ্ব
  • বিজ্ঞান ও আধুনিকতা
  • অন্যান্য
    • নারী, শিশু, পরিবার
    • সুন্নত ও বিদআত
    • জিহাদ
    • রাজনীতি
    • আইন ও সংবিধান
    • শিক্ষা
    • প্রাচ্যবাদ
    • ইতিহাস
    • বিয়ে ও দাম্পত্য
    • ব্যক্তিত্ব ও সাক্ষাৎকার
    • শিল্প-সাহিত্য
    • গ্রন্থ-আলোচনা
    • আরবি ব্যাকরণ
    • উর্দু ব্যাকরণ
    • বিবিধ
    • পিডিএফ
    • নির্বাচিত লেখক-পরিচিতি
    • গুরুত্বপূর্ণ লিংক ও সাইটসমূহ
No Result
View All Result
Riwayahbd
No Result
View All Result

খারেজিদের সাথে ইবনে আব্বাস রা. এর বিতর্ক : বিতর্ক বিষয়ক কিছু গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা । আলি সাল্লাবি। অনুবাদ : সাবের চৌধুরী

by সাবের চৌধুরী
February 3, 2021
1 min read
0
খারেজিদের সাথে ইবনে আব্বাস রা. এর বিতর্ক : বিতর্ক বিষয়ক কিছু গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা । আলি সাল্লাবি। অনুবাদ : সাবের চৌধুরী
97
SHARES
745
VIEWS
Share on FacebookShare on Twitter

সিফফীন থেকে কুফায় ফেরার পথে কয়েক ক্রোশ দূরে থাকতেই খারেজীরা বড়সর একটি দলে ভাগ হয়ে আলী রা. এর বাহিনী থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেল। ১০ থেকে ১৪ হাজার ছিল তাদের সংখ্যা। তারা আলাদা হয়ে যাওয়াতে সৈন্যদলের ভেতর একটা বিষণ্ণতা ছেয়ে গেল। এটা ছিল তাদের জন্য বেশ বড়সর একটি ধাক্কার মতো। আলী রা. তাঁর অনুগত বাকী মুসলমানদেরকে নিয়ে কূফায় ফিরে এলেন।

ফিরে আসার পর তিনি খারেজীদের ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে তৎপর হলেন, বিশেষ করে যখন শুনতে পেলেন তারা রীতিমতো দল গঠন করে সংঘবদ্ধ হয়ে গেছে। তারা নামাজের জন্য একজন ও যুদ্ধের জন্য একজন—এভাবে আলাদা আলাদা দুই জন ইমাম নির্বাচন করেছে এবং জোরেশোরে প্রচার করতে শুরু করেছে : বাইআত, সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজের নিষেধ কেবল আল্লাহ তাআলার জন্য হতে পারে। এসব কিছু দ্বারা পরিস্কার বুঝা যায় তারা এখন মুসলমানদের থেকে সম্পূর্ণ আলাদা একটি দল।

আলী রা. মনে প্রাণে চাচ্ছিলেন তারা মুসলমানদের মাঝে ফিরে আসুক। এ জন্য আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা.কে তাদের সাথে যুক্তিতর্ক করতে পাঠালেন। ইবনে আব্বাস রা. সে ঘটনাটি নিজেই বর্ণনা করেছেন :

“… এরপর আমি খুব চমৎকার ইয়ামেনি জামা গায়ে দিলাম, সুন্দর করে চুল আঁচড়ালাম, এরপর তাদের এলাকায় গিযে পোঁছুলাম। আমি যখন একটি বাড়িতে তাদের কাছে গিযে উপস্থিত হই, তখন মধ্য দুপুর।

ইবনে আব্বাস রা. ছিলেন খুবই সুন্দর সুপুরুষ ছিলেন। তাকে দেখা মাত্র তারা বললো :

