Riwayahbd
  • মূল পাতা
  • কুরআন
  • হাদীস
  • আকীদা
  • ফিকহ
  • ইবাদাত
  • সীরাত
  • তত্ত্ব ও পর্যালোচনা
  • চিন্তা ও মতবাদ
  • দেশ, সমাজ, সংস্কৃতি
  • বিশ্ব
  • বিজ্ঞান ও আধুনিকতা
  • অন্যান্য
    • নারী, শিশু, পরিবার
    • সুন্নত ও বিদআত
    • জিহাদ
    • রাজনীতি
    • আইন ও সংবিধান
    • শিক্ষা
    • প্রাচ্যবাদ
    • ইতিহাস
    • বিয়ে ও দাম্পত্য
    • ব্যক্তিত্ব ও সাক্ষাৎকার
    • শিল্প-সাহিত্য
    • গ্রন্থ-আলোচনা
    • আরবি ব্যাকরণ
    • উর্দু ব্যাকরণ
    • বিবিধ
    • পিডিএফ
    • নির্বাচিত লেখক-পরিচিতি
    • গুরুত্বপূর্ণ লিংক ও সাইটসমূহ
  • মূল পাতা
  • কুরআন
  • হাদীস
  • আকীদা
  • ফিকহ
  • ইবাদাত
  • সীরাত
  • তত্ত্ব ও পর্যালোচনা
  • চিন্তা ও মতবাদ
  • দেশ, সমাজ, সংস্কৃতি
  • বিশ্ব
  • বিজ্ঞান ও আধুনিকতা
  • অন্যান্য
    • নারী, শিশু, পরিবার
    • সুন্নত ও বিদআত
    • জিহাদ
    • রাজনীতি
    • আইন ও সংবিধান
    • শিক্ষা
    • প্রাচ্যবাদ
    • ইতিহাস
    • বিয়ে ও দাম্পত্য
    • ব্যক্তিত্ব ও সাক্ষাৎকার
    • শিল্প-সাহিত্য
    • গ্রন্থ-আলোচনা
    • আরবি ব্যাকরণ
    • উর্দু ব্যাকরণ
    • বিবিধ
    • পিডিএফ
    • নির্বাচিত লেখক-পরিচিতি
    • গুরুত্বপূর্ণ লিংক ও সাইটসমূহ
No Result
View All Result
Riwayahbd
No Result
View All Result

সম্পদ ও সম্পদ সংরক্ষণ: ইসলাম যেভাবে মূল্যায়ন করে। আনাস চৌধুরী

by আনাস চৌধুরী
May 30, 2022
1 min read
0
সম্পদ ও সম্পদ সংরক্ষণ: ইসলাম যেভাবে মূল্যায়ন করে। আনাস চৌধুরী
48
SHARES
367
VIEWS
Share on FacebookShare on Twitter

ধন সম্পদ মানুষের জীবনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। সম্পদ চাই কম হোক বা বেশি, সবার জন্যেই অতীব গুরুত্বপূর্ণ বস্তু। মানুষ একে অবলম্বন করে জীবন ধারণ করে। দৈনন্দিন জীবনকে করে সহজ ও স্বাচ্ছন্দপূর্ণ। অন্যদিকে পৃথিবীতে ঘটমান অধিকাংশ অপরাধ জুলুম ও নৈরাজ্যের পেছনে এ সম্পদকেই দায়ী করা হয়।

ধন-সম্পদের স্বরূপ কী? একজন মানুষ জীবনে একে কিভাবে মূল্যায়ন করবে? এ ব্যাপারে পৃথিবীতে বিভিন্ন দর্শন ও মতবাদ রয়েছে। বহু দার্শনিক সমাজবিজ্ঞানী  নিজেদের বক্তব্য তুলে ধরেছেন। এভাবে সম্পদ সম্পর্কে বিপরীতমুখী অনেক দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি হয়েছে।

