ইমাম শাতেবী: যাকে ভুলভাবে উপস্থাপন করা  হয়েছে ~ শায়েখ ফাহাদ আজলান

ইমাম আবু ইসহাক ইবরাহীম ইবনে মুসা আশ শাতেবীকে (মৃত্যু ৭৯০ হি.) যতটা ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে, সম্ভবত পূর্ববর্তী অন্য কোন ইমামের ক্ষেত্রে এমনটি ঘটেনি। বাতিলপন্থী অনেকের রীতি হল, শরীয়তের বিধানাবলী ও কোরআন-হাদিসে তারা যে বিকৃত ব্যাখ্যা করে, একে গ্রহণযোগ্য করার জন্য ইমাম শাতেবীর নাম ব্যবহার করে থাকে।

শাখাগত বিষয়ে (جزئيات) কোরআন-হাদিসের স্পষ্ট বক্তব্যগুলোকে হালকা ও ক্ষুদ্র করে দেখানোর জন্য ইমাম শাতেবীর সুপ্রসিদ্ধ কিতাব ‘আল মুওয়াফাকাত’কে তারা হাতিয়ার হিসেবে গ্রহণ করেছে। এক্ষেত্রে কখনো কল্যাণ (مصلحة) ও উপযোগিতার দাবী করা হয়, কখনো বা যুক্তি ও বুদ্ধির (عقل) কথা বলা হয়।  কখনো মূলনীতি (أصول) ও মৌলিক বিষয় (كليات) মানার দাবি করা হয়।

ইমাম শাতেবী সম্পর্কে বলা হচ্ছে, তিনি তার ‘মাকাসিদ দর্শনের’ মাধ্যমে মূল ধারার ইমাম ফকীহ ও আলেমদের থেকে পৃথক একটি পথ অবলম্বন করেছেন। ইমাম শাফেঈ থেকে শুরু করে করে উসূলে ফিকহের পরবর্তী ইমামগণ শরীয়তের মূলনীতিমালা (أصول) ও বিধানাবলী কোরআন ও হাদিসের (বাহ্যিক) শব্দ থেকে গ্রহণ করেছেন। অপরদিকে ইমাম শাতেবী শরীয়তের মূলনীতিগুলোকে শরীয়ত প্রণেতার মাকাসিদ বা মূল উদ্দেশ্যের আলোকে নির্মাণ করার প্রয়োজনীয়তার দাবি করেছেন। (540 بنية العقل العربي محمد عابد الجابري)

  কিন্তু আপনি যখন মূল শাতেবীকে পাঠ করবেন, তখন দেখতে পাবেন বিষয়টি সম্পূর্ণ উল্টো। তার সম্পর্কে যে মূল্যায়ন পেশ করা হয়েছে এর সাথে তাঁর দূরতম সম্পর্কও নেই।  ‘আল মুওয়াফাকাতে’ এই মূল্যায়নের প্রতি এতোটুকু সমর্থন পাওয়া যায় না। মূলতঃ ইমাম শাতেবীকে এভাবে পেশ করা হয়েছে যেন শরীয়তের প্রতিষ্ঠিত বিধানগুলোকে হালকাভাবে দেখানোর পথে তার সাহায্য লাভ করা যায়।

‘আল মুওয়াফাক’ এ কেউ যদি ভাসাভাসা নজর বুলান, তাহলেই এই প্রতারণার হাকিকত বুঝতে পারবেন। মহান এই ইমাম সম্পর্কে যে জঘন্য মিথ্যাচার করা হয়েছে এটা তার কাছে স্পষ্ট হয়ে উঠবে। তিনি দেখতে পাবেন শরীয়তের প্রতি যথাযথ শ্রদ্ধা পোষণ, কোরআন-হাদিসের সুস্পষ্ট বক্তব্য (نصوص) এবং শরীয়তের শাখাগত বিধানাবলীর (جزئيات)  প্রতি যত্নবান থাকা, এবং নিছক যুক্তি ও বিবেক-বুদ্ধির উপর শরীয়তের দলিলকে অগ্রগণ্য ও প্রাধান্য দেয়া ইমাম শাতেবীর নিকট এগুলো  সুপ্রতিষ্ঠিত ও অকাট্য মূলনীতি।  আল-মুওয়াফাকাত কিতাবে তিনি যা কিছু লিখেছেন এই মূলনীতির আলোকেই লিখেছেন।

