Riwayahbd
  • মূল পাতা
  • কুরআন
  • হাদীস
  • আকীদা
  • ফিকহ
  • ইবাদাত
  • সীরাত
  • তত্ত্ব ও পর্যালোচনা
  • চিন্তা ও মতবাদ
  • দেশ, সমাজ, সংস্কৃতি
  • বিশ্ব
  • বিজ্ঞান ও আধুনিকতা
  • অন্যান্য
    • নারী, শিশু, পরিবার
    • সুন্নত ও বিদআত
    • জিহাদ
    • রাজনীতি
    • আইন ও সংবিধান
    • শিক্ষা
    • প্রাচ্যবাদ
    • ইতিহাস
    • বিয়ে ও দাম্পত্য
    • ব্যক্তিত্ব ও সাক্ষাৎকার
    • শিল্প-সাহিত্য
    • গ্রন্থ-আলোচনা
    • আরবি ব্যাকরণ
    • উর্দু ব্যাকরণ
    • বিবিধ
    • পিডিএফ
    • নির্বাচিত লেখক-পরিচিতি
    • গুরুত্বপূর্ণ লিংক ও সাইটসমূহ
  • মূল পাতা
  • কুরআন
  • হাদীস
  • আকীদা
  • ফিকহ
  • ইবাদাত
  • সীরাত
  • তত্ত্ব ও পর্যালোচনা
  • চিন্তা ও মতবাদ
  • দেশ, সমাজ, সংস্কৃতি
  • বিশ্ব
  • বিজ্ঞান ও আধুনিকতা
  • অন্যান্য
    • নারী, শিশু, পরিবার
    • সুন্নত ও বিদআত
    • জিহাদ
    • রাজনীতি
    • আইন ও সংবিধান
    • শিক্ষা
    • প্রাচ্যবাদ
    • ইতিহাস
    • বিয়ে ও দাম্পত্য
    • ব্যক্তিত্ব ও সাক্ষাৎকার
    • শিল্প-সাহিত্য
    • গ্রন্থ-আলোচনা
    • আরবি ব্যাকরণ
    • উর্দু ব্যাকরণ
    • বিবিধ
    • পিডিএফ
    • নির্বাচিত লেখক-পরিচিতি
    • গুরুত্বপূর্ণ লিংক ও সাইটসমূহ
No Result
View All Result
Riwayahbd
No Result
View All Result

বাঙলা ভাষায় ইংরেজি শব্দের প্রবেশ ও অনুপ্রবেশ : বিশ্লেষণ ও কিছু নির্দেশনা | সাবের চৌধুরী

by Riwayah
July 7, 2020
1 min read
0
বাংলা-ভাষায়
31
SHARES
228
VIEWS
Share on FacebookShare on Twitter

বেশ কয়েক বছর আগের কথা। তখন সম্ভবত মাদরাসার মাধ্যমিক শ্রেণীতে পড়ি। অনুষ্ঠানটি কি বাৎসরিক আনন্দানুষ্ঠান ছিল? ঠিক মনে নেই। সে অনুষ্ঠানে বাঙলা ভাষা নিয়ে একজন একটা সঙ্গীত গাইলেন। সে-সঙ্গীতের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত তিনি বাঙলা ভাষাকে কী পরিমাণ মহব্বত করেন, এ মহব্বতের কারণে তাঁর ভেতরে কীরকম আকুলিবিকুলি করে এবং এর জন্য তাঁর কী কী করত মন চায়—এসব কথা তিন অসীম আবেগের সাথে খুব সুন্দর করে গেয়ে শুনালেন। কণ্ঠটিও ছিলে বেশ সুখশ্রাব্য। ফলে উপস্থিত লোকজন খুবই মুগ্ধ হয়ে শুনলো।