  • ইবনে আব্বাস, আমাদের অভিবাদন গ্রহণ করুন। আর, এতো দামি কাপড়চোপড় পরেছেন যে!!
  • সমস্যাটা কোথায়? আমি নিজে নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাহি ওয়াসাল্লামকে সবচেয়ে সুন্দর জামা পরতে দেখেছি। এই সূত্রেই কুরআনুল কারীমের এই আয়াতটি অবতীর্ণ হয়েছে : হে নবী, আপনি বলুন : আল্লাহ তাআলা তার বান্দাদের জন্য যে সাজসজ্জা ও উত্তম খাবার উৎপন্ন করেছেন, সেসব কে হারাম করলো? (আল আরাফ : ৩২)
  • কেন এসেছেন?
  • আমি নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মুহাজির ও আনসার সাহাবীদের নিকট থেকে এসেছি, তাঁর চাচাত ভাই ও জামাতার নিকট থেকে এসেছি, তোমাদের কাছে। শোনো, কুরআনুল কারীম অবতীর্ণ হয়েছিল তাদের উপস্থিতিতেই, তাদের উপরেই এবং তাদের একজনও তোমাদের সাথে নেই। এসেছি, যেন তোমাদের কথা তাদের কাছে, এবং তাদের কথা তোমাদের কাছে পোঁছে দিতে পারি।

তখন তাদের মধ্য থেকে কিছু মানুষ আমার সাথে কথোপকথনে এলো।

আমি বললাম : নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের চাচাত ভাই ও তাঁর সাহাবীদের ব্যাপারে তোমাদের অভিযোগগুলো কী?

তারা বললো : তিনটি।

আমি বললাম : কী কী?

তারা বললো : প্রথমটি হলো—যে বিষয়ে আল্লাহ তাআলা সিদ্ধান্ত দেওয়ার কথা, সে বিষয়ে তিনি মানুষকে সিদ্ধান্তদাতা হিসেবে মেনে নিয়েছেন। অথচ, আল্লাহ তাআলা বলেছেন : ফায়সালার মালিক একমাত্র আল্লাহ। বলুন, মানুষ ফায়সালা দেওয়ার কে?

আমি বললাম : এটা একটা। এবার দ্বীতিয়টা বলো।

তারা বললো : তিনি যুদ্ধ করেছেন, কিন্তু যুদ্ধ শেষে শত্রুদেরকে বন্দি করেননি, তাদের সম্পদকে গণীমত হিসেবেও গ্রহণ করেননি। তারা যদি কাফের হয়ে থাকে, তাহলে তাদেরকে বন্দি করা বৈধ ছিল; আর যদি মুমিন হয়ে থাকে, তাহলে তাদেরকে বন্দি করা যেমন বৈধ ছিল না, যুদ্ধ করাও তো বৈধ ছিল না।

আমি বললাম : তিন নাম্বারটা কী?

তারা বললো : তিনি নিজের নাম থেকে ‘আমিরুল মুমিনীন’ অংশ মুছে দিয়েছেন। তিনি যদি আমিরুল মুমিনীন না হোন তাহলে আমিরুল কাফিরীন (কাফেরদের সর্দার) হবেন।

আমি বললাম : আর কোন অভিযোগ আছে?

তারা বললো : এই তিনটাই যথেষ্ট।

আমি বললাম : এবার বলো, আমি যদি কুরআনুল কারীম ও নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নাহ থেকে এমন দলীল হাজির করি, যা তোমাদের অভিযোগগুলোকে রদ করে দেয়, তোমরা কি ফিরে আসবে?

