জাতীয় ফিকহি বোর্ড: প্রয়োজনীয়তা, পদ্ধতি ও প্রস্তাবনা

ফিকহি মাসায়েলের ক্ষেত্রে মুজতাহিদ ও মুফতীগণের সিদ্ধান্ত কেন ভিন্ন ভিন্ন হয়, ইজতেহাদ কী, এর জন্য কীরকম যোগ্যতার প্রয়োজন হয়, এবং ইজতেহাদের প্রক্রিয়া কী হবে—এগুলো একটু জটিল ও একাডেমিক আলোচনা। সে সব বিষয়ে না গিয়ে সেখান থেকে সাধারণ কয়েকটি বিষয় বের করে আনা যায়। ইসলামি ফিকহে মৌলিক ও বেশিরভাগ বিধানই মতৈক্যপূর্ণ, স্থিরকৃত ও চিরন্তন। এসবের ক্ষেত্রে বিশেষায়িত অর্থে ইজতেহাদের কোন প্রয়োজন পড়ে না। প্রয়োজন হলো শুধু সঠিক উৎস থেকে মাসআলাটি জেনে নেওয়া।

এর বাইরে প্রাথমিকভাবে তিনটি জায়গা আছে—এক. কুরআন ও হাদীসের বক্তব্যের আলোকে শুরুর সময় থেকেই মাসআলাটি মতানৈক্যপূর্ণ। একে বলা হয় মুখতালাফফীহ মাসআলা। দুই. নতুন দেখা দেওয়া সমস্যা বা বিষয়। একে বলা হয় নাওয়াজেল। তিন. পূর্বসিদ্ধান্তকৃত কোন মাসআলাকেই নতুন ও উদ্ভূত পরিস্থিতিতে প্রয়োগের ধরণ ও লিমিট। এই তিনটি জায়গা হলো মুজতাহাদ ফীহ বা গবেষণা-সাপেক্ষ বিষয়।
.
এই জায়গাগুলোতে মুফতিগণের সিদ্ধান্ত ভিন্ন ভিন্ন হয়ে পরস্পর মতপার্থক্য দেখা দিবে। আমরা যদি জায়গা তিনটির চরিত্রের দিকে লক্ষ্য করি, তাহলে দেখতে পাব এখানে মতপার্থক্য দেখা দেওয়া খুবই স্বাভাবিক ও ন্যাচারাল। কারণ, মানুষের চিন্তা, দৃষ্টিভঙ্গি, শরয়ী টেক্সটের আলোকে গড়ে উঠা রুচি, অভিজ্ঞতা, জ্ঞান, তথ্য ইত্যাদি আলাদা। প্রত্যেকে তার স্মৃতি, অভিজ্ঞতা, তথ্য ও সমঝ অনুযায়ী কথা বলেন। মানুষ হিসেবে এটা আমাদের একটা সীমাবদ্ধতা। আমরা সম্মিলিতভাবে একটি সামগ্রিক ও একক জ্ঞানকাণ্ডের কাছে পৌঁছুতে পারি না। অন্য দিক থেকে দেখলে একে মানুষের বৈচিত্রও বলা যায়। এবং এটি শুধু শরীয়াহ এর মাসআলার ক্ষেত্রে নয়, মানবজীবনের সকল ক্ষেত্রেই এই মতপার্থক্যের বিষয়টি দৃশ্যমান। এই অক্ষমতা ও বিভিন্নতার অবস্থাটি যেহেতু মানুষের জন্য ন্যাচারাল ও স্বভাবজাত, তাই আল্লাহ তাআলাও এই জায়গাটিতে যোগ্যতার শর্তে মতভিন্নতার অনুমোদন দিয়ে রেখেছেন।
.
এই অক্ষমতাকে কমিয়ে এনে তূলনামূলক বেশি সঠিক একটি সিদ্ধান্তে উপনীত হতে হলে আমাদেরকে জ্ঞান, তথ্য ও অভিজ্ঞতা বিনিময় করতে হয়। অনেকগুলো একক শক্তি ও বিবেচনা যখন একসাথে বসে পারস্পরিক সংলাপের মাধ্যমে নিজেদেরকে সমৃদ্ধ করে, তখন নানা দিক উন্মোচিত হয়, এবং সেখান থেকে একটি বৃহৎ জ্ঞান গড়ে উঠে। আর, জ্ঞান যত বৃহৎ হবে, সিদ্ধান্তটিও তত সঠিক, মজবুত ও বেশি গ্রহণযোগ্য হবে। এ জন্য সংলাপ বা মশওয়ারা ইসলামের অন্যতম একটি নির্দেশনা। এক হাদীসে আছে আলী রা. একবার নবীজিকে জিজ্ঞেস করলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ, আমাদের মাঝে যদি এমন কোন বিষয় দেখা দেয়, যাতে শরীয়তের পক্ষ থেকে কোন আদেশ বা নিষেধ পাওয়া যায় না, তখন আমরা কী করব? তিনি বললেন, ফকীহ ও আবেদদের সাথে পরামর্শ করবে। একক কারো সিদ্ধান্ত প্রয়োগ করবে না।
.
আল্লাহ তাআলা স্বয়ং নবীজিকে সাহাবায়ে কেরামের সাথে এ কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন। অন্যান্য বিষয়ের পাশাপাশি ফিকহি বিষয়েও এ ধারা নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সময় থেকে চলে আসছে। বদরের যুদ্ধবন্দিদেরকে কী করা হবে, এ নিয়ে মশওয়ারা হয়েছে এবং আবু বকর রা. এর পরামর্শ মোতাবেক মুক্তিপণ নিয়ে তাদেরকে ছেড়ে দেওয়া হয়। আবু বকর রা. এর উপর আমল করেছেন। তিনি কুরআন ও হাদীসে সমাধান তালাশ করতেন। না পেলে বড় বড় সাহাবাকে ডেকে পরামর্শ করতেন, এরপর সকলের রায়ের ভিত্তিতে একটি সিদ্ধান্ত নিয়ে কার্যকর করতেন। (সুনানুল কুবরা, বাইহাকি, কিতাবু আদাবিল কাজী।)