শেষ করার পর উপস্থাপক হিসেবে আমি গিযে বললাম : লেডিস এন্ড জেন্টলম্যান, আমাদের এই মাদার ল্যাঙ্গুয়েজকে আমরা অলটাইম রেসপেক্ট করবো এন্ড এই ল্যাঙ্গুয়েজে আমরা কখনোই ইংলিশ ওয়ার্ড ইউজ করবো না। আমার এ কথায় অনেকে হাসলো। কিন্তু আমি কথাটা বলেছিলাম মূলত একটা অভিমান থেকে। এ অভিমানটুকু হয়তো তাদেরকে স্পর্শ করেনি।

এটুকু পড়ার পর কেউ কেউ হয়তো ভাবছেন, ওহ্, বুঝেছি— সেই পুরনো কথা, যে, বাঙলা ভাষায় ইংরেজি শব্দ ব্যবহার করা যাবে না; বরং, এই করতে হবে-সেই করতে হবে… ইত্যাদি ইত্যাদি।

আমি আপনাকে নিরাশ করছি না। অনেকটা এরকম কিছুই বলতে যাচ্ছি। তবে, ঠিক সেটা না যেটা আপনি বুঝতে শুরু করেছেন। কারণ আমি বলছি না যে, আপনি ইংরেজী শব্দ বিলকুল ব্যবহার করতে পারবেন না। প্রয়োজনমাফিক তা অবশ্যই করবেন। একটু দাঁড়ান, আগে পরিস্কার করে নিই ইংরেজী শব্দ দ্বারা এখানে আমি আসলে ঠিক কী বুঝাচ্ছি। এবং আমার মনে হয়, এর জন্য সর্বপ্রথম প্রয়োজন হলো ইংরেজী শব্দ দ্বারা আমি কী বুঝাচ্ছি না—তা পরিস্কার করা।

তো, যে শব্দগুলোকে বাঙলা ভাষা নিজের করে গ্রহণ করে নিয়েছে, সেগুলো এখানে সঙ্গত কারণেই আলোচ্য বিষয় নয়। এগুলো তো বাঙলা-ই। কোন কোন শব্দ এ পর্যায়ে পৌঁছেছে এটা একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এ সম্পর্কিত কোন নিয়ম-সংজ্ঞা আসলে আমার জানা নেই। পরিস্কার কিছু ধারণাও দিতে পারবো না।

কিন্তু বাংলা ভাষার সন্তান হিসেবে আমার একটা বিচার আছে। সে থেকে বলতে পারি—ব্যাপকভাবে বাঙলাভাষী মানুষ যে শব্দটি ব্যবহার করার সময় টেরই পায় না যে, সে একটি একটি ইংরেজী শব্দ বলতে যাচ্ছে। অথবা সে জানে; কিন্তু সে সময় তার মনে ইংরেজী শব্দ ব্যবহার করার মত কোন প্রতিক্রিয়া কাজ করে না— এ পর্যায়ের শব্দগুলোকে আমরা বলতে পারি—হ্যাঁ, এগুলো ভীনদেশ থেকে আসা আমাদের শব্দ-অতিথি। এদেরকে আমরা একান্ত আপন করে নিয়েছি।

এ পর্যায়ে পৌঁছা শব্দগুলো থেকে কিছু আছে যেগুলো বাঙলাভাষায় বিদেশী শব্দ হিসেবে গৃহিত হওয়ার ব্যাপারে সবাই একমত হবে। যেমন, চেয়ার, টেবিল, পথ, ব্যাগ, মটর সাইকেল ইত্যাদি। যারা খুব সচেতনভাবে ইংরেজী শব্দ এড়িয়ে নির্ভেজাল বাঙলা বলতে চান, তারাও সম্ভবত এগুলোর হাত থেকে বাঁচতে পারবেন না বা বাঁচার চেষ্টা করা সঠিক নয়।