তারা বললো : হ্যাঁ, তা তো অবশ্যই।

আমি বললাম : প্রথমত তোমরা যে বললে—তিনি আল্লাহ তাআলা ফায়সালা করার কথা এমন একটি বিষয়ে মানুষকে সিদ্ধান্তদাতা হিসেবে মেনে নিয়েছেন, এখন আমি তোমাদেরকে দেখাচ্ছি—স্বয়ং করআনুল কারীমে আল্লাহ তাআলা নিজে তার একটি বিষয়ে মানুষকে সিদ্ধান্তদাতা হিসেবে দায়িত্ব দিচ্ছেন। সিদ্ধান্তটি হলো এক দিরহামের এক চতুর্থাংশের মূল্য নিয়ে। দেখো আল্লাহ তাআলা কী বলছেন—“হে ঈমানদারগণ, তোমরা ইহরাম পরা অবস্থায় শিকারকে বধ করো না, এবং তোমাদের মধ্যে যে ইচ্ছা করে একে বধ করবে, প্রতিবিধান হিসেবে সে যা হত্যা করেছে, তার সমপরিমাণ একটি নাআম দিবে। এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত দিবে তোমাদের মধ্য থেকে দুইজন বিশ্বস্ত ইনসাফওয়ালা মানুষ।” এই যে, এখানে তো মানুষের সিদ্ধান্ত দেওয়ার কথা বলা হচ্ছে!

আল্লাহর দোহাই দিয়ে বলছি, বলো, একটি খরগোশের ব্যাপারে মানুষ ফায়সালা করা উত্তম, নাকি এর চেয়ে অনেক উত্তম হলো দুই দলের বিবাদ মিটিয়ে তাদের রক্তপাত বন্ধ করার ফায়সালা করা?

তারা বললো : অবশ্যই দ্বিতীয়টি অনেক উত্তম।

আমি বললাম : শুধু তাই না; স্বামী স্ত্রীর ক্ষেত্রেও এমনটি করা হয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলছেন : “আর যদি তোমরা মনে করো তাদের মধ্যে মনোমালিন্য হবে, তাহলে তার পরিবার থেকে একজন ও অপরজনের পরিবার থেকে একজন বিচারক প্রেরণ করো” ( আল আহযাব:৬)।

সুতরাং, তোমরা দুটো ভ্রান্তির মাঝখানে পড়ে গেছো। এ থেকে মুক্তির কোন উপায় জানা আছে তোমাদের? থাকলে সেটা আনো তো! বলো, এ অভিযোগ কি উঠিয়ে নিচ্ছো?

তারা বললো : হ্যাঁ।

আমি আবার বললাম : তোমরা যে বললে তিনি তাদেরকে বন্দি করেননি, তাদের সম্পদসমূহকে গণীমত হিসেবেও গ্রহণ করেননি, বলো তো, তোমরা কি তোমাদের মাতা আয়েশা রা.কে বন্দি করতে চাও! অন্য সাধারণ দাসীর সাথে যে বিষয়গুলো বৈধ মানো, তার সাথেও এরকম করাকে বৈধ বলতে চাও? অথচ তিনি তোমাদের মা! যদি বলো—‘হ্যাঁ, আমরা তার সাথেও সেরূপ করা বৈধ মনে করি’, তাহলে তোমরা কাফের হয়ে যাবে। আবার যদি বলো, আমরা তাকে মা বলে মানি না, তাহলেও কাফের হয়ে যাবে। কারণ, আল্লাহ তাআলা বলেছেন—নবী মুমিনদের নিকট তাদের প্রাণের চেযেও অধিক মূল্যবান এবং তার স্ত্রীগণ তাদের মাতা (আল আহযাব : ৬)।

সুতরাং, দেখতেই পাচ্ছো—এখানেও তোমারা দুটি বিভ্রান্তির মাঝে পড়ে আছো। এ থেকে তোমাদের মুক্তির উপায় কী?

বলো, এই অভিযোগটিও কি উঠিয়ে নিচ্ছো?