এবং উমর রা. এর সময়টি এ কাজের জন্য খুবই বিখ্যাত। তিনি অসংখ্যবার উপস্থিত বড় বড় সাহাবাকে নিয়ে বোর্ড বসিয়েছেন। মদপানের শাস্তি কী হবে, ইরাকের ভূমির উপর কর আরোপ করা নিয়ে, জানাযার তাকবীর বিষয়ে, ইকসালের বিষয়সহ নানা বিষয়ে তিনি বোর্ড বসিয়েছেন। কোন বিষয়ে বিশেষজ্ঞ কারো মতামত নেওয়া দরকার পড়লে তার কাছে লোক পাঠাতেন। যেমন, ইকসালের মাসআলায় উম্মুল মুমিনীনদের কাছে লোক পাঠিয়েছেন এবং শেষে আয়েশা রা. এর বক্তব্যের উপর সিদ্ধান্ত দিয়েছেন।
.
পরবর্তী সবকালেই বিভিন্ন জায়গায় সম্মিলিত মশওয়ারার এই ধারাটি চালু ছিল এবং বর্তমানেও আছে। ইমাম আবু হানিফা রহ. এর ফিকহ চর্চার পদ্ধতিই ছিল এটি। ইমাম মুওয়াফ্ফাক আল মাক্কি রহ. বলেন : আবু হানিফা রহ. তার মাজহাবটি গড়ে তুলেছিলেন মশওয়ারাভিত্তিক। এখানে তিনি অন্যদেরকে বাদ দিয়ে নিজের একক সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিতেন না, দীনি বিষয়ে ইজতেহাদের স্বার্থে, আল্লাহ, রাসূল ও মুসলমানদের কল্যাণকামিতার উদ্দেশ্যে। তিনি একটির পর একটি বিষয় উপস্থাপন করতেন, এরপর সকলের কাছে মতামত চাইতেন, এরপর নিজে একটি মত দিতেন। কোন কোন মাসআলা নিয়ে এক মাস বা তার চেয়েও বেশি সময় ধরে বিতর্ক করতেন। (মানাকিবু আবি হানিফা)।
.
সমকালেও ভারত পাকিস্তান আরববিশ্ব ও ইউরোপে এমন অনেকগুলো ফিকহি বোর্ড আছে, যেগুলোতে এই ধরণের গবেষণা-সাপেক্ষ বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা-সংলাপ-সেমিনার হয় ও বোর্ডের পক্ষ থেকে একটি সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হয়। উদাহরণত বলা যায়, যেমন, মাজমাউল ফিকহিল ইসলামি, মুসলিম ফ্যামিলি ল’(ভারত), মাজলিসুল ফিকরিল ইসলামি (পাকিস্তান) হাইআতু কিবারিল উলামা (সৌদি আরব)। বৈশ্বিকভাবে আছে মাজমাউল ফিকহিল ইসলামি আদ দুওয়ালি, রাবেতার অধীনে মাজমাউল ফিকহিল ইসলামি, হাইআতুল মুহাসাবার অধীনে আল মাজলিসুশ শারয়ী ইত্যাদি।