কিন্তু একজন বিশ্বাসী মুসলিমের কাছে ওহির জ্ঞান বর্জিত নিছক মানব মস্তিষ্কপ্রসূত দর্শন ও মতবাদ সামান্যই গুরুত্ব রাখে। কেননা সঠিক জ্ঞান অর্জনের সর্বোচ্চ বিশ্বস্ত উৎস ও মাধ্যম হচ্ছে, আল্লাহ পাকের পক্ষ থেকে নবী-রাসুলদের উপর অবতীর্ণ ওহী, যা নির্ভুল, চূড়ান্ত ও শ্বাশ্বত। ফলে মুসলিম হিসেবে একজন মানুষ পরম যত্নের সাথে অনুসন্ধান করে থাকেন, সংশ্লিষ্ট বিষয়ে সর্বশেষ ওহী তথা কোরআন ও হাদিসের বক্তব্য ও নির্দেশনা কী?

মূল বিষয়ে যাওয়ার যাওয়ার আগে একটি ভূমিকা বর্ণনা করা প্রয়োজন। কোরআন ও হাদিসের বক্তব্য হচ্ছে, মানুষকে এ পৃথিবীতে একটি মহৎ উদ্দেশ্য দিয়ে পাঠানো হয়েছে। (সূরা মুমিনুন:১১৫, হুদ:০৭) মানব সৃষ্টির সর্বোচ্চ এ লক্ষ্যটি হল, আল্লাহর জমিনে মানুষ মহান রবের অনুগত বান্দা হয়ে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে তাঁর নির্দেশনা মাফিক চলবে। ( যারিয়াত:৫৬) এভাবে মহান প্রতিপালকের সন্তুষ্টি অর্জন করে পরকালে জাহান্নামের শাস্তি থেকে মুক্তি লাভ করবে। আর চিরস্থায়ী জান্নাতে প্রবেশ করে চূড়ান্ত সফলতা অর্জন করবে। (সূরা আলে ইমরান: ১৮৫)

যেহেতু সম্পদ মানুষের জীবনের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত, তাই বিভিন্ন প্রসঙ্গে কোরআন ও হাদিসে সম্পদের কথা বারবার আলোচিত হয়েছে। সম্পদ সম্পর্কে কোরআন ও হাদীসের মূল বক্তব্যটি আমরা এখানে পত্রস্থ করছি।

১. ইসলামী দৃষ্টিভংগি অনুযায়ী সম্পদ ও সম্পদ অর্জন করা মানুষের জীবনের পরম কাংখিত কোন লক্ষ্য নয়। ফলে সম্পদ থাকা বা না থাকার সাথে একজন মানুষের সম্মান সফলতা ও মুক্তি কোনটাই নির্ভরশীল নয়।

وَمَا يُغْنِي عَنْهُ مَالُهُ إِذَا تَرَدَّى

“আর যখন সে ধ্বংস গহবরে পতিত হবে তখন তার সম্পদ তার কোন কাজে আসবে না। (সূরা লাইল:১১)

বরং সম্পদ হচ্ছে, ক্ষনস্থায়ী পৃথিবীতে বেঁচে থাকা ও জীবন ধারণ করার একটি উপকরণ ও মাধ্যম মাত্র। সূরা নিসায় সম্পদের এ স্বরুপটি নিম্নোক্ত শব্দে ব্যক্ত করা হয়েছে,

وَلَا تُؤْتُوا السُّفَهَاءَ أَمْوَالَكُمُ الَّتِي جَعَلَ اللَّهُ لَكُمْ قِيَامًا

“অবুঝদের হাতে তোমরা নিজেদের সেই সম্পদ অর্পণ করো না যাকে আল্লাহ তোমাদের জীবনের অবলম্বন বানিয়েছেন” (আয়াত:৫)