ফলে একথা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, কোরআন হাদিসের বক্তব্যের প্রতি পূর্ণ শ্রদ্ধা পোষণ, এর নির্দেশনার আনুগত্য এবং কোরঅান-হাদীস থেকে বিধানাবলী আহরণ— উভয় ক্ষেত্রেই ইমাম শাতেবী পূর্ববর্তী মূল ধারার মহান ইমামদের পথ ও পদ্ধতির একনিষ্ঠ অনুসারী।

এজন্য আমরা ইমাম শাতেবীকে দেখি তাঁর মতে, মানুষের বিবেক–বুদ্ধি ও যুক্তি অহির অগ্রবর্তী হতে পারে না। বরং বিবেক বুদ্ধির কর্মক্ষেত্র শরীয়ত কর্তৃক নির্ধারিত সীমারেখার ভেতরে।(১) অর্থাৎ বিবেক বুদ্ধি শরীয়তের অধীন ও অনুগামী।

এমনকি শরীয়তের যে সকল বিধানে কোরঅান হাদীসের দলীল শুদ্ধ হওয়ার পক্ষে  যুক্তি দ্বারা প্রমাণ পেশ করা হয়, সেক্ষেত্রে তাঁর সিদ্ধান্ত হল, কোরঅান হাদীসের দলীলটি অবশ্যই অগ্রবর্তী ও অনুসৃত হতে হবে। এবং যুক্তিনির্ভর দলীল শরয়ী দলীলের অনুগামী ও পেছনে থাকবে। (২)

শাখাগত বিষয়ে কোরঅান হাদীসের বক্তব্যগুলোর প্রতি তিনি পূর্ণ যত্নবান ও সতর্ক ছিলেন। এ সম্পর্কে আল মুওয়াফাকাতে দীর্ঘ ও পর্যাপ্ত আলোচনা করেছেন। কারণ শরীয়তের এদিকটির প্রতি সামান্য অবহেলা কতটা ভয়ানক হতে পারে– এ বিষয়ে তিনি সম্যকভাবে অবগত ছিলেন। এক্ষেত্রে তাঁর মূলনীতি হচ্ছে, ” যে বিষয়টি শরীয়তের কোন মূলনীতি বা বিধানকে রহিত করে, আঘাত করে, সত্ত্বাগতভাবেই তা হক ও সত্য হতে পারে না।” (৩)

তাঁর মাকাসিদ বিষয়ক বিশ্লেষণকে ভুলভাবে কেউ ব্যবহার করবে, এপথ তিনি গোড়াতেই বন্ধ করে দিয়েছেন। তিনি পরিষ্কার শব্দে সিদ্ধান্ত দিয়েছেন, “যে ব্যাক্তি শরীয়তের কোন মৌলিক বিষয়কে উপেক্ষা করে শুধু শাখাগত বিষয়েকে গ্রহণ করে, তার কাজটি সম্পূর্ণ ভুল। ঠিক একইভাবে যে ব্যক্তি শরীয়তের শাখাগত কোন বিধান উপেক্ষা করে শুধু মৌলিক বিষয় কে অবলম্বন করে, সেটাও মারাত্মক গলদ।” (৪)

ফলে এ কথা  বলা বাহুল্য যে, যারা মাকাসিদ আঁকড়ে ধরার নামে শরিয়তের প্রতিষ্ঠিত ও প্রমাণিত শাখাগত বিধানাবলী বর্জন করে থাকেন, তাদের এই কর্মপদ্ধতির সাথে ইমাম শাতেবীর দূরতম সংযোগ নেই।

ইমাম শাতেবী এ সিদ্ধান্ত দিয়েই দিয়েই ক্ষ্যান্ত হননি, বরং তিনি শাখাগত দলিলকে (الدليل الجزئي) সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছেন। এ বিষয়ে তিনি এতটাই সতর্ক ছিলেন যে, শরীয়তের কোন দলিল প্রমাণিত হওয়াই এটা স্বতন্ত্র একটি “মূলনীতি” হওয়ার জন্য যথেষ্ট বলে জানিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, শরীয়তের প্রত্যেকটি দলীলকেই মূলনীতি হিসেবে গ্রহণ করা সম্ভব। চাই দলিলটি শাখাগত হোক কিংবা মৌলিক। তবে অন্যান্য দলীলের আলোকে যদি তাকে বিশেষায়িত করা হয় তাহলে সেটা হবে ব্যতিক্রম। (৫)