তারা বললো : হ্যাঁ।

এরপর তিনি তাদেরকে বললেন : এবার তোমরা তিন নাম্বারে যে অভিযোগটি করলে—তিনি নিজের নাম থেকে ‘আমিরুল মুমিনিন’ মুছে দিয়েছেন, তো, আমি একটি প্রমাণ নিয়ে আসছি। এটি তোমাদের অভিযোগকে অসার বলে প্রমাণিত করবে।

তোমরা তো জানো, হুদাইবিয়ার দিনে নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুশরিকদের সাথে সন্ধি করেছিলেন। সে সময় তিনি আলী রা.কে নির্দেশ দিয়ে বলেছিলেন : ‘আলী, লেখো—এ হলো চুক্তিপত্র, এর উপরই আল্লাহর রাসূল মুহাম্মদ সন্ধি করেছেন’। এটা লেখার পর মুশরিকরা আপত্তি জানিয়ে বলেছিল : এটা লেখা যাবে না। কারণ, আমরা যদি আপনাকে আল্লাহর রাসূল বলে বিশ্বাস করতাম, তাহলে তো আপনার সাথে যুদ্ধ করতেই আসতাম না।

তখন নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন : আলী, কথাটি মুছে দাও; ইয়া আল্লাহ, আপনি তো জানেন আমি আল্লাহর রাসূল; আলী, এটা মুছে দিয়ে লেখো—এই হলো চুক্তিপত্র, যার উপর আবদুল্লাহর ছেলে মুহাম্মদ সন্ধি করেছে।

আল্লাহর কসম, আলী থেকে আল্লাহর রাসূল অবশ্যই উত্তম ছিলেন; অথচ, তিনি নিজেই নিজের ‘রাসূল’ পরিচয়টি মুছতে বলছেন, এবং এখান থেকে মুছে ফেলার অর্থ ‘নবুওয়াত’ থেকে মুছে ফেলা ছিল না।

এবার বলো, তোমরা কি এই অভিযোগটিও উঠিয়ে নিচ্ছো?

তারা বললো : হ্যাঁ।

এরপর দুই হাজার খারেজি ইবনে আব্বাস রা. এর সাথে একাত্মতা পোষণ করে মুসলমানদের মাঝে ফিরে এলো; কিন্তু বাকিরা তাদের বিভ্রান্তিতে গোঁ ধরে অবিচল হয়ে রইলো এবং এই বিভ্রান্তির উপর থেকেই তারা সাহাবায়ে কেরামের সাথে যুদ্ধে লিপ্ত হলো। মুহাজির ও আনসার সাহাবীগণ তাদেরকে হত্যা করলেন।

( ইমাম নাসাঈকৃত  খাসায়িসু আমিরিল মুমিনীন আলী ইবনে আবি তালিব, পৃষ্ঠা : ২০০, বর্ণনার সূত্র ‘হাসান’)

.

 

আামরা চাইলে খারেজিদের সাথে ইবনে আব্বাস রা. এর এই বিতর্কটি থেকে অনেকগুলো সূক্ষ্ম দিক ও চমৎকার কিছু শিক্ষা খুঁজে বের করতে পারি। যেমন :

১.
বিরোধী পক্ষের সাথে বিতর্ক করার জন্য সবচেয়ে যোগ্য ব্যক্তিটিকে খুঁজে বের করা। এই ঘটনায় আমরা দেখি আলী রা. তাঁর চাচাত ভাই আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা.কে নির্বাচন করেছেন। কারণ, তিনি ছিলেন এই উম্মতের জ্ঞানসমূদ্র, কুরআনুল কারীমের সুনিপুন ব্যখ্যাকার। আর, মানুষ কুরআনের বিশেষ অধ্যয়ণকারীদেরকে মর্যাদা দেয় এবং কুরআনের ব্যাপারে তাদের বিশ্বাসের কোন বিষয়ে কিছু প্রমাণ করতে গেলে তাদের কথার উপর নির্ভর করে। সুতরাং কুরআনের পাঠ ও ব্যাখ্যায় সবচেযে বেশি বিশেষজ্ঞ লোকটিই তাদের সাথে বিতর্কের জন্য অধিক উপযুক্ত ছিলেন। তো, আমরা বলতে পারি ইবনে আব্বাসই ছিলেন সে ব্যক্তিটি। কারণ, তিনি একদিকে ছিলেন আল্লাহর জন্য নিষ্ঠ ও নিবিষ্ট, প্রবৃত্তির দাসত্ব থেকে মুক্ত, ধৈর্য ও সহনশীলতায় অনন্য; অপরদিকে তিনি প্রতিপক্ষের সাথে খুব ঠাণ্ডা মাথায় সুন্দর আচরণ দিয়ে কথা বলতে পারতেন, প্রতিপক্ষের সকল কথা অত্যন্ত মনোযোগ দিয়ে শুনতেন, অযথা তর্কে  লিপ্ত হতেন না,  এবং তাঁর ছিল সুস্পষ্টরূপে প্রমাণ হাজির করা ও তা খুলে খুলে উপস্থান করার অসাধারণ এক শক্তি।