আরো কিছু শব্দ আছে, যেগুলো বাঙলায় দেদারসে চলতে পারে— এ কথায় সবাই সম্মত হলেও কেউ কেউ এগুলো থেকে বেঁচে থাকার কথা বলেন এবং নিজেরাও ছোঁয়াচে মানুষের মত গা বাঁচিয়ে চলার চেষ্টা করেন। যেমন, ফ্যান, লাইট, ফ্লোর, হুন্ডা, ড্রাইভার ইত্যাদি।

এ দুই রকমের শব্দ বাঙলা ভাষায় ব্যবহার করা নিয়ে আমার কোন আপত্তি নেই। আপত্তি থাকা বৈধও নয়, সম্ভবত।

আরো কিছু শব্দ আছে, যেগুলো এখনো বাঙলা ভাষায় বাঙলা শব্দ হিসেবে অন্তুর্ভুক্ত হয় নি; আবার এ সবের সর্বসম্মত  বিকল্প কোন বাঙলাও নাই। যেমন, সফটওয়্যার, মনিটর, সকেট, ব্যাট, স্ট্যাম্প, আম্পায়ার ইত্যাদি।

এসবের মধ্য থেকে কিছু শব্দ ইতিমধ্যে আমাদের ভাষায় বাঙলা হিসেবে জায়গা করে নিচ্ছে বা নিতে যাচ্ছে। তবে, সবচে ভাল হবে আমরা যদি বিকল্প শব্দ তৈরী করতে পারি। কিছু চেষ্টা অবশ্য হচ্ছে নানা প্রতিষ্ঠান থেকে। যেমন, উড়ালসড়ক, উড়ালসেতু ইত্যাদি। এটা ভালো। তবে এ ক্ষেত্রে তাড়াহুড়ো বা স্বেচ্ছাচারিতার মনোভাব ভাষার ভেতরে বিশৃঙ্খলা তৈরী করবে। এদিকটায় সতর্ক থাকা জরুরী। কিছুদিন আগে দেখলাম কোন পত্রিকা যেন ‘সেলফি’-র তরজমা করেছে ‘নিজস্বী’। পরে দেখলাম লোকজন এটা নিয়ে ঠাট্রা-মশকরা করছে। আমার কাছেও শব্দটা কেমন বেমক্কা আর কৌতুকপূর্ণ মনে হয়েছে। সবচে ভালো হতো বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে বাঙলা একাডেমি বা এরকম কোন প্রতিষ্ঠান যদি দেশের গ্রহণযোগ্য সাহিত্যিক ও ভাষাবিদদের সমন্বয়ে একটা কর্তৃপক্ষ গঠন করে দিত। অবশ্য এ কর্তৃপক্ষ শুধুই সুপারিশ করবে; আইন জারি করবে না। তাদের সুপারিশমত ভালো কিছু শব্দ হয়তো সর্বসম্মত শব্দের মর্যাদা পেয়ে বাঙলা ভাষায় নিজের জায়গা করে নেবে। তো, যাই হোক— এগুলোর ভালো বিকল্প থাকলে সেগুলো ব্যবহার করুন, অন্যথায় ইংরেজিই চলুক। আপত্তি নেই।

আমার আপত্তি হলো এ তিন শ্রেণীর বাইরের শব্দগুলো নিয়ে। শুরুতে যে বলেছি প্রয়োজন হলে ইংরেজি শব্দ অবশ্যই ব্যবহার করবেন, এই সমর্থন উক্ত তিন শ্রেণীর মধ্যে সীমিত।

এর বাইরে থেকে কি কোন শব্দই আমরা আমাদের ভাষায় নিতে পারি না? অবশ্যই পারি। এক ভাষার শব্দ অন্য ভাষায় এসে প্রবেশ করবে, এটা স্বাভাবিক। এর দ্বারা ভাষা সমৃদ্ধ হয় এবং এটা ভাষার গতিশীলতা ও জীবন্ত থাকার প্রমাণ বহণ করে। যেমন বাঙলা ভাষা প্রচুর পরিমাণে তা করেছে।