অপরদিকে পরকালের প্রতি যারা বিশ্বাস রাখে না, যাদের ধ্যান-জ্ঞান, পুরো জীবনের বিরামহীন সাধনা ও পরিশ্রম, সবকিছুই আবর্তিত হয় ইহজগতকে কেন্দ্র করে, সেই বস্তুবাদী ধারণায় সম্পদ  জীবন ধারণের শুধু উপকরণ ও মাধ্যম নয়, সম্পদ হচ্ছে তাদের কাছে পরম প্রার্থিত বস্তু এবং মহান একটি লক্ষ-টার্গেট। ফলে স্বাভাবিকভাবেই তাদের নিকট একজন মানুষের সফলতা ও ব্যর্থতা সম্মান ও অসম্মানের বিষয়টি তার সম্পদের সাথে গভীরভাবে জড়িত। এজন্য তারা সম্পদ অর্জনে সীমাহীন প্রতিযোগিতা করে থাকে এবং সম্পদকে ভালোবাসে গভীরভাবে।  কোরআনুল কারিম বিভিন্ন আয়াতে সম্পদ সম্পর্কে এই মনোভাবগুলোর নিন্দা করেছে। কয়েকটি আয়াত লক্ষ্য করুন।

أَلْهَاكُمُ التَّكَاثُرُ  حَتَّى زُرْتُمُ الْمَقَابِرَ

” (পার্থিব ভোগ সামগ্রীতে) একে অন্যের উপর আধিক্য লাভের বাসনা তোমাদের উদাসীন করে রাখে। যতক্ষন না তোমরা কবরস্থানে পৌঁছ।” (তাকাসুর:১-২)

وَتُحِبُّونَ الْمَالَ حُبًّا جَمًّا (20) كَلَّا

আর তোমরা ধন সম্পদকে সীমাতিরিক্ত ভালোবাস। কিছুতেই এরুপ সমীচীন নয়। (সূরা ফজর:২০-২১)

وَيْلٌ لِكُلِّ هُمَزَةٍ لُمَزَةٍ (1) الَّذِي جَمَعَ مَالًا وَعَدَّدَهُ (2) يَحْسَبُ أَنَّ مَالَهُ أَخْلَدَهُ

“বহু দুঃখ আছে সে ব্যক্তির যে পশ্চাতে অন্যের বদনাম করে এবং মুখের উপর নিন্দা করতে অভ্যস্ত। যে অর্থ সঞ্চয় করে ও তা বারবার গুনে দেখে। সে মনে করে তার সম্পদ তাকে চিরজীবী করে রাখবে।” (হুমাযা:১-৩)

২. ইসলামের দৃষ্টিতে সম্পদ হচ্ছে আল্লাহ পাকের একটি বড় নেয়ামত ও অনুগ্রহ। তবে এই সম্পদ নেয়ামত হিসেবে গণ্য হওয়ার জন্য দুটি শর্ত রয়েছে। প্রথম শর্তটি হল, সম্পদের আয় হতে হবে শরীয়ত নির্দেশিত হালাল উপায়ে। দ্বিতীয় শর্তটি হচ্ছে, অর্জিত সম্পদ খরচ করতে হবে শরীয়তের নির্দেশনা মোতাবেক। হাদীস শরীফে নবীজী সম্পদের এই চরিত্রটি এভাবে বর্ণনা করেছেন, এই সম্পদ হচ্ছে কমনীয় চিত্তাকর্ষক ও সুস্বাদু বস্তু। যদি কোন ব্যক্তি ন্যায়ভাবে সম্পদ অর্জন করে এবং ন্যায়ভাবে ব্যয় করে তাহলে তার জন্য এটি উত্তম সাহায্যকারী হবে। (বোখারী মুসলিম) অপর হাদিসের ভাষ্য হচ্ছে, নেক লোকের কাছে হালাল সম্পদ থাকা উত্তম জিনিস। এজন্য কোরআনে কারিমের অনেক আয়াতে সম্পদকে সরাসরি “খাইর” বা কল্যাণ শব্দে উল্লেখ করা হয়েছে। (সূরা বাকারা:২১৫) আবার সম্পদ অর্জনকে ব্যক্ত করা হয়েছে আল্লাহর অনুগ্রহ অনুসন্ধান হিসেবে। (সূরা জুমুআ:১০) তাছাড়া যারা যথাযথ খাতে সম্পদ ব্যয় করে তাদের ভূয়শী প্রশংসা করা হয়েছে বিপুল সংখ্যক আয়াতে। ( সুরা বাকারা: ২৬১, আলে ইমরান:১৩৪)