২.
উভয় পক্ষই মান্য করে—এমন একটি পয়েন্ট দিয়ে প্রতিপক্ষের সাথে বিতর্কটি সূচনা করা। এখানে আমরা দেখি আলী রা. ও তার প্রতিপক্ষ—উভয় দলই কুরআন সুন্নাহকে শেষ কথা হিসেবে মান্য করেন। এ জন্যই ইবনে আব্বাস রা. তাদেরকে বলতে পেরেছিলেন—আমি যদি কুরআন সুন্নাহ থেকে এমন প্রমাণ নিয়ে আসি, যা তোমাদের অভিযোগকে রদ করে দেয়, তোমরা কি ফিরে আসবে? তো, প্রতিপক্ষ যে কুরআন সুন্নাহকে ফায়সালাকারী হিসেবে মান্য করে—তা জানা থাকা সত্তেও বিতর্ক শুরুর আগে স্পষ্ট শব্দে তাদের থেকে সে স্বীকারোক্তি নিয়ে নিয়েছিলেন।

৩.
এই ঘটনা থেকে আরো একটি শিক্ষা হলো—প্রতিপক্ষের সবগুলো অভিযোগ ও দলীল পরিপূর্ণরূপে জেনে নেওয়া। আমরা ধরে নিচ্ছি আমিরুল মুমিনীন আলী রা. বিতর্কে পাঠানোর আগেই তাদের দলীলগুলোর ব্যাপারে জানতেন, এবং এগুলোকে কীভাবে রদ করতে হয়—সাথীদেরকে সেসবের তালীম দিয়ে রেখেছিলেন।

৪.
প্রতিপক্ষের ধারণা ও অভিযোগ-আপত্তিগুলোকে সুশৃঙ্খলভাবে পর্যায়ক্রমে একের পর এক খণ্ডন করে যাওয়া, যেন তাদের কোন কিছু আর বলার না থাকে। এখানেও আমরা এটিই ঘটতে দেখেছি। ইবনে আব্বাস রা. তাদের প্রত্যেকটা অভিযোগ খণ্ডন করার পর জিজ্ঞেস করছেন: তোমরা কি এ অভিযোগটি উঠিয়ে নিচ্ছ?

৫.
বিতর্কের শুরুতেই এমন কিছু বিষয় সামনে নিয়ে আসা, যেগুলো এই বিতর্কের ফলাফলকে সত্যের পক্ষে নিয়ে যেতে ভূমিকা রাখবে। আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. বিতর্ক শুরু হওয়ার আগেই আলাপ-আলোচনার সূচনাতে বলে রেখেছিলেন: আমি তোমাদের কাছে এসেছি নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাহাবা ও তার জামাতার নিকট থেকে এসেছি, এবং মনে রেখো কুরআন অবতীর্ণ হয়েছিল তাদের উপরই, এর ব্যাখ্যার ব্যাপারে তারাই তোমাদের চেয়ে বেশি জ্ঞাত, এবং তাদের একজনও তোমাদের সাথে নেই।