ইমাম শাতেবীর মতে, প্রবৃত্তির অনুসরণ এমন একটি ভয়ঙ্কর ও বিপদসংকুল পিচ্চিল স্থান যা শরীয়তকে তার মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য থেকে বিচ্যুত করে দেয়। শাতেবী বলেন, “শরীয়ত প্রণয়ন করা দ্বারা আল্লাহ পাকের উদ্দেশ্য হচ্ছে, মানুষকে প্রবৃত্তির তাড়না থেকে বের করে মুক্ত করা, যেন সে স্বেচ্ছায় আল্লাহর গোলাম হয়ে যায়, বাধ্য হয়ে যেমন শুরু থেকেই আল্লাহ পাকের গোলাম গোলাম ও আজ্ঞাধীন রয়েছে।” (৬)

এই মূলনীতির আলোকে শাতেবী মজবুতভাবে প্রমান করেছেন যে, ফিকহের ক্ষেত্রে খুঁজে খুঁজে ফুকাহায়ে কেরামের  রুখসতগুলোর অনুসরণ করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। কেননা “রুখসত খুঁজে বেড়ানোর মানে হচ্ছে, সে ব্যক্তি প্রবৃত্তির খেয়াল খুশির অনুসরণ করছে। অথচ শরীয়তের আগমনই ঘটেছে প্রবৃত্তির অনুসরণ থেকে মানুষকে বিরত রাখার জন্য। তাহলে এই প্রবণতা টি সর্বসম্মত মূলনীতির সাথে সাংঘর্ষিক হচ্ছে সর্বসম্মত মূলনীতির সাথে সাংঘর্ষিক হচ্ছে সাথে সাংঘর্ষিক হচ্ছে।( ফলে তা বর্জনীয় হবে) (৭)

পাশাপাশি তিনি এটাও স্পষ্ট করেছেন— কোন মাসআলায় দুই মতামত থাকলে, এর মধ্যে কোনটি অগ্রগণ্য মত, সেটি নির্ধারণ করে দেয়া মুফতির উপর ওয়াজিব। এক্ষেত্রে তিনি প্রশ্নকারীর নিকট একই সাথে দুই মতামত বর্ণনা করবেন না। কেননা এর ফলে শরয়ী বিধানে প্রবৃত্তির অনুসরণের পথ খুলে যাবে। শাতেবী বলেন, কোন মুফতি যখন একই সময়ে দুই মতামত অনুযায়ী ফতোয়া দিবেন, এর অর্থ দাঁড়াবে— তিনি এই মাসআলায় পরিপূর্ণ বৈধতার ফতোয়া দিচ্ছেন, যা প্রথম দুই মতামতের বাইরে তৃতীয় আরেকটি মত। (৮)

কেননা এভাবে ফতোয়া দিলে শরীয়ত যে উদ্দেশ্যে প্রণয়ন করা হয়েছে তা ব্যহত হবে। এজন্য শাতেবী বলেছেন, আমরা যদি ইমামদের মতামত ও মাযহাবের ক্ষেত্রে মুকাল্লিদেরকে (সাধারণ মানুষ) ইখতিয়ার দিয়ে দিই যে, এসব মতামত থেকে তাদের পছন্দনীয় মতটি নিজেরা বাছাই করে নিবে। তাহলে এই বাছাই প্রক্রিয়ায় প্রবৃত্তির অনুসরণ করা ব্যতীত তাদের কাছে আর কোন ভিত্তি বা মানদন্ড থাকবে না। অথচ প্রবৃত্তির অনুসরণ করা শরীয়ত প্রণয়নের মূল উদ্দেশ্য পরিপন্থী কাজ। ফলে কোনো মাসআলায় দুই বা ততোধিক মতামত থেকে কোন একটি গ্রহণ করার এখতিয়ার দেয়া কিছুতেই বৈধ নয়। (৯)

ইমাম শাতেবীর নিকট সালাফে সালেহীন তথা সাহাবী তাবেয়ী ও পূর্ববর্তী ইমামগণের পথ ও পদ্ধতির সর্বোচ্চ গুরুত্ব রয়েছে। এই পথ ও পদ্ধতি অনুসরণ করা কতটা গুরুত্বপূর্ণ ও জরুরি “আল মুওয়াফাকাত” পাঠকের কাছে বিষয়টি তিনি যত্নের সাথে বর্ণনা করেছেন। একজন দরদী বিশ্বস্ত ও কল্যাণকামী আলেমের ভাষায় তিনি পাঠককে সম্বোধন করে বলেছেন, পূর্ববর্তীদের বিরোধিতা করা থেকে সবসময় দূরে থাকবে। সতর্ক থাকবে। কারণ তাদের মত-পথের বাইরে যদি কোন প্রকার কল্যাণ থাকতো তাহলে সবার পূর্বে তারাই সেটা অর্জন করতেন। (১০)