৩. কিন্তু সম্পদের ক্ষেত্রে উক্ত দুটি শর্ত তথা হালাল পন্থায় উপার্জন ও শরীয়ত নির্ধারিত পদ্ধতিতে ব্যয়, এর মধ্য থেকে কোন একটি শর্ত যদি অনুপস্থিত থাকে, কিংবা সম্পদের কারণে আখেরাতের চিন্তা থেকে মানুষ গাফেল হয়ে যায়, আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের নির্দেশ পালনে বাধা আসে, তাহলে সেই সম্পদ আল্লাহ পাকের নেয়ামত ও অনুগ্রহ নয়। সেটি হবে দুর্ভোগ ও হতভাগ্যের কারণ।  এমন সম্পদকে কোরআন ও হাদিসে নিন্দা করা হয়েছে। এবং ফেৎনা হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। (সূরা তাগাবুন:১৫)

নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, প্রত্যেক উম্মতের জন্য একটি রয়েছে। আমার উম্মতের ফেতনা হল ধন-সম্পদ। (ইবনে হিব্বান ৩২২৩)

কেয়ামতের দিন মানুষকে বিশেষভাবে যে পাঁচটি প্রশ্ন করা হবে এর মধ্যে দুটি প্রশ্ন থাকবে সম্পদ সংক্রান্ত। তাকে জিজ্ঞেস করা হবে, এই সম্পদ তুমি কোথা থেকে উপার্জন করেছ? তারপর কোথায় ব্যয় করেছ? (তিরমিজি: ২৪১৭) আল্লাহ না করুন! প্রশ্ন দুটির যথাযথ উত্তর দিতে ব্যর্থ হলে মানুষের নিজের অর্জিত সম্পদই কাল হয়ে দাঁড়াবে!!

এজন্য কোরআনে কারিমে বারবার মুমিনদের সতর্ক করা হয়েছে, “তোমাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি যেন তোমাদেরকে আল্লাহর স্মরণ থেকে উদাসীন না করে”।

সম্পদ সম্পর্কে ইসলামের মূল্যায়ন আলোচনা করার পর আসে সম্পদ সংরক্ষণের বিষয়টি। হাদীস শরীফে এসেছে, যাচনা করা ছাড়া আল্লাহপাক যাকে সম্পদের কোন অংশ দান করবেন সে যেন তা গ্রহণ করে। কেননা এটি হচ্ছে রিজিক। যা আল্লাহ পাক তার জন্য পাঠিয়েছেন। (মুসনাদে আহমদ:৭৯২১)
ইতিপূর্বেও আমরা দেখিয়েছি যে, শরীয়ত সমর্থিত পন্থায় অর্জিত সম্পদ আল্লাহ পাকের বিশেষ নেয়ামত ও অনুগ্রহ। তাই কোরআন ও হাদিসে এই নেয়ামতের মূল্যায়ন করার প্রতি তাকিদ করা হয়েছে। মুসলিম শরীফে বর্ণিত হাদীসে নবীজি এরশাদ করেছেন, তোমরা তোমাদের সম্পদ সংরক্ষণ করো। এ সম্পদ তোমরা নষ্ট করো না। (মুসলিম:১৬২৫)

অপরদিকে যারা সম্পদের অবমূল্যায়ন করে তাদের প্রতি উচ্চারিত হয়েছে সাবধান বানী। বলা হয়েছে, সম্পদের অপচয়কারীরা হচ্ছে শয়তানের বন্ধু।