৬.
বিতর্ক চলাকালীন প্রতিপক্ষের মতামতের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা, যেন প্রতিপক্ষের লোকজন তার কথাগুলো মনোযোগ দিয়ে শুনতে ও তার মতামতকেও শ্রদ্ধা করতে উৎসাহিত হয়। খারেজিদের সাথে ইবনে আব্বাস রা. এর বিতর্কের ঘটনাটিতে এ বিষয়টি ফোটে উঠেছে।

৭.
এই সুন্দর বিতর্কটির মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা হাজার হাজার খারেজিকে সত্য পথে ফিরে আসার তাওফিক দিয়েছিলেন। কারণ, আমরা দেখেছি পরবর্তী নাহরাওয়ান যুদ্ধে মাত্র চার হাজার খারেজি উপস্থিত ছিল। এটা এ কারণেই যে, এর মাধ্যমে তারা সত্যকে চিনতে পেরেছিল এবং আল্লাহ তাআলার অনুগ্রহে তাদের সন্দেহ দূর হয়ে গিয়েছিল। এই ফিরে আসার পথে বিশেষ উসিলা ছিল আল্লাহ তাআলা ইবনে আব্বাস রা.কে যে গভীর জ্ঞান, প্রজ্ঞা, প্রমাণ উপস্থাপনের অসাধারণ শক্তি এবং চমৎকার বাগ্মীতা দান করেছিলেন সে বিষয়গুলো। এ কারণেই তিনি যখন তাদের বিকৃত করা আয়াতগুলোর সঠিক ব্যাখ্যা দিয়েছেন, হাদীস পেশ করেছেন এবং কুরআনুল কারীমের মর্মকে সুস্পষ্টকারী যুক্তিগুলো দেখিয়েছেন, তখন তাদের সামনে অভিযোগ ও প্রমাণাদির অসারতা দিনের আলোর মতো পরিস্কার হয়ে গিয়েছে।

৮.
এই বিতর্কটি থেকে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ জিনিস পাওয়া যায়—ইবনে আব্বাস রা. তাদেরকে বলেছেন : ‘তোমাদের সাথে সাহাবাদের একজনও নেই।’ বিতর্কের এই ঘটনার বিবরণটি বিশুদ্ধ ও প্রমাণিত।

তো, এ কথার দ্বারা ইবনে আব্বাস রা. একদম পরিস্কার করে দিলেন খারেজিদের সাথে একজন সাহাবীও ছিলেন না এবং খারেজিরাও কিন্তু এ কথার কোন প্রতিবাদ জানায়নি। এমনিভাবে আমার জানামতে আহলুসসুন্নাহ ওয়াল জামাআতের একজন আলেমও এমন নেই, যিনি বলেন যে, খারেজিদের সাথে সাহাবাদের কেউ কেউও ছিলেন। সাহাবাদের কেউ কেউ তাদের সাথে ছিলেন বলে যেটা ধারণা করা হয়, সেটা আমাদের আকীদা নয়; খারেজি মাজহাবের দাবি এবং এই দাবির সপক্ষে তাদর কাছে গ্রহণযোগ্য একাডেমিক কোন প্রমাণ নেই।

৯.
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট হলো—উভয় পক্ষ মান্য করে এমন একটি মূল কেন্দ্র স্থির করে নেওয়া, যেখানে এসে বিতর্কটি একটি সুন্দর মিমাংসা ও সমাপ্তি লাভ করতে পারে। এ জন্যই দেখা যায় ইবনে আব্বাস রা. তাদেরকে শুরুতেই বলে নিচ্ছেন—আমি যদি কুরআন ও সুন্নাহ থেকে এমন প্রমাণ হাজির করতে পারি, যা তোমাদের অভিযোগগুলোকে রদ করে দেয়, তোমরা কি তা মেনে নিয়ে ফিরে আসবে?