কিন্তু, অন্য ভাষার শব্দ গ্রহণ করার ক্ষেত্রে ভাষার একটা স্বাভাবিক গতি ও প্রবণতা আছে। যদি এ প্রবণতার ভেতর দিয়ে কোন শব্দ এসে প্রবেশ করে তাহলে তাকে আমরা বরণ করে নিই। যেমন, প্রথম দুই প্রকারকে আমরা গ্রহণ করেছি এবং তৃতীয় প্রকারকে আমরা সহ্য করেছি।

কিন্তু স্বাভাবিক প্রক্রিয়ার বাইরে গিয়ে যদি বিশেষ মানসিকতা ও প্রবণতার হাত ধরে ঢালাওভাবে ইংরেজী শব্দ প্রবেশ করতে থাকে, তাহলে এর দ্বারা বাঙলা ভাষা আহত হবে এবং অতীতের সাথে আমাদের যোগাযোগের পথে বড় ধরণের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হবে।

বাহ্যিক দৃষ্টিতে যে মানসিকতা, প্রবণতা ও কারণগুলো ভাষার স্বাভাবিক গতিকে নষ্ট করে অস্বাভাবিকভাবে ইংরেজী শব্দ গ্রহণ করতে মানুষকে প্ররোচিত করে, এর মধ্যে কিছু, যেমন,

১. নিজেকে বিজ্ঞ, দক্ষ, শিক্ষিত, বিষয়নিষ্ঠ, সমকাল-সচেতন ইত্যাদি প্রমাণের বাসনা।

২. এক নাম্বারের লোকদের সাথে তাল মিলিয়ে রাখা বা এঁদের সাথে কথা বলতে গিয়ে বাঙলা শব্দ ব্যবহারে হীনমন্যতায় ভোগা।

৩. বিশেষ পরিবেশে থেকে বেশি রকমে ইংরেজি শব্দ ব্যবহারে অভ্যস্থ হওয়ার ফলে, এ শব্দগুলোর বাঙলা ভুলে যাওয়া বা অসচেতন হয়ে পড়া।

৪. কোথাও কোথাও বাঙলা শব্দের চেয়ে ইংরেজী শব্দটিকে নিজের ধারণা অনুযায়ী বেশি মর্মবাহী মনে করা।

৫. অ-পরিভাষাকে পরিভাষা মনে করে হুবহু ইংরেজী রেখে দেওয়াকে সঠিক মনে করা।

৬. নিজের অজান্তে চারপাশের লোকদের দ্বারা প্রভাবিত হওয়া।

৭. কথার মধ্যে এক ধরণের বিশেষ রস তৈরীর ইচ্ছা থাকা।

৮. তাছাড়া ইংরেজি ভাষাটি বিশ্বজুড়ে ব্যাপক প্রচলিত একটি ভাষা, এটি আন্তর্জাতিক ভাববিনিময়ের মাধ্যম এবং প্রযুক্তির ভাষা হওয়ায় পৃথিবীর আনাচে কানাচে সর্বত্র বিরাজিত, উপনিবেশায়নের হাত ধরে বিস্তৃত পরিসরে এর মজবুত ভিত্তি গড়ে উঠেছে এবং নানাভাবে আমাদের প্রাত্যহিক জীবনের প্রয়োজনের ভেতরে প্রবিষ্ট হয়েছে, ফলে, সুন্দর বাঙলা শব্দগুলোকে পাশ কাটিয়ে অবচেতনভাবেই মানুষ সে-সমস্ত জায়গায় নানা ইংরেজী শব্দ গ্রহণ করছে।