মূলত এখান থেকে শরীয়তে সম্পদ সংরক্ষণ করার প্রতি যথার্থ গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। মানুষের সম্পদ যাতে সংরক্ষিত থাকে, কেউ যেন কারো সম্পদে অন্যায় হস্তক্ষেপ না করতে পারে, সে জন্য বিভিন্ন বিধান প্রণয়ন করা হয়েছে।

একজন মানুষের প্রাণ যেমন সম্মানিত ও সংরক্ষিত, ঠিক তার সম্পদও সংরক্ষিত। প্রাণ রক্ষা করতে গিয়ে যদি কেউ মারা যায় তাহলে সে শহীদ হবে, ঠিক একইভাবে সম্পদ রক্ষা করতে গিয়ে যদি কেউ নিহত হয় সেও শহীদ হিসেবে বিবেচিত হবে।

এমনকি শরীয়তের বিধান প্রণয়নের ক্ষেত্রে যে পাঁচটি জিনিস সংরক্ষণ করা মুখ্য উদ্দেশ্য এর মধ্যে একটি হল বা সম্পদ সংরক্ষণ।

মুদ্দা কথা অর্জিত সম্পদের প্রতি যত্নবান হওয়া, নিজের আসবাবপত্রের দেখাশুনা করা এবং এগুলোর সংরক্ষণের যথার্থ ব্যবস্থা গ্রহণ করা শরীয়তের গুরুত্বপূর্ণ একটি নির্দেশ। কিন্তু কতক মানুষ রয়েছেন যারা এসবকে নিছক দুনিয়াবী কাজ মনে করেন। আবার কারো কারো ধারণা, এগুলো তাকওয়া-যুহদ-দুনিয়াবিমুখিতা পরিপন্থী কাজ। তাদের এ ধারণাটি মোটেও সঠিক নয়। একটি হাদীসে অত্যন্ত স্পষ্ট ভাষায় নবীজি এমন চিন্তা সংশোধন করেছেন। তিনি বলেছেন: হালাল বস্তকে হারাম করা এবং সম্পদ বিনষ্ট করার নাম দুনিয়া বিমুখিতা নয় বরং দুনিয়া বিমুখিতা হল আল্লাহর হাতে যা আছে এর তুলনায় তোমার হাতে যা আছে তার উপর বেশী নির্ভরশীল হবে না আর কোন মুসীবতে নিপতিত হলে এর ছওয়াবের আশার তুলনায় মুসীবতে নিপতিত না হওয়াটা তোমার কাছে প্রিয়তর হবে না। (তিরমিজি:২৩৪০, ইবনু মাজাহ:৪১০০)

আরেকটি প্রসিদ্ধ হাদিসে নবীজি বলেছেন,
আল্লাহ তোমাদের তিনটি কাজ অপছন্দ করেন, (১) অনর্থক কথাবার্তা, (২) সম্পদ নষ্ট করা এবং (৩) অত্যধিক সাওয়াল করা।
(সহি বুখারী: ১৪৭৭)

হাদিসে বর্ণিত “সম্পদ নষ্ট করা” কথাটি অনেক ব্যাপক। চতুর্থ শতাব্দীর প্রখ্যাত মুহাদ্দিস ও ফকীহ আল্লামা খাত্তাবী (মৃত্যু:৩৮৬) এ প্রসঙ্গে অতি উত্তম ও সিদ্ধান্ত মূলক আলোচনা করেছেন। তিনি লিখেছেন, সম্পদ নষ্ট করার অনেক সুরত রয়েছে। তবে এর মূল কথাটি হল, ব্য্য করার ক্ষেত্রে সীমালংঘন করা, অপাত্রে ব্যয় করা, প্রয়োজনীয় খাতে খরচ না করে অপ্রয়োজনীয় খাতে খরচ করা। তিনি আরো লিখেছেন, একজন ব্যক্তির এমন কিছু সম্পদ রয়েছে, যেগুলোর যথাযথ যত্ন না নিলে নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। যেমন গোলাম বাদী গবাদি পশু প্রভৃতি। এক্ষেত্রে এসবের যথাযথ ও প্রয়োজনীয় যত্ন না নেয়াও হাদীসে বর্ণিত সম্পদ নষ্ট করার অন্তর্ভুক্ত হবে। (আল্লামা খাত্তাবী কৃত শরহে বুখারী)