ইমাম শাতেবীর মতে, সালাফের পথ ও পদ্ধতির অনুসরণ করা এমন একটি মূলনীতি ও মানদন্ড, যার সাহায্যে একজন মুসলিম নিজের পথ ও পদ্ধতির শুদ্ধতা যাচাই করতে সক্ষম হয়। সালাফের পথ পদ্ধতির বাইরে যারা কোরঅানের আয়াত ও হাদীসকে ব্যাখ্যা করে তিনি তাদের কঠোর সমালোচনা করে সংশয় ও সন্দেহের বিস্তৃত জবাব দিয়েছেন। (১১)

মহান আল্লাহ তায়ালার বন্দেগী ও দাসত্ব করা এবং তাঁর আনুগত্যের হক যথাযথভাবে আদায় করা— ইমাম সাহেবের কাছে অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এদিক বিবেচনা করে জ্ঞান ও শাস্ত্রের যে সকল বিষয়বস্তু ও অধ্যায় ইবাদাত বা শরয়ী কোন কাজে ব্যবহৃত হয় না, তিনি সেগুলো বাদ দেয়ার দাবি জানিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, যে সকল বিষয় “উসূলে ফিকহে” আলোচিত হয়, অথচ এগুলোর উপর ফিকহী কোন বিধান বা শরয়ী কোন আমল নির্ভরশীল নয় অথবা এক্ষেত্রে এগুলো কোন ধরনের সাহায্যও করে না— এ শ্রেণির বিষয় “উসূলে ফিকহ” শাস্ত্রে রাখা অনর্থক কাজ। (১২)

একথা তিনি এজন্য বলেছেন যেন “শরীয়া শিক্ষার্থীদের” মূল মনোযোগ ও আগ্রহ ইবাদত ও আমলের প্রতি ঝুঁকে। তাঁর ভাষায়, শরীয়ত প্রণেতা শরয়ী জ্ঞান অর্জনের আদেশ দিয়েছেন কেবল এজন্যই যে, এর সাহায্যে আল্লাহ পাকের বন্দেগি ও দাসত্ব করা যাবে।

মানুষ পবিত্র কোরআনকে যেন এর বাহ্যিক শব্দমালার আলোকেই অনুধাবন করে এবং এক্ষেত্রে বাতিল ও প্রত্যাখ্যাত ব্যাখ্যা থেকে দূরে থাকে— ইমাম শাতেবী এব্যপারে বরাবর সতর্ক ছিলেন। এমনকি তিনি মুতাকাল্লিমীনের (ধর্মতত্ত্ববিদ) মধ্যে যারা তাবিলের (ব্যখ্যা) পদ্ধতি অবলম্বন করেছেন, তাদের কঠোর নিন্দা করেছেন। (১৩)

কোরআন-হাদিসের শব্দের বাহ্যিক অর্থ বর্জন করে ভিন্ন অর্থ গ্রহণ করার পদ্ধতি শেষ পর্যন্ত পুরো শরীয়তকেই অকার্যকর করে দিতে পারে। ইমাম শাতেবী এর কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেছেন, যারা এ দাবি করছেন যে বাহ্যিক শব্দাবলী এবং এগুলো থেকে যা বোঝা যায় এসব আল্লাহ পাকের মূল উদ্দেশ্য নয়। বরং এই শব্দসমূহ দ্বারা তাঁর মূল উদ্দেশ্য এসবের বাইরে ভিন্ন কিছু। তাদের এই দাবি তো শরীয়তের প্রতিটি অংশেই প্রযোজ্য হতে পারে। এবং এ প্রক্রিয়ায় কোরঅান হাদীসের বাহ্যিক শব্দ থেকে আল্লাহ পাকের মূল উদ্দেশ্য জানার কোনো সুযোগই থাকবে না। আর যারা শরীয়তকে অকার্যকর করে ফেলতে চায়, এটাই তাদের প্রত্যেকের মূল উদ্দেশ্য। (১৪)