আমার মনে হয়, এই প্রবণতাগুলোর ভেতর দিয়ে বাঙলা ভাষায় ইংরেজি শব্দ ব্যবহার করাটা খু্বই দুঃখজনক। এর দ্বারা ভাষা আহত হয়। ভাষার স্বাভাবিকতা নষ্ট হয়। ভাষার যে মূল উদ্দেশ্য পারস্পরিক যোগাযোগ, এই উদ্দেশ্যটি ব্যহত হয়। অনেক সময় এটি শ্রেণী বৈষম্যও তৈরী করে। এ জন্য যে জায়গাগুলোতে সুন্দর ও উপযুক্ত বাংলা শব্দ রয়েছে, সেখানে ইংরেজিকে গ্রহণ না করা উচিত। বরং, আমার কাছে মনে হয় এটা একটা ভাষাগত অনাচার। নিজেদের এবং পরবর্তী প্রজন্মের স্বার্থেই এই অনাচার থেকে আমাদের বেরিয়ে আসা একান্ত দরকার।

আট নাম্বারটার ক্ষেত্রে কেউ বলতে পারেন—এ প্রবণতা থেকে শব্দগুলো যেহেতু মানুষের অনিচ্ছায় বা অবচেতনসূত্রে অনিবার্যভাবে প্রবেশ করছে, সুতরাং বলা যায় এগুলো স্বাভাবিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই আসছে। আমি বলি, না; এটা স্বাভাবিকতা নয়; অসচেতনতা। এটা এবং এইরকমের সমস্ত কৃত্রিম মানসিকতা ছেড়ে আমাদের সচেতন হওয়া উচিত।

কেউ এটাও বলতে পারেন যে, এভাবে যদি নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়, তাহলে তো কোন শব্দই আর প্রবেশ করতে পারবে না। অথচ, অতীতে তো অনেক শব্দ প্রবেশ করেছে।

এই অভিযোগ সঠিক নয়। বিদেশী শব্দ প্রবেশের বৈধ পথ রয়েছে। প্রথমত, দেখুন, আমাদের অক্ষমতার একটা জায়গা আছে—অর্থাৎ, এমন অনেক জায়গা আছে যেখানে বাঙলা সমার্থক শব্দ নেই। সে জায়গাগুলোতে আমরা নিজস্ব শব্দ গড়ে তোলার চেষ্টা করবো। যেখানে গড়ে উঠবে না সে জায়গাগুলোতে ইংরেজি আসুক। আর, বাকি প্রবণতাগুলোকে আমরা বর্জন করবো, নানাভাবে মানুষকে সচেতন করবো। আমাদের গণমাধ্যমগুলো এ ব্যাপারটিতে মুখ্য ভূমিকা পালন করতে পারে। দৈনিক পত্রিকাগুলোর কোন কোনটিকে এ ব্যাপারটিতে সচেতন হতে দেখা যাচ্ছে। এটা অত্যন্ত আনন্দের বিষয়।

তো, এই যে, নানা প্রবণতা থেকে শব্দ প্রবেশ করতে চাচ্ছে, আর আমরা প্রতিরাধ করছি, এটা একটা লড়াই। এ লড়াইয়ের ভেতর দিয়ে একটা সহনীয় মাত্রা তৈরী হবে। এবং এর দ্বারাই বিদেশী শব্দ গ্রহণ করার ক্ষেত্রে বাঙলা ভাষার স্বাভাবিক গতি সৃষ্টি হবে। আমি মূলত এটাই বলতে চাচ্ছি।

আবার কারো বক্তব্য হলো—পরিভাষা না হওয়া স্বত্তেও এমন অনেক শব্দ আছে যেগুলোতে বাঙলা শব্দ দিলে অর্থ তেমন জুতসইভাবে ফুটে না।

আমি মনে করি এটা একটা ভুল মনোভাব। এটা যতটা না বাস্তব, তারচেয়ে বেশি আমাদের কল্পিত ধারণা। বাঙলা মর্মে কোন সমস্যা নেই। আপনার আশপাশের মানুষের মাঝে এগুলোর অধিক প্রচলনের কারণে আপনার উপলব্ধি বাস্তবতা বিমুখ হয়ে ভুল পথে প্রবাহিত হয়েছে এবং আপনি মনে করছেন লোকজন এর বাইরে বুঝি বুঝতে পারবে না। আপনি ব্যবহার করে দেখুন, বুঝবে ঠিকই।