তারা বিভিন্ন বিষয়ে সংলাপ করে বিভিন্ন বই-ম্যাগাজিন-সিদ্ধান্তনামা ইত্যাদি গবেষণাপত্র প্রকাশ করে আসছেন ধারাবাহিকভাবে। সেগুলোতে খেয়াল করলে দেখা যায় কোন বিষয়ে কেউ সংখ্যাগরিষ্ঠের বাইরে ভিন্ন কোন মত দিলে সেটিও ফুটনোট দিয়ে উল্লেখ করা হচ্ছে। এই দিক থেকে দেখলে আমাদের বাংলাদেশের অবস্থা এখন পর্যন্ত অনেকটা হতাশাজনক। এখানে সম্মিলিত কোন ফতোয়াবোর্ড গড়ে উঠেনি। অথচ, আমাদের দেশে এ কাজের জন্য অনেক যোগ্য মানুষ বিদ্যমান আছেন, আলহামদুলিল্লাহ। তবু হচ্ছে না, এর কারণ বোধ করি উদ্যোগের অভাব, যোগাযোগ ও সমন্বয়হীনতা। এবং এসবের গোড়ায় হয়তো বসে আছে আমাদের নানা রকমের কাঠামোগত দুর্বলতা। কিন্তু এইসব সমস্যা পেরিয়ে একটি বোর্ড গড়ে উঠা খুব কঠিন কিছু মনে হয় না।
.
ইসলামের দর্শন ও ঐতিহাসিক পাঠ থেকে একটি ফিকহি বোর্ডের প্রয়োজনীয়তার বিষয়টি তো আছেই, এর বাইরে সামাজিক ও রাজনৈতিক নানা কারণেও এই বোর্ড একান্ত আবশ্যক হয়ে দেখা দিয়েছে অনেককাল আগে থেকেই।

সামাজিকভাবে বড় একটা কারণ হলো এ দেশের মানুষ মোটের উপর ধর্মপ্রাণ ও ধর্মীয় আবেগ দ্বারা পরিচালিত। কিন্তু তারা এখতেলাফের ফালসাফা ও আদাব বা মতপার্থক্যের দর্শন ও শিষ্টাচার বুঝে না। উলামায়ে কেরাম যখন যৌক্তিক অবস্থান থেকেই একই বিষয়ে নানা রকমের সিদ্ধান্ত দিবেন, তখন গণপরিসরে একটা অস্থিরতা দেখা দিবে, এবং একটা সময় গিয়ে ফিকহ ও মুফতিগণের ব্যাপারে অসন্তোষ তৈরী হবে। এ কারণেই আশরাফ আলী থানভি রহ. বলেছেন : যেখানে অনেক আলেম আছেন, সেখানে একজন আলেমও অন্য আলেমদের সাথে পরামর্শ না করে এ বিষয়ে (চাঁদ দেখার বিষয়ে) নিজের সিদ্ধান্ত জনসাধারণকে জানাবেন না। কারণ, হতে পারে এ বিষয়ে অন্য কারো ভিন্নমত আছে। ফলে, নানা রকমের বক্তব্যের কারণে সাধারণের মাঝে অস্থিরতা তৈরী হবে। এ জন্য সবাইকে পরামর্শ করতে হবে। যদি পরস্পর মতভিন্নতা দেখা দেয়, তাহলে নিজেরা আলাপ-আলোচনা করে একটি সিদ্ধান্ত বের করে নিয়ে সেটিই সকলের মাঝে প্রচার করতে হবে। যদি একমত না হওয়া যায়, তাহলে সর্বাধিক গ্রহণযোগ্য যিনি, তার কাছেই বিষয়টি অর্পন করে দিয়ে বাকি সকলে চুপ থাকবেন। … সাধারণ মানুষ যেন ভেতরের মতপার্থক্য জানতে না পারে। (ইসলাহে ইনকেলাবে উম্মত : পৃষ্ঠা ১২৩)