শরীয়ত বিষয়ে কথা বলা অনেক কঠিন কাজ। ইমাম শাতেবীর মধ্যে এই উপলব্ধি সর্বদা জাগ্রত ছিল। শরীয়ত বিষয়ে কোন কথা বলার ব্যাপারে তিনি সতর্ক করেছেন। কেননা এ বিষয়ে যিনি কথা বলবেন তিনি মহান আল্লাহ পাকের কথার “উদ্দেশ্য ও সঠিক অর্থ” নির্ধারণ করে দিচ্ছেন। সেজন্য শাতেবী তাদেরকে সেদিনের কথা বিশেষভাবে স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন—যেদিন তাদেরকে জগতসমূহের প্রতিপালক মহান আল্লাহর দরবারে দাঁড়াতে হবে। তিনি বলেছেন, গবেষক মুফাসসির ও ধর্মতত্ত্ববিদকে একথা গুরুত্বের সাথে স্মরণ রাখতে হবে যে, তিনি যা বলছেন এর দ্বারা কথকের উদ্দেশ্য নির্ধারণ করে দিচ্ছেন। কোরআনে কারীম মহান আল্লাহ পাকের বাণী। ফলে শরীয়া নিয়ে যিনি আলোচনা করছেন যেন তিনি একথা বলে দিচ্ছেন, “আল্লাহ পাকের এই কথা দ্বারা এটা উদ্দেশ্য!” কেয়ামতের দিন আল্লাহ পাক যদি তাকে জিজ্ঞেস করেন, তুমি আমার সম্পর্কে এ কথা কোত্থেকে বলেছ?! এজন্য এজায়গায় অত্যন্ত সর্তকতা অবলম্বন করা আবশ্যক।

দুনিয়াবী কল্যাণ (مصلحة) এবং দীনি কল্যাণ (مصلحة) — এ দুটির মধ্যে কোনটিকে প্রাধান্য দেয়া হবে? এ বিষয়ে ইমাম শাতেবী রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর অবস্থান অত্যন্ত পরিষ্কার। তিনি বলেছেন, দীনি কল্যাণ সর্বাবস্থায় দুনিয়াবী কল্যাণের উপর অগ্রগণ্য হবে। (১৫)

এখানে আমরা সংক্ষিপ্তাকারে কয়েকটি দিক আলোচনা করলাম। আশা করি, এ থেকে ইমাম শাতেবীর অনুসৃত পদ্ধতি এবং তাঁর কালজয়ী গ্রন্থ “আল মুয়াফাকাত” এর আসল রূপটি পাঠকের কাছে স্পষ্ট ভাবে প্রকাশিত হবে।

টীকা:
১/ আল মুয়াফাকাত ১/৩৬
২/ প্রাগুক্ত ১/৭৮
৩/ প্রাগুক্ত ২/৫৫৬
৪/ প্রাগুক্ত ৩/৮
৫/ প্রাগুক্ত ৩/৪৫
৬/ প্রাগুক্ত ২/৪৬৯
৭/ প্রাগুক্ত ৪/৫১১
৮/ প্রাগুক্ত ৪/৫০৯
৯/ প্রাগুক্ত ৪/৪৯৯
১০/ প্রাগুক্ত ৩/৬৩
১১/ প্রাগুক্ত ৩/৬৬
১২/ প্রাগুক্ত ১/৪০
১৩/ প্রাগুক্ত ৩/৩৫৭
১৪/ প্রাগুক্ত ২/৬৬৭
১৫/ প্রাগুক্ত 

শেয়ার করুন

image_print
Picture of আনাস চৌধুরী
আনাস চৌধুরী
আনাস চৌধুরীর জন্ম নব্বইয়ের শেষ দিকে, হবিগঞ্জ সদরে। পড়াশোনা করেছেন ঢাকার জামিয়াতুল উলুমিল ইসলামিয়াতে। পরবর্তিতে দারুল উলুম দেওবন্দেও অধ্যয়ন করেছেন এক বছর। পেশায় তিনি একজন শিক্ষক, হবিগঞ্জের দারুল ইরশাদ বহুলা মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করছেন। লেখালেখি, অনুবাদ ও দ্বীনি আলোচনাতেও তার অংশগ্রহণ রয়েছে। বাংলা ও আরবীতে অনুবাদ করেছেন বেশ কিছু বই। ইতিমধ্যে কয়েকটি প্রকাশিত হয়েছে।
লেখকের অন্যান্য লেখা

সূচিপত্র

সর্বাধিক পঠিত
উত্তম আখলাক: অনন্য ছয়টি মর্যাদা
হাদিস শাস্ত্রের প্রাচ্যবাদী বয়ান এবং মুসলিম সমাজে এর প্রভাব
নকল মূদ্রা: শব্দের খোলসে মতাদর্শ ~ আব্দুল্লাহ আন্দালুসি
পরামর্শ বা মাশওয়ারা: ইসলামের অনুপম এক নির্দেশনা
ইয়াহইয়া সিনওয়ার: শেষ রক্তবিন্দু পর্যন্ত লড়ে গেছেন যিনি
দ্যা ফোরটি রুলস অফ লাভ: সুফিবাদের ইউটোপিয়া