আরেকটা বিষয় কী? একটা ভাষাকে ক্রমশ নির্মাণ করতে হয়। মনোযোগি চর্চার ভেতর দিয়ে ধারাবাহিকভাবে একে উন্নত করতে হয়। এ কাজটি কিন্তু বাইরে থেকে কেউ এসে করে দেবে না। করতে হবে আমাদেরকেই। কথাটি আরেকটু ব্যাখ্যা করছি। একটা শব্দের মূল একটা অর্থ থাকে। কিন্তু মুন্সিয়ানার সাথে ব্যবহারের ফলে তার মধ্যে নব নব অর্থের জন্ম হয়।

এটা কবি-সাহিত্যিকদের হাত ধরে যেমন হয়, সমাজের সাধারণ মানুষের হাত ধরেও হয়। যেমন, পৃষ্ঠপোষকতা একটি শব্দ। এর সাধারণ অর্থটি আমরা সবাই জানি। জনাব সলিমুল্লাহ সাহেব এই প্রতিষ্ঠানের পৃষ্ঠপোষকতা করেন এটা সবার কাছেই বোধগম্য। কিন্তু, আমি যদি বলি—অতীতে আমাদের জীবনে প্রকৃতির একটা পৃষ্ঠপোষকতা ছিল, তখন কিন্তু আমরা এই শব্দটির ভেতর যাদুময়ী আরেকটি গভীর মর্মকে ঝিলিক দিয়ে উঠতে দেখি। আমাদের হৃদয় আনন্দে হাসতে থাকে। কারণ, সারবত্তাসহ বক্তব্যের পূর্ণ মর্মটি এই শব্দের হাত ধরে মিহি জলকণার হৃদয়ের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে।

এখন আমরা ‘গভীর মর্মবাহী; গভীর মর্মবাহী’ করে করে ইংরেজি শব্দগুলোকে ক্রমশ নিতে থাকি, তাহলে বাঙলা শব্দের এই আবিস্কারগুলো থমকে যাবে।

বর্তমান এই আধু্নিক সময়ে এসে সমালোচনা, প্রস্তাবনা, সন্দেহ ও সংশয় উপস্থান, আলোকপাত, বিশ্লেষণ, মন্তব্য ইত্যাদি উপস্থাপনে খুব বিশ্রিভাবে কিছু শব্দ ব্যবহার করা হয়। এসব দেখলে ব্যাক্তিগতভাবে আমার খুবই মন খারাপ হয়। উদাহরণ স্বরূপ কিছু শব্দ উল্লেখ করছি।

. এপ্রোচ।

. হিপোক্রিট।

. এপ্রোশিয়েট।

. ক্রিটিক।

. কনসেপ্ট।

. ক্রিয়েট করা।

. বাট।

. মর্নিং-ইভিনিং।

. স্যাড।

. থ্যাংকস।

কেন লেখে মানুষ এসব? অথচ, এগুলোর বিকল্প কত সুন্দর গভীর মর্মবাহী বোধগম্য বাঙলা রয়েছে।

অবশ্য পরিভাষাগুলো নিয়ে একটা ঝামেলা থেকে যাবে শেষ পর্যন্ত। তা থাকুক। সেখানেও আমরা চেষ্টা ও লড়াই করে যাবো। এরপরও কিছু পরিভাষা থাকবে, যেগুলো পরিবর্তন করা সম্ভব নয় বা পরিবর্তন করলে মর্ম আহত হয়, সেগুলোকে অবশ্যই রেখে দেব। বিশেষ ছাড় পাবে দীনি পরিভাষাগুলো।