বর্তমানে আমরা একটি প্রবণতা লক্ষ করে থাকি। অনেক বাবা-মা বা পরিবারের কোন সদস্য কখনো বাচ্চাদের হাতে মূল্যবান জিনিসপত্র দিয়ে দেন, কখনো তারা নিজেরাই ঘরের প্রয়োজনীয় জিনিস নিয়ে খেলাধুলা শুরু করে। বড়রা দেখেও তাদের হাত থেকে সেটা গ্রহণ করেন না। অথচ জিনিসটি তাদের হাতে নষ্ট হওয়ার যথেষ্ট আশঙ্কা রয়েছে। এ প্রসঙ্গে আল্লামা খাত্তাবি লিখেছেন, “বুঝমান নয় এমন কারো কাছে সম্পদ দেয়াও ‘সম্পদ নষ্ট করার’ অন্তর্ভুক্ত। এখান থেকে প্রমাণিত হয়, নিজের সম্পদ নষ্ট করে ফেলে যেমন— শিশু পাগল, এদের উপর লেনদেনের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা বৈধ রয়েছে।” তাছাড়া সূরা নিসার আয়াত “অবুঝদের হাতে তোমরা নিজেদের সেই সম্পদ অর্পণ করো না যাকে আল্লাহ তোমাদের জীবনের অবলম্বন বানিয়েছেন” (আয়াত:৫) এখান থেকেও এই ধরনের আচরণের অসঙ্গতি স্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয়। মনে রাখা প্রয়োজন, শিশুদের সংগে স্নেহপূর্ণ আচরণ ইসলামের একটি বিশেষ শিক্ষা। কিন্তু এক্ষত্রে শরীয়তের স্বীকৃত ও প্রতিষ্ঠিত বিধান লংঘন করা কাম্য নয়।

সম্পদের ক্ষেত্রে শরীয়তের বিধান লংঘনের আরেকটি ক্ষেত্র হল রাগের মুহূর্তটি। কারো কারো অভ্যাস আছে তারা কোন কারনে রেগে গেলে হাতের কাছে যা পান তাই ছুড়ে ফেলেন। এভাবে নিজের বা অন্যের সম্পদ ও প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ভেঙে রাগ মিটিয়ে থাকেন। মূলত রাগ মানুষের স্বভাবজাত একটি অবস্থা। একে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য ইসলাম বিভিন্ন পদ্ধতি শিখিয়েছে। রাগের সময় যত্নের সাথে এগুলো অবলম্বন করতে হবে। যে সম্পদকে আল্লাহ তা’আলা নেয়ামত বানিয়েছেন এবং সংরক্ষণ করার জোরালো নির্দেশ দিয়েছেন সেই সম্পদ নষ্ট করা কোনো অবস্থাতেই গ্রহণযোগ্য নয়। সুখে-দুঃখে শান্ত রাগত— সর্বাবস্থায় আল্লাহপাকের বিধানের প্রতি নিজেকে সঁপে দেয়াই হলো একজন মুমিনের প্রধান বৈশিষ্ট্য।

Facebook Comments

Previous Post

রাষ্ট্রিয় কোষাগারের উপর জনগণ কর্তৃক অর্থনৈতিক নজরদারির গুরুত্ব। মূল : ড. বশীর ইসাম। অনুবাদ : সাবের চৌধুরী