 

=========

সূত্র
সীরাতু আমিরিল মুমিনীনি আলী ইবনে আবি তালিব রা.
পৃষ্ঠা ৫৫৫-৫৫৮
লেখক : আলি [সাল্লাবি।
ভাষা : আরবি।
প্রকাশক : মুআসসাসাতু ইকরা, jকায়রো, মিশর।
প্রকাশকাল : ২০০৫ ঈ.
সংস্করণ : প্রথম সংস্করণ

Facebook Comments

Previous Post

নবীজির বিনয় । ওমর আলফারুক

Next Post

কাদিয়ানি ধর্ম : পরিচয় সূচনা ও বিকাশ । সাবের চৌধুরী

সাবের চৌধুরী

সাবের চৌধুরী

Related Posts

বাংলাদেশে ইসলামি নারীবাদের সাতকাহন | হুজাইফা মাহমুদ
চিন্তা ও মতবাদ

বাংলাদেশে ইসলামি নারীবাদের সাতকাহন | হুজাইফা মাহমুদ

October 29, 2022
প্রচলিত আন্তঃধর্মীয় সংলাপঃ পেছনের দৃশ্য । আব্দুল্লাহ বিন বশির
আকীদা

প্রচলিত আন্তঃধর্মীয় সংলাপঃ পেছনের দৃশ্য । আব্দুল্লাহ বিন বশির

May 14, 2022
Next Post
কাদিয়ানি ধর্ম : পরিচয় সূচনা ও বিকাশ । সাবের চৌধুরী

কাদিয়ানি ধর্ম : পরিচয় সূচনা ও বিকাশ । সাবের চৌধুরী

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

No Result
View All Result

Recent.

তাসাউফ সম্পর্কে অপপ্রচার ও ভ্রান্তি : একটি সংক্ষিপ্ত পর্যালোচনা ।। মাওলানা আনাস চৌধুরী

December 16, 2022
এই পৃথিবী একবার পায় তারে। সাবের চৌধুরী।

এই পৃথিবী একবার পায় তারে। সাবের চৌধুরী।

November 28, 2022

গামেদি চিন্তার মৌলিক ভ্রান্তি | শেষ পর্ব | মূল: মাওলানা ইয়াহয়া নোমানি | তরজমা: হুজাইফা মাহমুদ

November 16, 2022

গামেদি চিন্তার মৌলিক ভ্রান্তি—প্রথম পর্ব | মূল: মাওলানা ইয়াহয়া নোমানি | ভাষান্তর: হুজাইফা মাহমুদ

November 12, 2022
বাংলাদেশে ইসলামি নারীবাদের সাতকাহন | হুজাইফা মাহমুদ

বাংলাদেশে ইসলামি নারীবাদের সাতকাহন | হুজাইফা মাহমুদ

October 29, 2022

  • আমাদের সম্পর্কে
  • যোগাযোগ

সোশ্যাল নেটওয়ার্ক

No Result
View All Result
  • মূল পাতা
  • কুরআন
  • হাদীস
  • আকীদা
  • ফিকহ
  • ইবাদাত
  • সীরাত
  • তত্ত্ব ও পর্যালোচনা
  • চিন্তা ও মতবাদ
  • দেশ, সমাজ, সংস্কৃতি
  • বিশ্ব
  • বিজ্ঞান ও আধুনিকতা
  • অন্যান্য
    • নারী, শিশু, পরিবার
    • সুন্নত ও বিদআত
    • জিহাদ
    • রাজনীতি
    • আইন ও সংবিধান
    • শিক্ষা
    • প্রাচ্যবাদ
    • ইতিহাস
    • বিয়ে ও দাম্পত্য
    • ব্যক্তিত্ব ও সাক্ষাৎকার
    • শিল্প-সাহিত্য
    • গ্রন্থ-আলোচনা
    • আরবি ব্যাকরণ
    • উর্দু ব্যাকরণ
    • বিবিধ
    • পিডিএফ
    • নির্বাচিত লেখক-পরিচিতি
    • গুরুত্বপূর্ণ লিংক ও সাইটসমূহ

© 2020 রিওয়ায়াহ - Developed by Tijarah IT Limited.