আমার এ প্রস্তাবনা হলো ভাষার স্বাভাবিক প্রয়োগক্ষেত্রগুলোতে। যেমন, গণপরিসরে, ঘরে, বন্ধুদের আড্ডায়, কর্মক্ষেত্রে, পথেঘাটে ইত্যাদি। কিন্তু, বিশেষ পরিবেশ, যেমন, ইংরেজি মাধ্যম বা ইংরেজি-প্রধান শিক্ষালয়ে শিক্ষার আদান-প্রদানের সহজতার জন্য ইংরেজি শব্দ ব্যবহার করা যায়। না করতে পারলে ভালো। ইংরেজির ক্ষেত্রে এতক্ষণ যা বললাম, আরবি-উর্দু-ফার্সির ক্ষেত্রেও আমার একই বক্তব্য।

ইংরেজি প্রাধান্যের প্রতি বিরক্ত হয়ে কেউ কেউ ইংরেজি শব্দগুলোর জায়গায় আরবি শব্দ রোপিত করতে চেষ্টা করে যাচ্ছেন। যেমন, টেপরেকর্ডারের পরিবর্তে তারা বলেন ‘মুসাজ্জিল’। তাঁদের উদ্দেশ্য মহৎ; কিন্তু, আমরা কাছে এটাও সঠিক মনে হচ্ছে না। এতে দুইটা আপত্তি। এক হলো ইংরেজি নানাভাবে আমাদের মধ্যে প্রবেশ করার কারণে এবং নানা প্রবণতায় আক্রান্ত হয়ে এর প্রতি মানুষের বিশেষ আকর্ষণ থাকার কারণে লোকজন একে কষ্ট করে হলেও মেনে নিচ্ছে বা মেনে নেওয়াটা তাদের সক্ষমতার ভেতর আছে। কিন্তু, যে জায়গাগুলোতে আরবি শব্দ রোপন করতে চাচ্ছি, সে জায়গাগুলোর আরবি শব্দগুলো গণমানুষের আওতার বাইরে। ফলে, এটা মানুষের সাথে উলামায়ে কেরামের অযথা দূরত্ব বাড়াবে।

কেউ বলতে পারেন, আমরা বেশি বেশি ব্যবহার করলেই মানুষ আস্তে আস্তে অভ্যস্ত হয়ে যাবে। আমি বলি এটা অনেক বন্ধুর একটা পথ। উলামায়ে কেরাম যেখানে মৌলিক সাহিত্য নিয়ে এখনো পুরোপুরি দাঁড়াতে পারছেন না, নিয়ত লড়াই করতে হচ্ছে। সেখানে এটা অতিরিক্ত বোঝা। তাছাড়া, জোরজবরদস্তি করে একটা ভাষার সংস্কার হয় না।

দ্বিতীয়ত, এর দ্বারা বাঙলা ভাষার স্বাভাবিক গতি নষ্ট হবে। ইংরেজি ভাষা দিয়ে যেমন একে নষ্ট করা যায় না, তেমনি আরবি ভাষা দিয়েও নষ্ট করা উচিত নয়। ভাষাকে তার আপন গতির উপর থাকতে দেওয়া উচিত। হ্যাঁ, এর দ্বারা ধর্মীয় যে ফায়দার কথা বলা হয়, তা মেনে নিয়েই এ মন্তব্য করছি।

Facebook Comments

Previous Post

দেশপ্রেম ও একজন নাগরিকের সরল বয়ান | সাবের চৌধুরী

Next Post

বাংলাদেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যত ও সম্ভাবনা | সাবের চৌধুরী