Next Post

তিব্বে নববীঃ পরিচয় ও প্রয়োজনীয় বিশ্লেষণ। সাবের চৌধুরী

আনাস চৌধুরী

আনাস চৌধুরী

আনাস চৌধুরীর জন্ম ১৯৯৭ সালে, হবিগঞ্জ সদরে। পড়াশোনা করেছেন ঢাকার জামিয়াতুল উলুমিল ইসলামিয়ায়। পরে দারুল উলুম দেওবন্দে অধ্যয়ন করেছেন। বর্তমানে শিক্ষকতা করছেন দারুল ইরশাদ হবিগঞ্জ এ। পাশাপাশি দীন ও শরিয়া বিষয়ে লেখালেখি ও আলোচনা করেন। আজম হাশেমীর বহুল পঠিত 'বোখারা সামারকন্দের রক্তাক্ত স্মৃতি' বইটি তিনি উর্দু থেকে আরবীতে অনুবাদ করেছেন, যা মদীনা মুনাওয়ারা থেকে প্রকাশিত হয়েছে।

Related Posts

তত্ত্ব ও পর্যালোচনা

তাসাউফ সম্পর্কে অপপ্রচার ও ভ্রান্তি : একটি সংক্ষিপ্ত পর্যালোচনা ।। মাওলানা আনাস চৌধুরী

December 16, 2022
জাতীয়তাবাদ: জাহিলিয়্যাতের নতুন রূপ || আব্দুল্লাহ বিন বশির
আকীদা

জাতীয়তাবাদ: জাহিলিয়্যাতের নতুন রূপ || আব্দুল্লাহ বিন বশির

April 22, 2022
Next Post
তিব্বে নববীঃ পরিচয় ও প্রয়োজনীয় বিশ্লেষণ। সাবের চৌধুরী

তিব্বে নববীঃ পরিচয় ও প্রয়োজনীয় বিশ্লেষণ। সাবের চৌধুরী

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

No Result
View All Result

Recent.

তাসাউফ সম্পর্কে অপপ্রচার ও ভ্রান্তি : একটি সংক্ষিপ্ত পর্যালোচনা ।। মাওলানা আনাস চৌধুরী

December 16, 2022
এই পৃথিবী একবার পায় তারে। সাবের চৌধুরী।

এই পৃথিবী একবার পায় তারে। সাবের চৌধুরী।

November 28, 2022

গামেদি চিন্তার মৌলিক ভ্রান্তি | শেষ পর্ব | মূল: মাওলানা ইয়াহয়া নোমানি | তরজমা: হুজাইফা মাহমুদ

November 16, 2022

গামেদি চিন্তার মৌলিক ভ্রান্তি—প্রথম পর্ব | মূল: মাওলানা ইয়াহয়া নোমানি | ভাষান্তর: হুজাইফা মাহমুদ

November 12, 2022
বাংলাদেশে ইসলামি নারীবাদের সাতকাহন | হুজাইফা মাহমুদ

বাংলাদেশে ইসলামি নারীবাদের সাতকাহন | হুজাইফা মাহমুদ

October 29, 2022

  • আমাদের সম্পর্কে
  • যোগাযোগ

সোশ্যাল নেটওয়ার্ক

No Result
View All Result
  • মূল পাতা
  • কুরআন
  • হাদীস
  • আকীদা
  • ফিকহ
  • ইবাদাত
  • সীরাত
  • তত্ত্ব ও পর্যালোচনা
  • চিন্তা ও মতবাদ
  • দেশ, সমাজ, সংস্কৃতি
  • বিশ্ব
  • বিজ্ঞান ও আধুনিকতা
  • অন্যান্য
    • নারী, শিশু, পরিবার
    • সুন্নত ও বিদআত
    • জিহাদ
    • রাজনীতি
    • আইন ও সংবিধান
    • শিক্ষা
    • প্রাচ্যবাদ
    • ইতিহাস
    • বিয়ে ও দাম্পত্য
    • ব্যক্তিত্ব ও সাক্ষাৎকার
    • শিল্প-সাহিত্য
    • গ্রন্থ-আলোচনা
    • আরবি ব্যাকরণ
    • উর্দু ব্যাকরণ
    • বিবিধ
    • পিডিএফ
    • নির্বাচিত লেখক-পরিচিতি
    • গুরুত্বপূর্ণ লিংক ও সাইটসমূহ

© 2020 রিওয়ায়াহ - Developed by Tijarah IT Limited.