রাজনৈতিক দিক থেকে এর প্রয়োজনীয়তা হলো—বর্তমান রাষ্ট্রব্যবস্থা সেক্যুলার বা সেক্যুলারিজম ও লিবারালিজম প্রভাবিত। ফলে, ধর্মীয় বিভিন্ন বিষয়ের সাথে রাষ্ট্রপক্ষের দ্বন্দ্ব লেগেই থাকে। একে রাজনৈতিক ও সামাজিকভাবে মোকাবেলা করার বিষয়টি তো আছেই। কিন্তু, এর পাশাপশি যখন মুফতীগণের সম্মিলনে একটা বোর্ড গড়ে উঠবে, তখন এটা একটা বড় শক্তি। এই বোর্ড আনুষ্ঠানিকভাবে প্রসাশনিক বা রাজনৈতিক কোন অথরিটি হবে না ঠিক, কিন্তু অঘোষিতভাবে মুসলিম সমাজের জন্য একটি শক্তিশালি অথরিটি ও অলঙ্ঘনিয় রেফারেন্স হয়ে দেখা দিবে। ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতার সাথে একে গড়ে তুলতে পারলে সরকারও এর সিদ্ধান্তগুলোকে এড়িয়ে চলতে পারবে না। পাশাপাশি এই বোর্ড কারো মতামত প্রদানে বাধা দিবে না ঠিক, কিন্তু বোর্ডের সিদ্ধান্ত শক্তিশালি ও প্রামাণিক হওয়ার কারণে অন্যান্য অসঙ্গত ও ভ্রান্তিমূলক ফতোয়াগুলো এর সামনে এমনিতেই বিকল হয়ে সমাজের অস্থিরতার বিষয়টি কমে আসবে।
.
এই বোর্ড গঠনের ক্ষেত্রে বড় একটা প্রশ্ন দেখা দিবে—এর সদস্য কারা হবেন? সদস্যতা ও পদায়ন নিয়ে অনৈক্য দেখা দিতে পারে। কিন্তু আমার মনে হয় না এটা জটিল কোন ব্যাপার। এর গঠনতন্ত্র ও নিয়ামবলী যখন সম্পূর্ণ নির্মোহভাবে ও ইলমি বিবেচনা থেকে তৈরী হবে, তখন অযোগ্য মানুষেরা এমনিতেই আসতে চাইবে না। কারণ, সাধারণ পরামর্শ ও বক্তব্য প্রদান সহজ হলেও ইলমি স্ট্যান্ডার্ড বজায় রেখে কাজ চালিয়ে যাওয়া শক্ত। তবে, এর জন্য জরুরী হবে একে সারাদেশে ব্যাপকায়ন করা, এবং জ্ঞানগত যোগ্যতা প্রদর্শন ও মতামত প্রদানের বিষয়টিকে অবারিত ও স্বতঃস্ফুর্ত রাখা। পাশাপাশি এই বোর্ডের নিজস্ব রোডম্যাপ, কর্মপদ্ধতি ও কর্মযজ্ঞ থাকতে হবে। সাথে খেয়াল রাখতে হবে কোনভাবেই যেন এটি সরকারী নিয়ন্ত্রণ, বা কোনরূপ দূরবর্তী সংশ্লিষ্টতায় না যায়। এখন মাঝে মাঝে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের আহ্বানে মুফতীয়ানে কেরাম কিছু কিছু বিষয় নিয়ে ক্ষুদ্র পরিসরে বসছেন। এটি যথেষ্ট নয়। উলামায়ে কেরামকে স্বতন্ত্রভাবে ব্যাপক পরিসরে উদ্যোগ নিতে হবে। ফাতেহ টুয়েন্টিফোর ডটকমে একটা সংবাদ দেখলাম এরকম একটি বোর্ড নিয়ে আলোচনা হচ্ছিল। কিন্তু এরপর বিষয়টি সম্ভবত থেমে গেছে। এরকম একটি বোর্ড দ্রুতই গড়ে উঠুক। আমি আশাবাদি আমাদের যোগ্য প্রবীনদের পাশাপাশি অনেক তরুণ গবেষকগণও এখানে ভালো অবদান রাখতে পারবেন।

শেয়ার করুন

image_print
Picture of সাবের চৌধুরী
সাবের চৌধুরী
সাবের চৌধুরীর জন্ম হবিগঞ্জ সদরে। হিফজ সম্পন্ন করেছেন হরষপুর মাদ্রাসায়। বিবাড়িয়ার দারুল আরকাম, ঢাকার জামিয়াতুল উলুমিল ইসলামিয়া ও দারুল ফিকরে কেটেছে তার শিক্ষাজীবন। পেশায় তিনি একজন শিক্ষক। লেখালেখি ও সম্পাদনাও করছেন নিয়মিত। মৌলিক ও অনুবাদ মিলিয়ে তার প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা ছয়টি। এর মধ্যে জীবনে রোদ্দুরে, অটুট পাথর, কোথাও নিঝুম হয়েছে কেউ~ বেশ পাঠক প্রিয় বই।
লেখকের অন্যান্য লেখা

সূচিপত্র

সর্বাধিক পঠিত
উত্তম আখলাক: অনন্য ছয়টি মর্যাদা
হাদিস শাস্ত্রের প্রাচ্যবাদী বয়ান এবং মুসলিম সমাজে এর প্রভাব
নকল মূদ্রা: শব্দের খোলসে মতাদর্শ ~ আব্দুল্লাহ আন্দালুসি
ইয়াহইয়া সিনওয়ার: শেষ রক্তবিন্দু পর্যন্ত লড়ে গেছেন যিনি
পরামর্শ বা মাশওয়ারা: ইসলামের অনুপম এক নির্দেশনা
দ্যা ফোরটি রুলস অফ লাভ: সুফিবাদের ইউটোপিয়া