Riwayah

Riwayah

সাবের চৌধুরী। জন্ম, ১৯৮৭ সালে হবিগঞ্জ জেলায়। হিফজ সম্পন্ন করেছেন দারুল উলুম হরষপুর থেকে। জামিয়াতুল উলুমিল ইসলামিয়া ঢাকা থেকে দাওরায়ে হাদীস,এবং দারুল ফিকরি ওয়াল ইরশাদ থেকে ইফতা সম্পন্ন করেছেন। বর্তমানে দারুল ইরশাদ ওয়াদ দাওয়াহ হবিগঞ্জ মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করছেন। ধর্ম,শিক্ষা,সামাজ,ইতিহাস এবং শিল্প সাহিত্য বিষয়ে নিয়মিত লেখালেখি করেন বিভিন্ন মাধ্যমে।এর পাশাপাশি আরবি ও উর্দু ভাষার অনুবাদেও সিদ্ধহস্ত। প্রকাশিত এবং প্রকাশিতব্য একাধিক বইয়ের অনুবাদক ও লেখক।

Related Posts

বাংলাদেশে  গণবিরোধি বুদ্ধিজীবিতার বিকার!-মুসা আল হাফিজ
তত্ত্ব ও পর্যালোচনা

বাংলাদেশে  গণবিরোধি বুদ্ধিজীবিতার বিকার!-মুসা আল হাফিজ

October 14, 2020
মুসলিম-সংখ্যাগরিস্ট
দেশ, সমাজ, সংস্কৃতি

মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ সমাজে ইসলাম বিদ্বেষ : প্রেক্ষিত বাংলাদেশ | হুজাইফা মাহমুদ

July 7, 2020
Next Post
রাজনীতি

বাংলাদেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যত ও সম্ভাবনা | সাবের চৌধুরী

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

No Result
View All Result

Recent.

তাসাউফ সম্পর্কে অপপ্রচার ও ভ্রান্তি : একটি সংক্ষিপ্ত পর্যালোচনা ।। মাওলানা আনাস চৌধুরী

December 16, 2022
এই পৃথিবী একবার পায় তারে। সাবের চৌধুরী।

এই পৃথিবী একবার পায় তারে। সাবের চৌধুরী।

November 28, 2022

গামেদি চিন্তার মৌলিক ভ্রান্তি | শেষ পর্ব | মূল: মাওলানা ইয়াহয়া নোমানি | তরজমা: হুজাইফা মাহমুদ

November 16, 2022

গামেদি চিন্তার মৌলিক ভ্রান্তি—প্রথম পর্ব | মূল: মাওলানা ইয়াহয়া নোমানি | ভাষান্তর: হুজাইফা মাহমুদ

November 12, 2022
বাংলাদেশে ইসলামি নারীবাদের সাতকাহন | হুজাইফা মাহমুদ

বাংলাদেশে ইসলামি নারীবাদের সাতকাহন | হুজাইফা মাহমুদ

October 29, 2022

  • আমাদের সম্পর্কে
  • যোগাযোগ

সোশ্যাল নেটওয়ার্ক

No Result
View All Result
  • মূল পাতা
  • কুরআন
  • হাদীস
  • আকীদা
  • ফিকহ
  • ইবাদাত
  • সীরাত
  • তত্ত্ব ও পর্যালোচনা
  • চিন্তা ও মতবাদ
  • দেশ, সমাজ, সংস্কৃতি
  • বিশ্ব
  • বিজ্ঞান ও আধুনিকতা
  • অন্যান্য
    • নারী, শিশু, পরিবার
    • সুন্নত ও বিদআত
    • জিহাদ
    • রাজনীতি
    • আইন ও সংবিধান
    • শিক্ষা
    • প্রাচ্যবাদ
    • ইতিহাস
    • বিয়ে ও দাম্পত্য
    • ব্যক্তিত্ব ও সাক্ষাৎকার
    • শিল্প-সাহিত্য
    • গ্রন্থ-আলোচনা
    • আরবি ব্যাকরণ
    • উর্দু ব্যাকরণ
    • বিবিধ
    • পিডিএফ
    • নির্বাচিত লেখক-পরিচিতি
    • গুরুত্বপূর্ণ লিংক ও সাইটসমূহ

© 2020 রিওয়ায়াহ - Developed by Tijarah IT Limited.